হাদীস নং ১৮১১
আবদুল্লাহ ইবনে মুনীর রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, সে তা জ্বলে গেছে। তিনি বললেন : তোমার কি হয়েছে ? লোকটি বলল, রমযানে আমি স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। এ সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে (খেজুর ভর্তি) ঝুড়ি এল, যাকে আরাক (১৫ সা’ পরিমাণ) বলা হয়। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : অগ্নিদগ্ধ লোকটি কোথায় ? লোকটি বলল, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : এগুলো সাদকা করে দাও।
হাদীস নং ১৮১২
আবুল ইয়ামান রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসাছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তোমার কি হয়েছে ? সে বলল, আমি সায়িম অবস্থায় আমার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আযাদ করার মত কোন ক্রীতদাস তুমি পাবে কি ? সে বলল, না। তিনি বললেন : তুমি কি একধারে দুমাস সাওম পালন করতে পারবে ? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেন : ষাটজন মিসকিন খাওয়াতে পারবে কি ? সে বলল, না। রাবী বলেন, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেমে থেমে গেলেন, আমরাও এ অবস্থায় ছিলাম। এ সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এক আরাক পেশ করা হল যাতে খেজুর ছিল। আরাক হল ঝুড়ি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : প্রশ্নকারী কোথায় ? সে বলল, আমি। তিনি বললেন : এগুলে নিয়ে সাদকা করে দাও। তখন লোকটি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার চাইতেও বেশী অভাবগ্রস্তকে সাদকা করব ? আল্লাহর শপথ, মদীনার উভয় লোকটি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার চাইতেও বেশী অভাবগ্রস্ত সাদকা করব ? আল্লাহর শপথ, মদীনার উভয় লাবা অর্থাৎ উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার পরিবারের চাইতে অভাবগ্রস্ত কেউ নেই। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে উঠলেন এবং তাঁর দাঁত দেখা গেল। এরপর তিনি বললেন : এগুলো তোমার পরিবারকে খাওয়াও।
হাদীস নং ১৮১৩
উসামান ইবনে আবু শায়বা রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, এই হতভাগা স্ত্রী সহবাস করেছে রমযানে। তিনি বলেলেন : তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে পারবে ? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন : তুমি কি ক্রমাগত দু’ মাস সিয়াম পালন করতে পারবে ? লোকটি বলর, না। তুমি কি ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে ? সে বলল, না। এমতাবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক আরাক অর্থাৎ এক ঝুড়ি খেজুর এল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : এগুলো তোমার তরফ থেকে লোকদেরকে আহার করাও। লোকটি বলল, আমার চাইতেও অধিক অভাবগ্রস্ত কে ? অথচ মদীনার উভয় লাবার অর্থাৎ হাররার মধ্যবর্তী স্থলে আমার পরিবারের চাইতে অধিক অভাবগ্রস্ত কেউ নেই। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তাহলে তোমার পরিবারকেই খাওয়াও।
হাদীস নং ১৮১৪
মুআল্লা ইবনে আসাদ রহ……ইবনে আব্বস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহরিম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছেন এবং সায়িম অবস্থায়ও শিংগা লাগিয়েছেন।
হাদীস নং ১৮১৫
আবু মামার রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সায়িম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছেন।
হাদীস নং ১৮১৬
আদম ইবনে আবু ইয়াস রহ………সাবিত আল-বুনানী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস ইবনে মালিক রা.-কে প্রশ্ন করা হল, আপনার কি সায়িমের শিংগা লাগানো অপছন্দ করতেন ? তিনি বললেন, না। তবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে অপছন্দ করতাম। শাবাবা রহ. শুবা রহ. থেকে ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে’ কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১৮১৭
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……ইবনে আবু আওফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেন : সওয়ারী থেকে নেমে আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সূর্য এখনো অস্ত যায়নি। তিনি বললেন : সওয়ারী থেকে নেমে আমার জন্য জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সূর্য এখনো ডুবেনি। তিনি বললেন : সওয়ারী থেকে নামো এবং আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। যখন দেখবে সে সওয়ারী থেকে নেমে ছাতু গুলিয়ে আনলে তিনি তা পান করলেন এবং হাতের ইশারায় বললেন : যখন দেখবে রাত এদিক থেকে ঘনিয়ে আসছে তখন বুঝবে, সাওম পালনকারী ব্যক্তির ইফতারের সময় হয়েছে। জারীর রা. এবং আবু বকর ইবনে আইয়াশ রা…….ইবনে আবু আওফা রা. থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম।