- বইয়ের নামঃ দ্য সেলফিশ জিন
- লেখকের নামঃ রিচার্ড ডকিন্স
- প্রকাশনাঃ উড়াল বুকস
- বিভাগসমূহঃ অনুবাদ বই
দ্য সেলফিশ জিন
০০. প্রাককথন ও ভূমিকা
দ্য সেলফিশ জিন (স্বার্থপর জিন)
৪০ তম প্রকাশনা বার্ষিকী সংস্করণ অক্সফোর্ড ল্যান্ডমার্ক সায়েন্স হিসাবে (২০১৬)
মূল : রিচার্ড ডকিন্স / অনুবাদ : কাজী মাহবুব হাসান
The Selfish Gene
40th anniversary edition as Oxford Landmark Science 2016
Richard Dawkins / Translated by Kazi Mahboob Hassan
.
সূচিপত্র
৩০ তম প্রকাশনা বার্ষিকী সংস্করণের ভূমিকা
দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা
প্রথম সংস্করণের প্রাককথন
প্রথম সংস্করণের ভূমিকা
অধ্যায় ১: মানুষরা কেন?
অধ্যায় ২: অনুলিপনকারীরা
অধ্যায় ৩: অমর কুণ্ডলী
অধ্যায় ৪ : জিন মেশিন
অধ্যায় ৫ : আগ্রাসন: স্থিতিশীলতা এবং স্বার্থপর মেশিন
অধ্যায় ৬ : জিম্যানশীপ বা জিন সৌহার্দ
অধ্যায় ৭ : পরিবার পরিকল্পনা
অধ্যায় ৮ : আন্তঃপ্রজন্ম দ্বন্দ্ব
অধ্যায় ৯ : আন্তঃলিঙ্গ দ্বন্দ্ব
অধ্যায় ১০ : তুমি আমার পিঠ চুলকে দাও, আমি তোমার পিঠে চড়বো
অধ্যায় ১১ : মিম : নতুন অনুলিপনকারী
অধ্যায় ১২ : ভালোরা সফল হয়
অধ্যায় ১৩: জিনের দীর্ঘ হাত
৪০ তম প্রকাশনা বার্ষিকী সংস্করণের এপিলগ পর্যালোচনা থেকে বাছাইকৃত কিছু অংশ
লেখক পরিচিতি
.
৩০ তম প্রকাশনা বার্ষিকী সংস্করণের ভূমিকা
ভালো আর মন্দ মিলিয়ে ‘দ্য সেলফিশ জিন’ (The Selfish Gene) বইটির সাথে আমি আমার প্রায় অর্ধেক জীবন কাটিয়েছি, এই উপলদ্ধিটি আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। পরবর্তী বছরগুলোয় যখন আমার আরো সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছিল, প্রকাশকরা সেই বইগুলোর বিজ্ঞাপনের জন্যে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে পাঠিয়েছিলেন। যে বইটাই হোক না কেন, আমার সেই বইটির প্রতি দর্শকরা সন্তোষজনক উদ্দীপনার সাথে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, বিনম্রতার সাথে তারা প্রশংসা করেছেন এবং বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন। তারপর সেই বইটি কেনার জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছেনও, ‘দ্য সেলফিশ জিন’ বইটিতেই আমার স্বাক্ষর নেবার জন্য…। হয়তো খানিকটা বেশী বাড়িয়ে বলে ফেললাম, তাদের কেউ কেউ নতুন বইটিও কেনেন আর বাকীরা, আমার স্ত্রী আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন এই বলে যে, যখনই কেউ কোনো লেখককে নতুন করে আবিষ্কার করেন, তাদের সাধারণত লেখকের প্রকাশিত প্রথম বইটি দিয়ে শুরু করার প্রবণতা আছে। ‘দ্য সেলফিশ জিন’ পড়ার পর, নিশ্চয়ই তারা সবচেয়ে সাম্প্রতিকতম এবং (এর স্নেহান্ধ পিতামাতার কাছে) প্রিয়তম বইটিও খুঁজে নেবেন পড়ার জন্য?
আমার জন্য আরো গুরুত্বপূর্ণ হতো যদি আমি দাবী করতে পারতাম, ‘দ্য সেলফিশ জিন’ সময়ের প্রেক্ষিতে খুব বেশী অচল এবং তার অধিকৃত জায়গাটি হারিয়ে ফেলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ( একটি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে) আমি সেই দাবী করতে পারবো না। খুঁটিনাটি অনেক কিছু বদলেছে এবং বাস্তব তথ্যপুষ্ট উদাহরণগুলোও অনেক বেশী মাত্রায় বেড়েছে। কিন্তু একটি ব্যতিক্রম ছাড়া, যা আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই আলোচনা করবো, এই বইটিতে খুব কম বিষয় আছে যেগুলো ফিরিয়ে নেবার জন্য আমি ব্যস্ত হতে পারি অথবা ক্ষমা চাইতে পারি। প্রয়াত আর্থার কেইন, লিভারপুলে প্রাণিবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং ষাটের দশকে অক্সফোর্ডে আমাকে অনুপ্রাণিত করার মত টিউটরদের একজন, ১৯৭৬ সালে ‘দ্য সেলফিশ জিন’ বইটিকে ‘তরুণ লেখকের বই হিসাবে বর্ণিত করেছিলেন: তিনি খুবই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ. জে. আইয়ারের ‘ল্যাঙ্গুয়েজ টুথ অ্যান্ড লজিক’ বইটি নিয়ে কোনো সমালোচকের এই মন্তব্যটি উদ্ধৃত করেছিলেন। অবশ্য আমি এই তুলনায় আত্মশ্লাঘা অনুভব করেছিলাম, যদিও আমি জানি যে আইয়ার তার প্রথম বইটি থেকে বেশ অনেক অংশই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং কেইনের সেই সুচালো ইঙ্গিতটির আমার দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়া খুব কঠিন ছিল : অর্থাৎ সময় হলে আমিও তার (আহয়ার মত একই ভাবে আমার প্রস্তাবগুলোও প্রত্যাখ্যান করে নেবো।
বইটির শিরোনাম নিয়ে আমার কিছু দ্বিধার বিষয় ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে আমাকে এই আলোচনাটি শুরু করতে দিন। ১৯৭৫ সালে, বন্ধু ডেসমন্ড মরিসের মধ্যস্থতায় আংশিকভাবে সমাপ্ত পাণ্ডুলিপিটি আমি প্রথম দেখিয়েছিলাম লন্ডনের প্রকাশকদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় টম মাশলারকে। জোনাথান কেপ প্রকাশনীর অফিসে তার কক্ষে আমরা আলোচনা করেছিলাম বিষয়টি নিয়ে। তিনি বইটি পছন্দ করেছিলেন তবে এর শিরোনামটিকে নয়। তিনি বলেছিলেন, ‘সেলফিশ’ (স্বার্থপর) শব্দটি নেতিবাচক’ একটি শব্দ, কেন বইটির নাম দিচ্ছি না ‘দি ইমোর্টাল জিন’ (অমর জিন)? ‘ইমোর্টাল’ ইতিবাচক একটি শব্দ এবং ‘দ্য সেলফিশ জিনের’ মত ঠিক একই রকম কৌতূহলোদ্দীপকভাবেই অর্থবহ (আমার ধারণা, আমাদের তখন কারোরই মনে আসেনি নামটির সাথে অস্কার ওয়াইল্ড এর ‘দ্য সেলফিশ জায়ান্ট’ নামের একটি মিলও খুঁজে পাওয়া সম্ভব)। আমি এখন ভাবি মাশলার হয়তো ঠিক কথাই বলেছিলেন। অনেক সমালোচকই, বিশেষ করে উচ্চকণ্ঠ যারা, আমি পরে আবিষ্কার করেছি যারা দর্শনে পাণ্ডিত্যের দাবী করেন, তারা বইটিকে শুধুমাত্র এর শিরোনাম দিয়েই পড়তে আগ্রহী ছিলেন। কোনো সন্দেহ নেই, ‘দ্য টেইল অব বেনজামিন বানি’ অথবা ‘দ্য ডিক্লাইন অ্যান্ড ফল অব রোমান এম্পায়ার নামের বইগুলোর ক্ষেত্রে শুধু শিরোনাম পড়ে বই বিচার করা যথেষ্ট কার্যকর একটি উপায় হতে পারে, কিন্তু আমি খুব সহজেই দেখতে পাচ্ছি যে ‘দ্য সেলফিশ জিন’ শুধুমাত্র শিরোনাম হিসাবে একাকী, পুরো বই, সেই বিশাল পাদটীকাটি ছাড়া, হয়তো এর বিষয়বস্তু সম্বন্ধে অসম্পূর্ণ একটি ধারণা দিতে পারে। বর্তমানে সময়ে হলে, এই সব জটিলতা কাটাতে আমেরিকার প্রকাশকরা যেকোনো ক্ষেত্রেই একটি উপশিরোনাম দাবী করতেন। কোনো একটি শিরোনামকে ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে সেরা উপায় হলো, সেই শিরোনামে ব্যবহৃত শব্দগুলোয় ঠিক কোথায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সেটি খুঁজে বের করা। যদি ‘সেলফিশ’ বা স্বার্থপর শব্দটির উপর জোর দেয়া হয়, আপনি হয়তো ভাববেন বইটির বিষয়বস্তু স্বার্থপরতা, অথচ, আর যদি কিছু নাও হয়ে থাকে, এই বইটি পরার্থবাদীতা বিষয়ে এর আলোচনায় অনেক বেশী সময় নিবেদিত করেছে। শিরোনোমে যে শব্দটিকে সঠিকভাবে গুরুত্ব দেয়া উচিৎ সেটি হচ্ছে ‘জিন’, এবং আমাকে সেই কারণটি ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হোক। ডারউইনবাদের অভ্যন্তরে একটি কেন্দ্রীয় বিতর্ক মূলত সংশ্লিষ্ট সেই ‘একক’কে নিয়ে, যা আসলেই প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হয়: এটি কি ধরনের ‘সত্তা’, প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিণতিতে যা টিকে থাকে অথবা টিকে থাকতে পারেনা। সেই এককটি কম বেশী সংজ্ঞানুযায়ী স্বার্থপর একটি একক হিসাবে রূপান্তরিত হয়। আলট্রইজম বা পার্থবাদ হয়তো অন্য কোনো এক স্তরে বিশেষভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হতে পারে। প্রাকৃতিক নির্বাচন কি প্রজাতিদের মধ্যে বাছ বিচার করে? যদি তাই হয়, তাহলে আমরা প্রত্যাশা করবো একক জীব সদস্যরা তাদের প্রজাতির মঙ্গলের জন্য পরার্থবাদীতার সাথে আচরণ করবে। জনসংখ্যার অতি বৃদ্ধি ঠেকাতে তারা হয়তো তাদের জন্মহার সীমাবদ্ধ করতে পারে, অথবা