“ভাবছি সেই প্রাচীন মিসরীয়রা আর কী কী আবিষ্কার করেছিল যা আজও বের করা যায়নি।”
“হুম! ঐ সমাধি ক্ষেত্রটা থেকে পানি সেচে বের করে ফেলা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা এখন ভালো করে খুঁজে দেখবেন ওখানে কী কী আছে। আমি নিশ্চিত ওখানে দারুণ দারুণ কিছু জিনিস পাওয়া যাবে।”
রেনাটা আরো একচমক শ্যাম্পেন মুখে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। তারপর কার্টের গায়ে হেলান দিয়ে বলল, “সাহারিয়ানগুলোর কী হবে? ওগুলো ওখানে গেল কীভাবে তা কী বের করা গিয়েছে?”
কার্ট মাথা ঝাঁকালে আমরা যে সৈন্যটাকে পেয়েছিলাম সে আর আরও ছয়জন এগুলো এক অমাবস্যার রাতে ওগুলো চালিয়ে নিয়ে যায়। ওদের উদ্দেশ্য ছিল রোমেল আর অক্ষ শক্তির সৈন্যরা যখন এদিকে আসবে তখন পিছন থেকে অতর্কিত আক্রমণ করা। কিন্তু রোমেল কায়রো আসার আগেই এল আলামিন থেকে ফিরে চলে যান।
“তাই ওরা খামাখাই অপেক্ষা করতে থাকে।”
কার্ট মাথা ঝাঁকালো, “এজন্যেই সম্ভবত তারা বেঁচে গিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত। গাড়ির ড্রাইভারেরা ইতালিয়ান সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল কিন্তু তাদের সাথে যারা ছিল তারা সবাই ছিল কায়রোতে বসবাস রত ইতালিয় অভিবাসী। ঐ সময়ে কায়রোতে প্রচুর ইতালিয়ান বাস করতো। এমনকি ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের স্ত্রীও ছিলেন ইতালিয়। এজন্যেই চিঠিটায় বলা হয়েছিলো যে তারা ধরা পড়লে গুপ্তচর সন্দেহে গুলি করে মারা হবে।” বলল কার্ট।
“আনা-মেরির কোনো খোঁজ পাওয়া গিয়েছে? ওরা নিশ্চয়ই কী হয়েছিল তা জানতে চাইবে?” জিজ্ঞেস করল রেনাটা।
কার্ট ওর শ্যাম্পেনের গ্লাসটা শেষ করে টেবিলে নামিয়ে রাখলো। শান্ত পানিতে নৌকাটাও স্থির দাঁড়িয়ে আছে। “আপনার দেশের ইতিহাস বিদরা ঐ মহিলাসহ বাকি সব সৈন্যেরই আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ করছেন।”
রেনাটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “আশা করছি তাকে খুঁজে পাবে। ঐ সৈন্যটা নিজের লোকদের বাড়ি পাঠিয়ে ঠিক কাজই করেছিলেন। মুসোলিনির মতো একজন মানুষের জন্য জীবন দেয়ার কোনো মানে নেই।”
“আমারও একই মত। কারণ ওরা যদি যুদ্ধ করতে বের হতো তাহলে ব্রিটিশদের হাতে একেবারে কচু কাটা হয়ে যেতো।” বলল কার্ট।
রেনাটা কার্টের বাহুতে একটা টোকা দিয়ে বলল, “তা এখন কী করবেন? আমরা কি সারা জীবন এখানেই থাকবো, শ্যাম্পেন খাবো আর সাঁতার কেটে এসে সূর্য স্নান করতে থাকবো?”
কার্ট লাল হয়ে আসা সমুদ্রটার দিকে তাকাল, “না করার কোনো কারণ দেখতে পাচ্ছি না আমি।”
হঠাৎ ওদের পাশেই জাভালা পানির ওপর ভেসে উঠে পানিতে ডুব দেয়ার যন্ত্রপাতি নৌকার ওপর ছুঁড়ে দিল।
“যত প্রেম সব আজই করে নাও হে। কাল কিন্তু তোমাকেই ডুব দিতে হবে। ফিনিশিয়ান যে যুদ্ধ জাহাজটার ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছ সেটা উদ্ধার করা কোনো মানুষের কাজ না।”
“কোনো সমস্যা নেই। তবে শর্ত একটাই। আমার ওয়াইন সেলারের ধারে কাছেও যেতে পারবে না তুমি।” জবাব দিল কার্ট।
“অবশ্যই। তুমি এমন জনের সাথে কথা বলছো যে কোনোদিন ওসব ফোঁস করা পানি ছুঁয়েও দেখেনি।” বলল জো।
“তাহলে আপনি কী খান?” জিজ্ঞেস করল রেনাটা।
জাভালা দাঁত বের করে হাসলো, “প্রিয়তম–আপনি একজন মর্দ লোকের সাথে কথা বলছেন–একজন সত্যিকারের পুরুষ মানুষ—যে কি-না সরাসরি টাকিলা খায় সাথে একটু লবণ আর লেবু হয়তো নেয়, আর খায় সিগার।”