ওরা কতজন ছিল? সুরটা বেইলির।
আমার ধারণা, দু’জন। তবে ড্যাশার মরার পর ওকে শেষ করা মোটেও কঠিন হবে না। এসো, কাজটা সেরে ফেলি। ডাকির স্বরে উৎসাহ।
দাঁড়াও। জেরির স্বরটা অস্বাভাবিক শোনাল। হয়তো আরও লোক থাকতে পারে।
মাত্র দুটো শট, স্মিথ বলল। তুমি শিওর ড্যাশার মরেছে?
জেরির বদলে ডাক জবাব দিল। আমি ওকে পড়তে দেখেছি। জোরে আছড়ে পড়েছে।
ড্যাশার বুঝতে পারছে, সম্ভবত হার্টও কথাগুলো শুনতে পাচ্ছে। রনি মরে গেছে বিশ্বাস করে তিনজন আউটলর বিরুদ্ধে সে একাই মোকাবিলা করার প্ল্যান করবে। জেরি সমার্সকে মারার একটা চেষ্টা না করে সে যে কিছুতেই ফিরবে না, এটা রনি জানে। এলাকাটা ছোট, তাই সে কিছু করলে, হার্ট সেটা শুনতে পাবে।
অন্য লোকটা পালিয়েছে, হঠাৎ বলল ডাকি স্মিথ। আমি দেখছি।
যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত হয়ে খোলা এলাকা পেরিয়ে পাইন গাছগুলোর দিকে এগোল সে। ডাক অস্বস্তিভরে ওর দিকে চেয়ে আছে লক্ষ করল রনি। জেরি সমার্স দ্রুত ঘুরে জঙ্গলের দিকে এগোল। তারপর গাছের আড়ালে অদৃশ্য হলো।
অপেক্ষা করছে ড্যাশার! হার্ট কোথায় আছে স্থির করার চেষ্টা করছে-বুঝতে চায় ও কি প্ল্যান করেছে। খোলা এলাকায় কোন শব্দ নেই। হঠাৎ কাছেই একটা সরু ডাল ভাঙার শব্দ হলো!
নীরবতা। এবং পরে পদক্ষেপের শব্দ। লোকটা সাবধানে এগোচ্ছে। নিশ্চিন্ত সহজ ভঙ্গিতে এগিয়ে আসছে–যেন বেড়াতে বেরিয়েছে।
উৎকণ্ঠা নিয়ে অপো করছে রনি। গাছের মাঝে ফাঁকটার দিকে সে নজর রেখেছে। ওই পায়ের শব্দে কেমন যেন একটা অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ঠিক স্বাভাবিক নয়।
ড্যাশার! শব্দটা ওর পিছন থেকে এল!
তৈরি হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল রনি। দেহ ঘোরার সাথে কোল্টটা ওর হাতে উঠে এল। জেরি সমার্স, ছুরির পাতের মত চিকন, ওর সুদর্শন চেহারাটা এখন কঠিন আর হিংস্র। বনের প্রান্তে দাঁড়িয়ে। ওর ড্র এত দ্রুত যে হাতটা ঝাঁপসা হতে দেখা গেল।
ড্যাশারের চেহারা শক্ত। কোমরের কাছ থেকেই গুলি করল সে। আবার ওদিক থেকেও গুলি আসছে। একটা কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেল। গরম বাতাস অনুভব করল রনি। ওর হাতে কোল্টটা লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে–এগিয়ে যাচ্ছে সে। পিছিয়ে গেল জেরি। ওর শার্টের সামনের দিকটায় লাল রঙ ছড়িয়ে পড়ছে।
তবু ওর পিস্তল দুটো আবার উঠল। এবার দ্বিতীয় কোল্ট বের করে একসাথে দু’হাতে গুলি ছুঁড়ল রনি। বুকের ওপর ভারি বুলেটের আঘাতে টলতে টলতে পিছিয়ে একটা গাছের সাথে ধাক্কা খেলো খুনী জেরি সমার্স। মাথায় একটা বুলেটের ক্ষত থেকে রক্ত ওর মুখ প্রায় ঢেকে ফেলেছে। পড়ে গেল সে। এক হাতের ওপর গড়িয়ে মাথা তুলল, অন্য হাতে রয়েছে একটা পিস্তল।
আর গুলি না করে রনি অপেক্ষা করছে। জেরির আঙুল ফসকে পিস্তলটা পড়ে গেল। নাক দিয়ে পাইনের কাটা ঘষে মাথাটাও মাটি ছুঁলো। ছুটে এগিয়ে গেল রনি।
ওর পাশে হাঁটু গেড়ে বসে, মরণাপন্ন লোকটাকে চিত করল। চোখের পাতা কয়েকবার কাঁপার পর ওর চোখ খুলল। ধোকা তোমাকে ধোকা দিয়েছি! ফেঁসফেঁসে গলায় সে বলল। অদ্ভুত-একৌ (echo)। জেরির চোখ দুটো স্থির হয়ে গেল। কোল্টে গুলি ভরতে ভরতে ধীরে উঠে দাঁড়াল রনি।
ফিনলে হার্ট ওর দিকেই এগিয়ে আসছে। হাত উঁচু করে তুলে হার্টের আগে আগে চলছে ডাক। কিন্তু পায়ের শব্দটা রনির পিছন থেকে আসছে বলে মনে হচ্ছে।
ব্যাপারটা কি? কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করল ফিনলে।
পিছনের ক্লিফটার জন্যে এমন হচ্ছে, ব্যাখ্যা করল ডাক। পুরো বেসিনে এমন আরও কয়েকটা জায়গা আছে। মনে হয় শব্দ উল্টো দিক থেকে আসছে।
ডাকি স্মিথ কোথায়?
আমার পিছু নিয়ে বনে ঢুকেছিল ও, রনির প্রশ্নের জবাব দিল হার্ট। প্রথম গুলি সে মিস করেছিল। জেরি সমার্সের লাশটার দিকে তাকাল ফিনলে। ভাল, তুমি শেষ করেছ ওকে। হয়তো এখন জেমসের আত্মা শান্তি পাবে।
রকিঙ কের দু’মাইলের মধ্যে আসতেই শর্টি ওদের দেখতে পেল। টেরি আর হ্যারিকে নিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে ফোরম্যানকে অভ্যর্থনা জানাতে
এগিয়ে গেল। ডাকের দিকে চাইল শর্টি।
দেখছি একটা বড় হাঁস ধরে এনেছ তোমরা, বলল সে। অন্যদের কি খবর?
ওরা আর কাউকে জ্বালাতে আসবে না, জবাব দিল ফিনলে। তারপর বন্দীকে নিয়ে শহরের দিকে এগোল। ফিনলে বেশ কিছুটা এগিয়ে গেলে সবাইকে শুনিয়ে শর্টি বলল, ওই যে লোকটা যাচ্ছে, এক সপ্তাহের মধ্যেই ও বিয়ে করবে! তোমরা দেখে নিও!
ফিনলে? অবাক হলো হ্যারি। পাত্রীটাকে?
মলি।
মলি? বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হলো টেরি। আমি তো ভেবেছিলাম তুমি ওকে ভালবাসো। সারাক্ষণ তো ওখানেই পড়ে থাকতে।
নিশ্চয় ভালবাসি। হাসল শর্টি। ওর রোদে পোড়া চেহারা কৌতৃকে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মলি আমার বোন!
তোমার বোন? চেহারায় কপট আতঙ্কের ভাব ফুটিয়ে তুলে হ্যারি বলল, কে ভাবতে পারবে তোমার মত কদাকার একটা লোক, আর মলির মত একটা সুন্দর মেয়ে একই ঝুড়ি থেকে এসেছ!
হ্যাঁহ! তুমি আর বোলো না! পাল্টা আক্রমণ করল শর্টি। আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখেছ কখনও?
শব্দ তুলে হাসল রনি। এবার তার যাবার সময় এসেছে। এদিককার সব এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। হিউবার্ট আপস করেছে; কর্ন প্যাচের রাসলাররা, যারা বেঁচে ছিল, তারা পালিয়েছে, স্টেজ ডাকাতি যারা করত, তাদের মধ্যে ডাক ছাড়া আর কেউ জীবিত নেই। ভয়ে সোনা কোথায় লুকিয়ে রাখা আছে, সেটাও বলে দিয়েছে ডাক-অ্যাডামের কথাও। টাকা, আর অ্যাডামের দোষ প্রমাণ করা চিঠিও সে হার্টের কাছে দিয়ে দিয়েছে। বাকি সব ব্যবস্থা শেরিফ রবার্ট আর হ্যারিংটনকে নিয়ে ফিনলে হার্টই করবে। এখানকার কাজ তার পুরোপুরি শেষ হয়েছে। এখন আর বেন কেসির ফাইটিঙ সেগুন্দোর প্রয়োজন হবে না।