একটা কাউহ্যাণ্ডের রোজগারের তুলনায় অনেক টাকা, মন্তব্য করল বিল।
আমি ভালই কামাই। বিশদ ভাবে হাসল রনি।
এই রেড রিভার রেগানই তাস বেঁটেছে। কিন্তু যেভাবে সে তাস গুছিয়ে শাফল করেছে তাতে মনে হয় খেলাটা সে নতুন শিখেছে। আর লোকটা যদি গ্যাম্বলার হয়–জীবনে অনেক পেশাদার জুয়াড়ি সে দেখেছে-রেডকে তেমন মনে হয় না।
না, বিল বলল, পট লিমিটের প্রয়োজন নেই। পটে যা আছে তার ওপর আমি আরও পাঁচশো ডলার বাজি ধরছি। তোমার চেয়ে বড় তাস আমার আছে।
‘শশা, বলল রনি, এখনও হাসছে। নিজের তাসগুলো উল্টে টেবিলের ওপর ছড়িয়ে দিল–চারটে টেক্কা। তিনটে নিচের থেকে আর একটা কপাল গুণে।
বিস্ফারিত হলো বিলের চোখ। চেয়ার ছেড়ে অর্ধেকটা উঠেছে, গলার শিরাগুলো ফুলে গেছে। পাজি শয়তান!
পিস্তল বের করার জন্যে হাত বাড়াল ট্রয়। লাফিয়ে পিছিয়ে গেল রনি। ওর চেয়ারটা উল্টে পড়ল। কোল্ট দুটো উঠে এসেছে ওর হাতে।
পিস্তলের বাটের ওপরই ট্রয়ের হাত জমে গেল। ওয়াটসন জায়গাতেই আড়ষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ড্যাশার হাসল। ঘটনাটা কি? তোমরাও কি চারটে টেক্কা নাকি? পিস্তল দিয়ে ইশারা করল রনি। পিছিয়ে যাও!
বাম হাতের পিস্তলটা খাপে ভরে বিলের তাসগুলো উল্টে দিল। তারপর হাসল। তোমার টেক্কাগুলো নতুন ডেক থেকে এসেছে। সমান সমান ডেক ব্যবহার করা উচিত ছিল তোমার। খেলা তাস আর নতুন তাসের তফাত সহজেই ধরা যায়। শান্তভাবে টাকাগুলো পকেটে ভরতে শুরু করল সে। সরি, খেলাটা এভাবে নষ্ট হয়ে গেল, কিন্তু তোমরা রা খুলতে শুরু করলে। আমিও জবাব দিলাম। নড় করে নিজের তাসগুলোর দিকে ইঙ্গিত করল সে। চারটে বুলেট। এর বেশি ব্যবহার করতে আমাকে বাধ্য কোরো না।
রাগে ফুঁসছে ট্রয়, বিল ওয়াটসন নিজেকে সম্পূর্ণ সংযত রেখেছে, কেবল ওর চোখে রাগের আভাস। হ্যানকিনস পিস্তল ড্র করতে গিয়ে, ওই অবস্থান থেকে সেটা মারাত্মক হবে বুঝে জায়গাতেই বসে আছে। কেবল ড্রিনানের কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি, ব্যাপারটাকে যেন উপভোগই করছে সে।
খেলাটা উপভোগ করলাম, নিচু স্বরে বলল রনি। তোমরা চুচাপ বসে একটু বিশ্রাম নাও, আমি বিদায় নিচ্ছি।
এক মিনিট! বিল নিজের চেয়ারে আয়েশ করে বসেছে। যাবে কেন? আমার ধারণা তুমি নিজেরটা নিজেই সামলাবার ক্ষমতা রাখো, তাছাড়া তোমার অভিজ্ঞতাও প্রচুর। পিস্তলের ড্র দেখেই বুঝেছি ওগুলোর ব্যবহারও তুমি ভালই জানো। পিস্তল এত ফাস্ট ড্র করতে আমি আর কাউকে দেখিনি–একজন ছাড়া। কাজ করবে?
রনি পকেটের টাকার দিকে ইঙ্গিত করল। এত থাকার পরেও? তোমার মাথা খারাপ হয়েছে?
ওটা চিকেন ফীড। এখানে আশপাশে প্রচুর আছে।
বস-ট্রয় প্রতিবাদ জানাল। শাট আপ! বিরক্ত হয় ধমক দিল বিল। তোমার মত একজন শক্ত মানুষকে আমি অনেক কাজে লাগাতে পারব।
রেড রিভার রেগান কাঁধ উঁচাল। বিজনেসের আলাপে আমি সব সময়েই আগ্রহী।
তাহলে ওখানে একটা বাঙ্ক বেছে নাও। নো হার্ড ফিলিঙস। সকাল পর্যন্ত থাকো। সকালে কথা হবে।
নিশ্চয়। ঠাণ্ডা মাথায় পিস্তলটা খাপে ভরল ড্যাশার। ট্রয়ের চোখ দুটো জ্বলছে। তোমাকে আমি হত্যা করব! বলল সে। তুমি আমার সামনে দাঁড়াতেই পারবে না! রক্তরাঙা ট্রেইল
শান্ত স্বরে রনি বলল, মরতে চাইলে যেকোন সময়ে ড্র করতে পারো।
ট্রয়ের হাতের আঙুল পিস্তলের ব্যাটের কাছে কঁপছে। এক ঝটকায় পিস্তল বের করার পূর্বাভাস। এমন লোক আগেও দেখেছে রনি। এরা খুনের নেশায় এমনই বিভোর যে আর কিছুই তাদের এই ভাবটা মুছে দিতে পারে না।
ট্রয়! গালি দিয়ে ধমক দিল ওয়াটসন। বোকার মত কাজ কোরো! এসব বন্ধ করো!
রোষের সাথে থুতু ফেলে কামরা ছেড়ে বেরিয়ে গেল সে। ওর যাওয়া চেয়ে দেখল উ্যাশার, তারপর কাঁধ উঁচাল। কিন্তু ওর মুখ চিন্তামগ্ন।
রনি বুঝতে পারছে, সে বা তার টাকা এখানে সকাল পর্যন্ত কিছুতেই নিরাপদ থাকতে পারে না। কিন্তু ঝামেলা ছাড়াই এখান থেকে সে বেরিয়ে পড়তে চায়। বিল ওয়াটসনের দিকে ফিরল সে। বলল, ঠিক আছে, কাল সকালে দেখা হবে। আমার ঘোড়াটা কেমন আছে খবর নিয়ে আমি ঘুমোতে যাব।
বেরিয়ে এল সে। ছায়ায় দাঁড়িয়েছে। তাকিয়ে দেখল লিভারি আস্তাবলের দরজার সামনে কিছু নড়ল। কিন্তু ও ট্রয় নয়। রাস্তা পার হলো রনি। একজন বিশাল লোক ওকে পেরিয়ে গেল। লোকটাকে খুব পরিচিত মনে হলো ওর। লোকটা যে ওর দিকে ফিরে তাকিয়েছে এটা খেয়াল করল না সে। দ্রুত আস্তাবলে গিয়ে টপারের ওপর জিন চাপিয়ে, মাথার সাজ পরিয়ে ওকে তৈরি করল।
ঘোড়াটাকে হটিয়ে নিয়ে আস্তাবলের দরজায় এসে দাঁড়াল রনি। বিশাল লোকটা সেলুনে ঢোকার আগে সিঁড়ির ওপর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করল। বুঝতে পারছে না ওর পরিচয় ফাঁস হয়েছে কি না। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকল সে।
হাওডি, বিল বলল সে। হ্যাটটা পিছন দিকে ঠেলে দিল। ও এখানে কি করছিল? বিল ওয়াটসনকে প্রশ্ন করল সে।
কেন, তুমি ওকে চেনো? হেনরির দিকে কঠিন দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ওয়াটসন।
চিনি? ফেটে পড়ল হেনরি। অবশ্যই চিনি! ও রকিঙ কে-এর নতুন ফোরম্যান। রনি ড্যাশার।
কি! প্রথমে ওয়াটসনের মুখটা বিবর্ণ হলো, তারপর প্রচণ্ড রাগে লাল হলো। কি বললে? রনি ড্যাশার?
একটা গালি দিয়ে নিজের অস্ত্র তুলে নিল বিল। ওর পিছনে আরও দু’জন লোক বেরিয়ে এল। ওরা বাঙ্ক হাউসের দিকে ছুটল। কিন্তু ওখানে কেবল তার নিজের লোকজনই রয়েছে। দ্রুত আস্তাবলে পৌঁছল ওরা, সাদা ঘোড়াটা ওখানে নেই!