আলম আল-মিথাল: নিখাদ ইমেজের জগৎ। মানব-মনের একটা জগৎ যা মুসলিম অতীন্দ্রিয়বাদীদের দিব্যদর্শনের অভিজ্ঞতার উৎস এবং সৃজনশীল কল্পনার আধার।
আলিম: উলেমা দেখুন।
আমির: নেতা।
আনসার: ৬২২-এ মক্কা ত্যাগে বাধ্য হওয়া পয়গম্বর(স:) ও প্রথম মুসলিমদের আশ্রয়দানের মাধ্যমে “সাহায্যকারী”তে পরিণত মদীনার মুসলিমগণ। তারা প্রথম মুসলিম সমাজ নির্মাণের প্রকল্পে সহায়তা দিয়েছে I
বাতিন: অস্তিত্ব ও ঐশীগ্রন্থের “গোপন” মাত্রা, যা ইন্দ্ৰীয় বা যৌক্তিক চিন্তায় উপলব্ধি করা যায় না, বরং অতীন্দ্রিয়বাদের ধ্যানী স্বজ্ঞামূলক অনুশীলনে অনুভব করা যায়।
দার আল-ইসলাম: ইসলামের ঘর। মুসলিম শাসনাধীন এলাকা।
জিকর: চৈতন্যের বিকল্প অবস্থা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মন্ত্রের মত ঈশ্বরের নামসমূহ উচ্চারণের মাধ্যমে ঈশ্বরের “স্মরণ”। সুফি ভক্তি।
জিম্মি: ইসলামী সাম্রাজ্যে “নিরাপত্তাপ্রাপ্ত প্রজা” (“Protected Subject”) যারা কুরানের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ধর্মের অনুসারী। আহল আল-কিতাব, ইহুদি, ক্রিশ্চান, যারোস্ট্রিয়, হিন্দু, বুদ্ধ এবং শিখরা এর অন্তর্ভুক্ত। জিম্মিদের পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হত এবং তারা তাদের নিজস্ব সামাজিক রীতি অনুযায়ী সমাজ গঠন করতে পারত, তবে ইসলামের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে হত তাদের। ফাকিহ্: জুরিস্ট। ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ।
ফাতওয়াহ্: ইসলামী আইন বিষয়ে ধর্মীয় পণ্ডিতের আনুষ্ঠানিক আইনি মতবাদ বা সিদ্ধান্ত।
ফিকহ্: ইসলামী জুরেসপ্রুডেন্স। পবিত্র মুসলিম আইনের পূর্ণ পাঠ ও প্রয়োগ। ফিৎনাহ্: প্রলোভন। বিচার। নির্দিষ্টভাবে, শব্দটি রাশিদুন ও প্রাথমিক উমাঈয়াহ্ আমলে মুসলিম সমাজকে বিভক্তকারী গৃহযুদ্ধ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ৷ ফুতুওয়াহ্: দ্বাদশ শতাব্দীর পরে গঠিত শহুরে তরুণদের একটা দল, যারা শিক্ষাগ্রহণ আর আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সুফি আদর্শ ও আচরণ প্রবলভাবে প্রভাবিত নেতার প্রতি শপথগ্রহণ পূর্বক সমর্থন প্রদান করত।
ঘায়ু: মূলত “হামলা”- প্রাক-ইসলামী যুগে আরবরা লুণ্ঠিত মালের উদ্দেশ্যে পরিচালনা করত। পরবর্তীকালে একজন গাযি যোদ্ধা ইসলামের জন্যে পবিত্র যুদ্ধের দ্বারা প্রায়ই দার আল-ইসলামের সীমান্তে সেনাদলের উপস্থিতি বোঝাতে শব্দটি প্রয়োগ করা হয়।
ঘুলাট (বিশেষণ, ঘুলুউ): চরম অনুমান। প্রাথমিক শিয়া মুসলিমদের অনুসৃত, যা মতবাদের কিছু কিছু বিষয়ে বাড়তি জোর দিয়েছে।
হাদিস: আহাদিস দেখুন।
হজ্জ: মক্কায় তীর্থযাত্রা।
হিজরাহ্: পয়গম্বর মুহাম্মদ(স:) ও প্রথম মুসলিমদের সমাজের ৬২২-এ মক্কা হতে মদীনায় “অভিবাসন”।
ইজমাহ্: আইনগত সিদ্ধান্তের বৈধতাদানকারী মুসলিম জনগোষ্ঠীর “ঐকমত্য”।
ইজতিহাদ: সমসাময়িক পরিস্থিতিতে শরিয়াহ্ প্রয়োগের লক্ষ্যে কোনও জুরিস্ট কর্তৃক প্রযুক্ত “স্বাধীন যুক্তি”। চতুর্দশ শতাব্দীতে সুন্নী মুসলিমরা ঘোষণা দেয় যে “ইজতিহাদের দ্বার” রুদ্ধ হয়ে গেছে এবং পণ্ডিতদের অবশ্যই যুক্তিভিত্তিক অন্তর্দৃষ্টির বদলে অতীত কর্তৃপক্ষের আইনগত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করতে হবে ৷
ইলম্: কোনটা ন্যায় এবং মুসলিমদের কেমন আচরণ করা উচিত সে জ্ঞান।
ইমাম: মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতা। শিয়া মুসলিমরা কন্যা ফাতিমাহ্ এবং তাঁর স্বামী আলী ইবন আবি তালিবের মাধ্যমে পয়গম্বরের উত্তরপুরুষ বোঝাতে এটা ব্যবহার করে, শিয়ারা তাদের মুসলিম সমাজের প্রকৃত নেতা বলে মনে করে। ইরফান: মুসলিম অতীন্দ্রিয়বাদী ঐতিহ্য।
ইসলাম: ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি “আত্মসমৰ্পণ”।
জাহিলিয়াহ্ (বিশেষণ জাহিলি): অজ্ঞতার কাল। মূলত: আরবের প্রাক-ইসলামী যুগ বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমানে মুসলিম মৌলবাদীরা প্রায়শ এমনকি মোটামুটি মুসলিম সমাজসহ যেকোনও সমাজ বোঝাতে প্রয়োগ করে যা, তাদের দৃষ্টিতে, ঈশ্বরের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের কাছে নতি স্বীকারে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
জিহাদ: সংগ্রাম, প্রয়াস। কুরানে ব্যবহৃত শব্দটির প্রাথমিক অর্থ, যা ইসলামী সমাজ বা ব্যক্তি মুসলিমের অন্তর্গত বাজে অভ্যাস সংস্কারের অভ্যন্তরীণ প্রয়াস বোঝায়। শব্দটি ধর্মের জন্যে সূচিত যুদ্ধের ক্ষেত্রেও বিষেশভাবে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
জিযিয়াহ্: পোল কর, সামরিক নিরাপত্তার বিনিময়ে জিম্মিদের দিতে হত। কাবাহ্: পবিত্র নগরী মক্কাস্থ চৌকো আকৃতির উপাসনাগৃহ যা মুহাম্মদ(সঃ) ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গ করেন এবং ইসলামী বিশ্বের পবিত্রতম স্থানে পরিণত করেন। কালাম: ইসলামী অনুমানভিত্তিক ধর্মতাত্ত্বিক প্রশ্নমালার আলোচনা। মুসলিম স্কলাস্টিক থিওলজি বর্ণনায়ও শব্দটি প্রায়শ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
খানকাহ্: ভবন, যেখানে জিকর এর মত সুফি কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সুফি শিক্ষক বসবাস করেন এবং অনুসারীদের নির্দেশনা দেন।
মাযহাব (“নির্বাচিত পথ”): ইসলামী জুরিসপ্রুডেন্সের চারটি বৈধ মতবাদের একটি। মাদ্রাসাহ্: মুসলিমদের উচ্চ শিক্ষার কলেজ, যেখানে উলেমাগণ ফিকহ্ বা কালামের মত শাস্ত্র পাঠ করে থাকেন।
মাওয়ালি (ক্লায়েন্ট): প্রাথমিক অনারব ইসলাম গ্রহণকারীদেরকে দেয়া নাম, যাদের মুসলিম হওয়ার পর যেকোনও গোত্রের নামমাত্র ক্লায়েন্টে পরিণত হতে হয়েছিল।