হাদীস নং ১৪৮৯
মুসাদ্দাদ রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করলাম, (হাতীমের) দেয়াল কি বায়তুল্লাহর অন্তর্ভূক্ত, তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, তাহলে তারা বায়তুল্লাহর অন্তর্ভূক্ত করল না কেন ? তিনি বললেন : তোমার গোত্রের সময় অর্থ নিঃশেষ হয়ে যায়। আমি বললাম, কাবার দরজা এত উচু হওয়ার কারণ কি ? তিনি বললেন : তোমার কওম তা এ জন্য করেছে যে, তারা যাকে ইচ্ছা তাকে ঢুকতে দিবে এবং যাকে ইচ্ছা নিষেধ করবে। যদি তোমার কওমের যুগ জাহিলিয়্যাতের নিকটবর্তী না হত এবং আশংকা না হত যে, তারা একে ভাল মনে করবে না, তাহলে আমি দেয়ালকে বায়তুল্লাহর অন্তর্ভূক্ত করে দিতাম এবং তার দরজা ভূমি বরাবর করে দিতাম।
হাদীস নং ১৪৯০
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন : যদি তোমার গোত্রের যুগ কুফরীর নিকটবর্তী না হত তাহলে অবশ্যই কাবাঘর ভেঙ্গে ইবরাহীম আ.-এর ভিত্তির উপর তা পুনঃ নির্মাণ করতাম । কেননা কুরাইশগণ এর ভিত্তি সংকুচিত করে দিয়েছে। আর আমি আরো একটি দরজা করে দিতাম। আবু মুআবিয়া রহ. বলেন, হিশাম রহ. বলেছেন “খালফান” অর্থ দরজা।
হাদীস নং ১৪৯১
বায়ান ইবনে আমর রহ…….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন : হে আয়িশা ! যদি তোমার কওমের যুগ জাহিলিয়াতের নিকটবর্তী না হত তাহলে আমি কাবা ঘর সম্পর্কে নির্দেশ দিতাম এবং তা ভেঙ্গে ফেলা হত। তারপর বাদ দেওয়া অংশটুকু আমি ঘরের অন্তর্ভূক্ত করে দিতাম এবং তা ভূমি বরাবর করে দিতাম ও পূর্ব-পশ্চিমে এর দুটি দরজা করে দিতাম। এভাবে কাবাকে ইবরাহীম আ. নির্মিত ভিত্তিতে সম্পন্ন করতাম। (বর্ণনাকারী বলেন) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ উক্তি কাবাঘর ভাঙ্গতে (আবদুল্লাহ) ইবনে যুবাইর রা.-কে অনুপ্রাণিত করেছে। (রাবী) ইয়াযীদ বলেন, আমি ইবনে যুবাইর রা.-কে দেখেছি তিনি যখন কাবা ঘর ভেঙ্গে তা পুনঃ নির্মাণ করেন এবং বাদ দেওয়া অংশটুকু (হাতীম) তার সাথে সংযোজিত করেন এবং ইবরাহীম আ.-এর নির্মিত ভিত্তির পাথরগুলো উটের কুঁজের ন্যায় আমি দেখতে পেয়েছি। (রাবী) জারীর রহ. বলেন, আমি তাকে বললাম, কোথায় সেই ভিত্তিমূলের স্থান ? তিনি বললেন, এখনই আমি তোমাকে দেখিয়ে দিব। আমি তাঁর সাথে বাদ দেওয়া দেয়াল বেষ্টনীতে (হাতীমে) প্রবেশ করলাম। তখন তিনি একটি স্থানের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, এই খানে। জারীর রহ. বলেন, দেওয়াল বেষ্টিত স্থানটুকু পরিমাপ করে দেখলাম ছয় হাত বা তার কাছাকাছি।
হাদীস নং ১৪৯২
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : এ শহরকে আল্লাহ সম্মানিত করেছেন, এর একটি কাটাও কর্তন করা যাবে না, এতে বিচরণকারী শিকারকে তাড়া করা যাবে না, এখানে মুআরিফ ব্যতীত পড়ে থাকা কোন বস্তু কেউ তুলে নিবে না ।
হাদীস নং ১৪৯৩
আসবাগ রহ…….উসামা ইবনে যায়েদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি মক্কায় অবস্থিত আপনার বাড়ির কোন স্থানে অবস্থান করবেন ? তিনি বললেন : আকীল কি কোন সম্পত্তি বা ঘর-বাড়ি অবশিষ্ট রেখে গেছে ? আকীল এবং তালিব আবু তালিবের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হযেছিলেন, জাফর ও আলী রা. হন নি। কেননা তাঁরা দুজন ছিলেন মুসলমান। আকীল ও তালিব ছিল কাফির। এ জন্যই উমর ইবনে খাত্তাব রা. বলতেন, মু’মিন কাফিরের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না। ইবনে শিহাব রহ. বলেন, (পূর্ববর্তী গণ নিম্ন উদ্ধৃত আয়াতে উক্ত বিলায়াতকে উত্তরাধিকার বলে) এই তাফসীর করতেন। আল্লাহ বলেন : যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং নিজেদের জানমাল নিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, আর যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য করেছে, তারা একে অপরের ওলী হবে (আয়াতের শেষ পর্যন্ত)। (৮ : ৭২)।
হাদীস নং ১৪৯৪
আবুল ইয়ামান রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মিনা থেকে ফিরে) যখন মক্কা প্রবেশের ইচ্ছা করলেন তখন বললেন : আগামীকাল খায়ফ বনী কেনানায় (মুহাসসাবে) ইনশাআল্লাহ আমাদের অবস্থানস্থল হবে যেখানে তার (বনূ খায়ফ ও কুরাইশগণ) কুফরীর উপর শপথ নিয়েছিল।
হাদীস নং ১৪৯৫
হুমাইদী রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুরবানীর দিনে মিনায় অবস্থানকালে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আমরা আগামীকাল (ইনশাআল্লাহ) খায়ফ বনী কিনানায় অবতরণ করব, যেখানে তারা কুফরীর উপরে শপথ নিয়েছিল। (রাবী বলেন) খায়ফ বনী কিনানাই হল মুহাসসাব। কুরাইশ ও কিনানা গোত্র বনূ হাশিম ও বনূ আবদুল মুত্তালিবের বিরুদ্ধে এই বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল, যে পর্যন্ত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাদের হাতে সমর্পণ করবে না সে পর্যন্ত তাদের সাথে বিয়ে-শাদী ও বেচা-কেনা বন্ধ থাকবে। সালাম রহ. উকাইল রহ. সূত্রে এবং ইয়াহইয়া ইবনে যাহহাক রহ. আওযায়ী রহ. সূত্রে ইবনে শিহাব যুহরী রহ. থেকে বর্ণিত, এবং তাঁরা উভয়ে বনূ হাশিম ও বনূ মুত্তালিব বলে উল্লেখ করেছেন। আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) রহ. বলেন, বনূ মুত্তালিব হওয়াই অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ।