• প্রোফেজ পদ্ধতি : ভাইরাস দু’ভাবে পুনর্জাত হতে পারে। প্রথমটা হল লিকটিক চক্রের মাধ্যমে। যেখানে ভাইরাস আশ্রয়দানকারী কোষ খুঁজে নিয়ে পুনর্জাত হবার জন্য সেই কোষেরই সেলুলার মেশিনারি ব্যবহার করে। ফলে ভাইরাসে পূর্ণ হয়ে কোষ বিস্ফোরিত হয়। কোষ মারা যাওয়ার ফলে মুক্ত ভাইরাস আরো অসংখ্য কোষকে সংক্রমণ করে। দ্বিতীয়টা হচ্ছে লিসোড়েনিক সাইকেল। ভাইরাস একটা প্রোফেজ হওয়ায় এর জিনগত উপাদান আশ্রয়দানকারী জিনের মাঝে মিশে যায়। ভাইরাস এরপর এই কোষের মাঝে লুকিয়ে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না লিকটিক স্টেজে পুনর্জাত হয়ে উঠে। প্রোফেজ পদ্ধতির মাধ্যমে এসব গুপ্ত ভাইরাস লিকটিক স্টেজে প্রবেশ করে পুনর্জাত হয়। তবে এর জন্য উদ্দীপক প্রয়োজন। ব্যাকটেরিয়ার ক্রোমোজোম থেকে প্রোফেজকে অপসারণ করবে।
• টেলোমারেজ আর বৃদ্ধ হওয়া : এই বইয়ে আমি যে প্রোটিনের কথা উল্লেখ করেছি সে টেলোমারেজ হল একটা নোবেল প্রাইজের বিষয়। কোষসমূহ যাতে বিভক্তি প্রক্রিয়া থামিয়ে না দেয় কিংবা মৃত্যবরণ না করে তাতে সাহায্য করে টেলোমারেজ। টেলেমারেজের উপকারী দিক নিয়ে বিজ্ঞানীদের মাঝেও জোর বিতর্ক আছে। এর উৎস হল টেলোমারেজের উপস্থিতি সত্ত্বেও ক্যান্সারের উদয়ের সম্ভাবনা। আমরা যখন মাতৃগর্ভে ঐণ হিসেবে ছিলাম, তখন থেকেই সক্রিয় আছে এই টেলোমারেজ। কেননা জ্বণের বৃদ্ধির জন্যও টেলোমারেজ দরকার। তারপর যেদিন জন্মগ্রহণ করি সেদিন থেকেই টেলোমারেজ উৎপাদনের জন্য দায়ী জিন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে টেলোমারেজ কমতে থাকে। আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই। তবে কোষগুলো যেন অনুরূপ তৈরি করতে থাকে তা প্রকৃতিই নিশ্চিত করে দেয়, যা হল ক্যান্সারের সংজ্ঞা। তাই টেলোমারেজ হল দো ধারী তলোয়ার। বৃদ্ধ হবার প্রক্রিয়া ধীর করলেও ক্যান্সারে মৃত্যু ত্বরান্বিত করে।
তারপরেও জিন আর প্যাথোজিন নিয়ে আমাদের জ্ঞান এখনো সীমিত। কোষের কর্মপ্রণালি, জিন কিভাবে কাজ করে, প্যাথোজিন কিভাবে আশ্রয়দাতাকে সংক্রামিত করে (মানুষ কিংবা প্রাণী) সে সম্পর্কে প্রতিদিনই কোনো না কোনো কিছু আবিষ্কৃত হচ্ছে। এই বইয়ে ব্যবহৃত ঘটনা ও তথ্য মাত্র গত দুই থেকে তিন বছর আগেকার আবিষ্কার।
• শুক্রের বিস্ময়কর ঘটনা : এই বইয়ের ষষ্ঠ অধ্যায়ে বর্ণিত ঘটনা আসলেই এক বিস্ময়। একই ধরনের আশ্চর্য আরেক ঘটনা ঘটেছিল ওয়েলস’র ব্রায়ান সিলি দু’নামক স্থানে; যেখানে ঠিক বইয়ের বর্ণনার মত করেই একটা প্রবেশপথ উন্মোচন করে দিয়েছে শুক্র। ইউরিয়েল’স মেশিন নামক বইয়ে এ বিষয়ে গবেষণা করে আদ্যোপান্ত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন ক্রিস্টোফার নাইট আর রবার্ট লোমাস। যেহেতু এটা কল্প-কাহিনি, হিন্দুকুশে এ ধরনের ঘটনা না শুনলেও ঘটনাটা একেবারে মিথ্যে নয়। লাইটবক্সের ধারণাও নিউগ্রাঞ্জ, আয়ারল্যান্ড থেকে ধার করা হয়েছে, যেখানে সূর্য (শুক্র নয় কিন্ত) আলো ফেলে পাথরের দেয়ালের মাঝেকার প্রবেশপথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বইয়ে এর উল্লেখও আছে।
• ইতিহাসের পাতা থেকে : বইয়ে অলিম্পিয়াস, ইউমেনিস আর ক্যালিসথিনস সম্পর্কে অনেক কিছু বলা হলেও অন্যান্য ঐতিহাসিক চরিত্রেরও উল্লেখ আছে। তাই ভাবলাম তাদের সম্পর্কে আরো কিছু বলা যাক।
• পার্দিক্কাস : আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পরে বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত পুরো সাম্রাজ্যে রাজপ্রতিভূ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু আলেকজান্ডারের জেনারেলদের ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রধান মিত্র ছিল ইউমেনিস।
• অ্যান্টিপ্যাটার : উনাকে ফিলিপ আর আলেকজান্ডার দু’জনেই অত্যন্ত বিশ্বাস করতেন। আলেকজান্ডারের এশিয়া অভিযানের সময় রাজার হয়ে গ্রিস আর মেসিডোনিয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন।
• পলিপার্সন : অ্যান্টিপ্যাটারের সাথে মিত্রতা করে তার মৃত্যুর পর গ্রিস আর মেসিডোনিয়ার রাজপ্রতিভূ হয়ে উঠেন। পরবর্তীতে ক্যাসান্ডার তাঁকে পরাজিত করে সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ভার নিয়ে নেয়।
• ক্যাসান্ডার : অ্যান্টিপ্যাটারের পুত্র।
• টলেমি : আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর মিশরের শাসক হিসেবে নিযুক্ত হন। পার্দিক্কাস আর অ্যান্টিগোনাসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মদদ দিয়েছেন। তারপর ফারাও পদবী নিয়ে টলেমি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে।
• অ্যান্টিগেনাস : প্রকৃতপক্ষে ফিরিজিয়ার গভর্নর ছিলেন। পার্দিষ্কাসের সাথেই পতন ঘটে আর সিরিয়া আর পারস্যের জন্য ইউমেনিসের সাথে যুদ্ধ করেন। ইউমেনিসের হাতে দু’বার পরাজিত হবার পর অত্যন্ত ধূর্ততার সাথে তাকে গ্রেফতার ও মেরে ফেলা হয়।
• ক্লিটাস : একজন বাস্তব চরিত্র। ক্রিমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিজাবেথ কানির লেখা “দ্য ডেথ অব ক্লিটাস” আর পুটার্কের “লাইফ অব আলেকজান্ডারে” বর্ণিত সত্য ঘটনা অবলম্বনেই লেখা হয়েছে।
আমার পঠিত সমস্ত বই-পত্র, আর্টিকেল, ভিডিও আর ওয়েব সাইটে ঢু মারা ছাড়াই যদি আরো বিশদভাবে জানতে চান তাহলে দুই ধরনের সূত্র অলিম্পিয়াস ও আলেকজান্ডার সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। একই সাথে আলেকজান্ডারের মৃত্যু পরবর্তী যুদ্ধসমূহে তার জেনারেলদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন ভিজিট করুন :