রনির সাথে ফিনলের লিভারি আস্তাবলে দেখা হয়েছিল। সেও মাত্র ঢুকেছে আর ফিনলে তখন বেরোচ্ছে। কোন ট্র্যাক দেখতে পেলে, হার্ট?
কাঁধ উঁচাল সে। সম্প্রতি পাইনি। তবে সে বেঁচে আছে। আমার অনুভূতি তাই বলছে।
হ্যাঁ। খড়ের একটা গাটের ওপর বসে সিগারেট ধরাল রনি। ওকে খুঁজে বের করতে হলে তোমাকে মাথা খাটাতে হবে। চাক্ষুষ ট্রেইল নয়-বুদ্ধি খাটিয়ে ওর পিছু নিতে হবে।
ওতে আমি কখনও ভাল ছিলাম না, হার্ট বলল। ট্রেইলের চিহ্ন আমি আর দশজনের মতই পড়তে পারি–কিন্তু ওই পর্যন্তই। চিন্তিত মুখে রনির দিকে তাকাল সে। ও এখন কি করবে বলে তোমার ধারণা?
বলা কঠিন, স্বীকার করল রনি। কিন্তু যদি ধরে নিই ডাক আর ডাকি ওর সাথেই আছে, তাহলে ওরা তিনজন। ওদের খাবার, পানি, গোলা-বারুদ, আর নিরাপদে লুকানোর মত একটা জায়গা দরকার।
ওরা সেভেন পাইনএ নেই এটা নিশ্চিত। এর উত্তরে পুরোটাই রকিঙ কে রেঞ্জ। ওখানে লুকোবার কোন জায়গা নেই। কর্ন প্যাঁচ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ইউনিয়নভিলে ওর অনেক শত্রু আছে, তাই ওখানে সে যাবে না। পোকার গ্যাপ দিনের বেলায় একেবারে খোলামেলা। তাহলে বাকি কি রইল?
বেশি না, ভুরু কুঁচকে স্বীকার করল হার্ট। একটা শব্দে সে ঘুরে দেখল হ্যারি আর শর্টি ধুলোর ওপর ম্যাপ এঁকে মনোযোগ দিয়ে দেখছে।
ফিনলে? প্রশ্ন করল শর্টি, স্টার সিটিতে হাই কার্ড মাইনের ওদিকে তুমি গেছিলে? আগে থেকে না জানলে ওটা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
ওটা কোথায়?
শর্টি ম্যাপের ওপর আঙুল দিয়ে দেখাল। ক্যানিয়নের গভীরে–এখানে।
না, স্বীকার করল ফিনলে। ওট মিস করেছি। পানি আছে ওখানে?
হ্যাঁ। বেশি ভাল না, তবু পানি,
গম্ভীর ভাবে মাথা ঝাঁকাল হার্ট। আমি তাহলে ওদিকেই রওনা হচ্ছি। রনির দিকে ফিরে সে প্রশ্ন করল, তুমি আসতে চাও?
মাথা নাড়ল ড্যাশার। আমাকে র্যাঞ্চে বেনের সাথে দেখা করতে হবে।
ফিনলে রওনা হয়ে গেল। গলা ভেজাতে সেলুনে ঢুকল ওরা। টেবিলে ড্রিঙ্ক নিয়ে বসে চারদিকে চোখ রেখেছে। অফিসের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে অ্যাডাম। রেড ওর দিকে এগিয়ে কি যেন রিপোর্ট করল। দু’জনেই কিছুক্ষণ উত্তেজিত কথাবার্তার পর বাইরে জানালার নিচে দাঁড়িয়ে মাটি পরীক্ষা করে দেখে ভিতরে এসে অফিসে ঢুকল।
নিজের ড্রিঙ্কটা চট করে শেষ করে উঠে দাঁড়াল ড্যাশার। ওরা কেন এত উত্তেজিত, এটা ওর জানা দরকার। বেরিয়ে জানালার তলায় এসে পঁড়াল সে। ট্রাকগুলো পরিষ্কার। জানালার নিচে দাড়িয়ে ছোট বুট পরা কেউ যে জানালা জোর করে খোলার চেষ্টা করেছিল। জানালার কাঠ আর ধারের দাগ দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু খুলতে পারেনি।
জেরি সমার্স শহরে এসেছিল!
সেলুন রাত দুটো পর্যন্ত খোলা থাকে। সুতরাং চেষ্টাটা তোর-রাতে হয়েছে। তাহলে কোথায় গেছে সে? আর সেলুনেই বা কেন ঢুকতে চেয়েছিল?
আস্তাবলে নিজের ঘোড়ার জিনের ওপর হাত রেখে রনি ভাবছে। একটা চিন্তা ওর মাথায় এল। জেগারের স্টোরের দিকে চেয়ে তার মনে হলো জেগার হয়তো কিছু শুনে থাকতে পারে। লোকটা স্টোরেই ঘুমায়, আর হাইগ্রেড সেলুন থেকে স্টোরের দূরত্ব মাত্র কয়েক ফুট। আস্তাবল ছেড়ে স্টোরের দিকে এগোল সে।
ওকে ঢুকতে দেখে জেগার এগিয়ে এল। কিছু চাই তোমার?
হ্যাঁ। কিছু .৪৪ গুলি। দুই বাক্স দাও। লোকটা গুলি বের করতে কাউন্টারের পিছনে গল। ঘুরেফিরে দেখছে ড্যাশার। পুরোপুরি একটা ওয়েস্টার্ন স্টোর। মাঝের কাউন্টারে পুরুষ আর মহিলাদের নানা ধরনের পোশাক। দেয়াল ঘেঁষে তিনটে দেয়াল জুড়ে ছাদ পর্যন্ত তাক। রেঞ্জে যত রকম জিনিস মানুষের দরকার হতে পারে সবই আছে ওখানে সাথে রকমারি খাবারও।
গুলির বাক্স দুটো রনির সামনে কাউন্টারের ওপর রাখল জেগার। ওর দিকে তাকাল ড্যাশার। ওই ঠাণ্ডা চোখ দুটো দিয়ে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছে দোকানি। তুমি তো এখানেই ঘুমাও, তাই না? আলাপের ছলে প্রশ্ন করল রনি।
আড়ষ্ট হলো জেগার। হ্যাঁ। আর কিছু চাই তোমার? না চাইলে আমি যাই, আমার কাজ আছে।
কাজ একটু পরে করলেও চলবে। রনির চোখ দুটো একটু কঠিন হলো। গত রাতে বিছানায় যাওয়ার পর কিছু শুনতে পেয়েছিলে? এই ধরো, দুটোর পরে?
কি শুনব? পাল্টা প্রশ্ন করল সে। একটু অস্থির। রাত দুটোয় হাই গ্রেড সেলুন বন্ধ হয়। এরপর শহরটা কবরের মত হয়ে যায় তিরিশ মিনিটের মধ্যেই।
স্টোরের ভিতর আবার চোখ বুলিয়ে এক বাক্স বাটালির ওপর ওর চোখ পড়ল। এগিয়ে একটা হাতে তুলে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখল। এই রকমই কিছু জানালা খোলার চেষ্টায় ব্যবহার করা হয়েছিল। চওড়াতেও জানালার দাগের সাথে মেলে। হঠাৎ চোখ তুলে চেয়ে জেগারের চোখে ভয়ের চিহ্ন দেখতে পেল। এই রকম বাটালি কি ইদানীং বিক্রি করেছ। তুমি?
না…করেছি বলে মনে পড়ছে না। জেগারের কথা বেধে যাচ্ছে।
গত রাতে একটা বেচেছ? কিংবা তোমার থেকে জোর করে কেউ নিয়েছে?
না! প্রায় চেঁচিয়ে উঠল দোকানি। গত রাতে আমার দোকান বন্ধ ছিল। বেশ আগেই বন্ধ করেছিলাম আমি! যদি করতাম, তাহলে কি তোমাকে বলতাম না?
হয়তো বলতে, কিংবা নাও বলতে পারতে। যদি করে থাকো তাহলে বলে ফেলাই ভাল।
কিছুক্ষণ নীরব থাকল জেগার। ওর চোখ দুটো সরু হলো, চোয়াল শক্ত হয়েছে। বিরক্ত স্বরে সে বলল, যদি করেও থাকি, সেটা আমার ব্যাপার-তোমার কি? আর কিছু কেনার না থাকলে এবার তুমি যাও আমার কাজ আছে।