ঝামেলাটা কি?
ওরা রেঞ্জ চায়। বেনের ধারণা, গরু চুরিতে ওদের হাত আছে। হ্যারিরও তাই ধারণা। বিশ বছর ধরে আমাদের গরু যে জমিতে চরেছে সেখান থেকে ওরা তাদের খেদিয়ে দিচ্ছে। হ্যারি ওদের মুখোমুখি হলে ওরা তার মুখের ওপর হেসেছে। বলেছে মুরোদ থাকলে সে কিছু করার চেষ্টা করতে পারে। ওরা তিনজনই উপস্থিত ছিল। হ্যারিকে উস্কে পিস্তল বের করাতে চাচ্ছিল, তাহলে ওকে মেরে ফেললেও কেউ ওদের দোষ দিতে পারত না।
লঙই সবথেকে পাজি, আমার বিশ্বাস। কিন্তু ওদের মধ্যে বাছাবাছিতে লাভ নেই, কারণ কেউ কারও চেয়ে কম যায় না। ওরা বড়াই করে বলেছে আমাদের ওরা ভিটেছাড়া করবে।
ঘোড়ার খুরের শব্দ শুনে মুখ তুলে তাকাল রনি। দেখল তিনজন কাজের মানুষের পাশে বেন ঘোড়ার পিঠে এসে হাজির হলো। রোদে পোড়া চতুর চোখের লোকটাই টেরি হবে বলে আঁচ করল রনি। সরু কোমরের লোকটার চেহারায় পুরোপুরি টেক্সাসের ছাপ রয়েছে–ও হ্যারি ছাড়া আর কেউ হতে পারে না। ওদের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল বেন। শেষ লোকটার বিশাল দেহ-নাম হেনরি।
আজ থেকে রনি তোমাদের সেগুলো (ফোরম্যান)। তোমরা আমাকে যেমন মানেনা, ওকেও তেমনি মানবে। ওর আদেশকে আমারই আদেশ মনে করবে। ড্যাশার! এসো আমরা ভিতরে বসে কথা বলব। ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল সে।
ভিতরে ঢুকে পকেটে হাত ঢুকাল বেন। ওর চোখ দুটো চকচক করছে। ড্যাশার, বলল সে, তোমার সম্পর্কে আমি অনেক শুনেছি। খ্রী J-এর জনসন তো কেবল তোমার গল্পই করে। এখন তুমি এখানে এসেছ এটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ। ওরা তোমার সম্পর্কে যা বলে তা যদি ঠিক হয়। তাহলে আমরা এবার সত্যিই ত্রাণ পাব।
তুমি ফাইটার। আমি মানুষ চিনি, তুমি একাই একটা যুদ্ধ জিততে পারো। যুদ্ধ হলে তুমি আদেশ দেবে। র্যাঞ্চ আমি সামলাতে পারি কিন্তু ফাইটিঙ যা হয় সেটা তোমাকে সামলাতে হবে। তোমাকে সেগুন্দো করে আমার কাঁধ থেকে একটা বিরাট বোঝা নেমে গেল। এখন নিশ্চিন্ত হয়ে আমি র্যাঞ্চের কাজ দেখতে পারব। হোল্ড-আপের পর ওখানে তোমাকে দেখেই আমি বুঝেছি, জনসন ঠিকই বলেছিল–আমি দুর্বল মানুষ ফাইটিঙ সামলাতে পারি না।
তুমি কি ব্লু মাউন্টিনের ওই তিন ভাইয়ের সাথে ঝামেলার আশা করছ?
ওদের কথা তুমি শুনেছ? হ্যাঁ, অন্য সূত্র থেকেও ঝামেলা আসতে পারে। এখানে আমরাই হচ্ছি তরমুজ, সবাই আমাদের কেটে খেতে চায়।
পাতলা গড়নের র্যাঞ্চারের প্রতি রনির শ্রদ্ধা আরও বাড়ল। ঠিক আছে, বলল সে, আমি গোলাগুলি ছাড়াই সব সামলাবার চেষ্টা করব। কিন্তু সেটা যদি সম্ভব না হয়?
তোমার নিজস্ব বিবেচনা ব্যবহার কোরো। অস্থির ভাবে পায়চারি করছে বেন। ওরা ঝামেলা করতে চাচ্ছে, যদি চায় ওদের শিক্ষা দিয়ে দিও। কিন্তু–ওর চোখ কঠিন হলো। ওরা শুরু করলে তবেই কেবল আমরা ফাইট করব। বুঝেছ?
সত্যি কথা হচ্ছে, রনি র্যাঞ্চের জীবন পছন্দ করে। গরু আর ঘোড়া ওর অত্যন্ত প্রিয়। ঘোড়া খারাপ হোক বা ভাল কোনটাতেই তার আপত্তি নেই। ওদের সাথে খেলতে ওর ভাল লাগে।
এমনও একসময় ছিল যখন এদেশে অফুরন্ত বসতি ছাড়া রেঞ্জ ছিল। এখন সেখানে পুব থেকে মানুষ এসেছে, বসবাস করছে। কিছু নেস্টারও জুটেছে, বড় র্যাঞ্চারদের একটা-দুটো গরু চুরি করে খায়। সুযোগ পেলে পনেরো-বিশটা বা একশোটা তাড়িয়ে নিয়ে আর কোথাও বিক্রি করে দেয়।
অবশ্য ওদের মাঝে অনেক সৎলোকও আছে, যারা কেবল থাকার একটা জায়গা ছাড়া আর কিছু চায় না। এদের খারাপ চোখে দেখে না রনি। কিন্তু কিছু ক্ষমতাশালী র্যাঞ্চার, গুণ্ডা ভাড়া করে ওদের তাড়ানোর ব্যবস্থা করে।
কোন খবরের কাগজে ছাপানো হয়নি। কিন্তু বুড়ো কেসির মৃত্যুর খবর মুখে-মুখে ঠিকই অনেক দূর পৌঁছেচে। খামচি দিয়ে একটু লাভ করার আশায় অনেকেই এখানে এসে হাজির হয়েছে।
প্রথম কয়েকটা রেইড ছিল মৃদু। ওরা পরীক্ষা করে দেখছিল বাঘের বাচ্চাও বাঘ কি না। যখন বুঝল সে দুর্বল–সবাই ওকে পেয়ে বসল।
আউট-ল-দের মাঝে ওই তিন ভাইই শ্রেষ্ঠ। কঠিন বলে ওদের নাম আছে। একসাথেই বসে খাচ্ছে। খবর পৌঁছল। রনি এসেছে। খাওয়া ছেড়েই উঠে দাঁড়াল মিক। আমার কাজ আজই শেষ। আমার টাকা মিটিয়ে দাও। রনির বিরুদ্ধে দাঁড়াব না আমি। ও যে কি তা আমি টেক্সাসেই দেখেছি। পিস্তল দেখা যায় না, কিন্তু গুলি ছোটে। যেখানে মারে সেখানেই বেঁধে গুলি।
লঙ এর গুরুত্ব বুঝছে না। ড্যাশারের নাম সে আগে কখনও শোনেনি। তুমি কি ওই লোকের নাম শুনেই ভেগে যাচ্ছ?
হ্যাঁ, ওকে চিনলে তুমিও দেশ ছেড়ে পালাতে। লোকটা সৎ। কোন রকম অন্যায় সে সহ্য করে না। নির্মম ভাবে গুলি করে হত্যা করে।
পালিয়ে যাচ্ছ? অবাক বিস্ময়ে প্রশ্ন করল লঙ। ঘটনাটা কি?
ঘটনা? লঙের দিকে তাকাল মিক। শোনো, লঙ। আমার সাহস রক্তরাঙা ট্রেইল
কারও চেয়ে কম নয়। কিন্তু আমি বোকা নই। কোন মূল্যেই আমি ওর বিরুদ্ধে দাঁড়াব না। যাহোক, আমার ইচ্ছে আমি দক্ষিণে যাব, যেখানে রোদ আছে।
আশ্চর্য, কি আবোল-তাবোল বলছ? এখন বসন্ত চলছে, মাসখানেক পরে এখানেই তুমি অনেক সূর্য পাবে।
হতে পারে। কিন্তু এখন আমার খুব ঠাণ্ডা লাগছে।
মিছেই ভয় পাচ্ছ তুমি, একটু কঠিন স্বরেই বলল সিলভার। মনে হচ্ছে তোমার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।