- বইয়ের নামঃ সহিহ বুখারী ২য় খন্ড
- লেখকের নামঃ ইমাম বুখারী
- প্রকাশনাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
- বিভাগসমূহঃ ইসলামিক বই, হাদীস শরীফ
সহিহ বুখারী ০২য় খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
সালাতের ওয়াক্তসমূহ অধ্যায় (৪৯৭-৫৭৫)
হাদিস ৪৯৭
আব্দুল্লাহইবন মাসলামা (র.)…….ইবন শিহাব (র.) থেকে বর্ণিত,উমর ই্বন আবদুল আযীয (র.) একদিন কোন এক সালাত আদায়ে বিলম্ব করলেন। তখন উরওয়া ইব্ন যুবাইর (রা.) তাঁর কাছে গেলেন এবং তাঁর কাছে বর্ণনা করলেন যে, ইরাকে অবস্বানকালে মুগীরা ইব্ন শু’বা (রা.) একনিন এক সালাত আদায়ে বিলম্ব করেছিলেন। ফলে আবু মাসঊন আনসারী (রা.) তাঁর নিকট গিয়ে বললেন, হে মুগীরা ! একি ? তুমি কি অবগত নও যে, জিব্রাঈল (আ.) অবতরন করে সালাত আদায় করলেন, আর রাসূলুল্লাহ(সা.) ও সালাত আদায় করলেন। আবার তিনি সালাত আদায় করলেন। রাসূলুল্লাহ(সা.) ও সালাত আদায় করলেন। পুনরায় তিনি সালাত আদায় করলেন এবং রাসূলুল্লাহ(সা.) ও সালাত আদায় করলেন। আবার তিনি সালাত আদায় করলেন। রাসূলুল্লাহ(সা.) ও সালাত আদায় করলেন। পুনরায় তিনি সালাত আদায় করলেন এবং রাসূলুল্লাহ(সা.) ও সালাত আদায় করলেন। তারপর জিব্রাঈল (আ.) বললেন, এরই জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। উমর (ইব্ন আবদুল আযীয) (র.) উরওয়া (র.)- কে বললেন, “তুমি যা রিওয়ায়াত করছ তা একটু ভেবে দেখ। জিব্রাঈলই (আ.) কি রাসূলুল্লাহ(সা.) এর জন্য সালাতের ওয়াক্ত নিধারন করে দিয়েছিলেন ?” উরওয়া (র.) বলেনঃ অবশ্য আয়িশা (রা.) আমার কাছে বর্ননা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এমন মুহূর্তে আসরের সালাত আদায় করতেন যে, সূর্যরশ্মি তখনও তাঁর হুজরার মধ্যে বিরাজমান থাকত। তবে তা উপরের দিকে উঠে যাওয়ার আগেই।
হাদিস ৪৯৮
কুতাইবা ইব্ন সায়ীদ (র.)……ইব্ন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আবদুল কায়স গোএের একটি দল রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর দরবারে এসে বলল, আপনার ও আমাদের মাঝে সে ‘রাবীআ’ গোএ থাকায় শাহ্রে হারাম (নিষিদ্ধ মাসসমূহ) ছাড়া অন্য কোন সময় আমারা আপনার নিকট আসতে পারি না। কাজেই আপনি আমাদের এমন কিছু নির্দেশ দিন যা আমরা নিজেরাও গ্রহণ করব এবং যারা পিছনে রয়েগেছে তাদের প্রতিও আহবান জানাব। রাসূলুল্লাহ্(সা.) বললেনঃ আমি তোমাদের চারটি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি, আর চারটি বিষয় থেকে তোমাদের নিষেধ করছি। নির্দেশিত বিষয়ের মাঝে একটি হল ‘ঈমান বিল্লাহ্’ (আল্লাহর প্রতি বিশাস স্থাপন করা)। তারপর তিনি তাদেরকে ব্যাখ্যা করে বুঝালেন যে, ‘ঈমান বিল্লাহ্র’ আর্থ হল, এ কথার সাক্ষ্য স্থাপন করা যে, এক আল্লাহ্ব্যতীত অন্য কোন ইলাহেই আর আমি আল্লাহর রাসূল (সা); সালাত কায়েম করা, য়াকাত দেওয়া, আর গনীমতের মালের এক-পঞ্চমাংশ দান করা। আর তোমাদের নিষেধ করছি কদুর পাএ, সবুজ রঙের মাটির পাএ, বিশেষ ধরনের তৈলাক্ত পাএ ও গাছের গুড়ি খোদাই করে তৈরী পাত্র ব্যবহার করতে।
৪৯৯
মুহাম্মাদ ইবনুল মছান্না (র.)……জারীর ইব্ন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর নিকট সালাত আদায়, যাকাত প্রদান এবং প্রত্যেক মুসলমানকে নসীহত করার বায়’আত গ্রহন করেছি।
হাদিস ৫০০
মুসাদ্দাদ (র.)……হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা উমর (রা.) – এর কাছে বসা ছিলাম। তছন তিনি বললেন, ফিত্না সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্(সা.) – এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে স্মরণ রেখেছ? হযরত হুযাইফা (রা.) বললেন, ‘যেমনি তিনি বলেছিলেন হুবহু তেমনিই আমি মনে রেখেছি’। উমর (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর বাণী স্মরণ রাখার ব্যপারে তুমি খুব দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছ। আমি বললাম, (রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছিলেন) মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশীদের ব্যাপারে যে ফেত্নায় পতিত হয়-সালাত, সিয়াম, সাদাকা, (ন্যায়ের) আদেশ ও (অন্যায়ের) নিষেধ তা দূরীভূত করে দেয়। হযরত উমর(রা.) বললেন, তা আমার উদ্দেশ্যে নয়। বরং আমি সেই ফিত্নার কথা বলছি, যা সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় ভয়াল হবে। হুযাইফা (রা.) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! সে ব্যাপারে আপনার ভয়ের কোন কারন নেই। কেননা, আপনার ও সে ফিত্নার মাঝখানে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। হযরত উমর (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, সে দরজাটি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দওয়া হবে? হুযাইফা (রা.) বললেন, ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর (রা.) বললেন, তাহলে তো আর কোন দিন তা বন্ধ করা যাবে না। [হুযাইফা (রা.) – এর ছাএ শাকীক (র.) বললেন], আমরা জিজ্ঞাসা করতে আমার ভয় পাছিলাম। তাই, আমরা মাসরূক (র.) – কে বললাম এবং তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, দরজাটি উমর (রা.) নিজেই।
হাদিস ৫০১
কুতাইবা (র.)……আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি জনৈক মহিলাকে চুম্বন করে বসে। পরে সে রাসূলুল্লাহ্(সা.)- এর আছে এসে বিষয়টি তাঁর গোচরীভূত করে। তখন আল্লাহ্তা’আলা আয়াত নাযিল করেনঃ “দিনের দু’প্রান্তে-সকাল ও সন্ধ্যায় এবং রাতের প্রথম অংশে সালাত কায়েম কর। নিশ্চয়ই ভাল কাজ পাপাচারকে মিটিয়ে দেয়”। লোকটি জিজ্ঞাস করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ্(সা.)! এ কি শুধু আমার বেলায়? রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ আমার সকল উম্মাতের জন্যই।