(দ্বিতীয় সংস্করণ হতে গৃহীত-অনুবাদক)
ইসলামের ইতিহাসে প্রধান ব্যক্তিবর্গ
আব্বাস (প্রথম), শাহ (১৫৮৮-১৬২৯): ইরানে সাফাভীয় সাম্রাজ্যের স্বর্ণসময়ের অধিপতি, ইসফাহানে এক দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদ নির্মাণ করেন এবং ইরানিদের দ্বাদশবাদী অর্থোডক্সি শিক্ষা দেয়ার জন্যে বিদেশ থেকে শিয়া উলেমাদের আমদানি করেন।
আব্দ আল-মালিক: উমাঈয়াহ্ খলিফাহ্ (৬৮৫-৭০৫), এক গৃহযুদ্ধ অবসানের পর উমাঈয়াহ্ ক্ষমতা পুনর্বহাল করেন; ৬৯১-তে তাঁর উদ্যোগে ডোম অভ দ্য রক-এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
আব্দ আল-ওয়াহহাব, মুহাম্মদ ইবন (১৭০৩-৯২): একজন সুন্নী সংস্কারক যিনি ইসলামের মৌল বিষয়ে ফিরে যাবার লক্ষ্যে প্রবল প্রয়াস পেয়েছিলেন। বর্তমানে সৌদি আরব ইসলামের ওয়াহহাবিবাদ ধরণ অনুসৃত হচ্ছে।
আব্দু, মুহাম্মদ (১৮৪৯-১৯০৫): মুসলিমদের নতুন পাশ্চাত্য আদর্শ অনুধাবনে সক্ষম করে তোলা এবং দেশকে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে ইসলামী প্রতিষ্ঠানসমূহের আধুনিকায়নের প্রয়াস পেয়েছিলেন এই মিশরীয় সংস্কারক!
আবদুলফাযল আল্লামি (১৫৪১-১৬০২): সুফি ঐতিহাসিক এবং মোঘুল সম্রাট আকবরের জীবনীকার।
আবদুলহামিদ: অটোমান সুলতান (১৮৩৯-৬১): একচ্ছত্র শাসন পরিবর্তনকারী
গুলহান (Gulhane) ডিক্রি জারী করেন যার ফলে সরকার অটোমান প্রজাদের সঙ্গে চুক্তির সম্পর্কে সম্পর্কিত হয়ে পড়ে।
আবু বকর: প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্যতম; পয়গম্বর মুহাম্মদের(স:) একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মুহাম্মদের(সঃ) পরলোকগমনের পর তিনি প্রথম খলিফাহ্ হন (৬৩২-৩৪)।
আবু আল-হাকাম (কুরানে আবু জাল, মিথ্যার পিতা নামেও আখ্যায়িত): মক্কায় মুহাম্মদের(স:) বিরোধিতাকারীদের নেতৃত্ব দেন তিনি।
আবু হানিফাহ্ (৬৯৯-৭৬৭): ফিকহ’র অন্যতম পুরোধা, জুরেসপ্রুডেন্সের হানাফি মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা।
আবু আল-কাসিম মুহাম্মদ: গোপন ইমাম নামেও পরিচিত। তিনি ছিলেন শিয়াদের দ্বাদশ ইমাম, যিনি প্রাণরক্ষার জন্যে ৮৭৪-এ আত্মগোপন করেন বলে বর্ণিত আছে; ৯৩৪-এ তার “ঊর্ধ্বারোহণে”র (Occaltation) কথা ঘোষিত হয়: বলা হয়, ঈশ্বর অলৌকিকভাবে ইমামকে আড়াল করেছেন বলে তাঁর পক্ষে আর শিয়াদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব নয়। শেষ বিচারের অল্পদিন আগে মাহদি হিসাবে ঈশ্বরের শত্রুদের ধ্বংস করে ন্যায়বিচার ও শান্তির এক স্বর্ণযুগের সূচনা ঘটাতে ফিরে আসবেন তিনি। আবু সুফিয়ান আবু আল-হাকামের মৃত্যুর পর পয়গম্বর মুহাম্মদের (স: ) বিরোধিতাকারীদের নেতৃত্ব দেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন উপলব্ধি করেন যে মুহাম্মদ (স:) অপ্রতিরোধ্য, ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কার উমাঈয়াহ্ পরিবারের সদস্য ছিলেন তিনি এবং তাঁর পুত্র মুয়াবিয়াহ্ প্রথম উমাঈয়াহ্ খলিফা হন। আমাদ ইবন হানবাল (৭৮০-৮৩৩): হাদিস সংগ্রাহক, আইনবিদ এবং আহল আল-হাদিসের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। তাঁর চেতনা ইসলামী জুরেসপ্রুডেন্সের হানবালি মতবাদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আমাদ ইবন ইদরিস (১৭৮০-১৮৩৬): মরোক্কো, উত্তর আফ্রিকা ও ইয়েমেনে সক্রিয় নব্য সুফি সংস্কারক, যিনি উলেমাদের পাশ কাটিয়ে ইসলামের অনুরণন সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছানোর প্রয়াস পেয়েছিলেন।
আমাদ খান, স্যার সাইয়ীদ (১৮১৭-৯৮): একজন ভারতীয় সংস্কারক যিনি পাশ্চাত্যের উদারপন্থার সঙ্গে ইসলামের সমন্বয়ের প্রয়াস পেয়েছিলেন। তিনি ইউরোপীয়দের সঙ্গে সহযোগিতা ও তাদের প্রতিষ্ঠানসমূহ গ্রহণ করার জন্যে ভারতীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আমাদ সিরহিন্দি (মৃত্যু: ১৬২৫): মোঘল সম্রাট আকবরের বহুত্ব মতবাদের বিরোধিতাকারী সুফি সংস্কারক।
আয়েশা: পয়গম্বর মুহাম্মদের(স:) প্রিয়তমা স্ত্রী, যাঁর হাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আবু বকরের কন্যা তিনি এবং প্রথম ফিৎনা সময় মদীনার আলী বিন আবি তালিব বিরোধীদের নেতৃত্ব দেন।
আকবর: ভারতের মোঘল সম্রাট (১৫৬০-১৬০৫)। হিন্দু জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতার নীতির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি, তাঁর আমলে মোঘল সাম্রাজ্য ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখর প্রত্যক্ষ করে।
আলী ইবন আবি তালিব: পয়গম্বর মুহাম্মদের(স:) চাচাত ভাই, রক্ষী, এবং মেয়ে- জামাই; তাঁর নিকটতম পুরুষ আত্মীয়। ৬৫৬-তে চতুর্থ খলিফাহ্ হন তিনি কিন্তু ৬৬১-তে জনৈক খারেজি চরমপন্থীর হাতে নিহত হন। শিয়ারা বিশ্বাস করে পয়গম্বরের উত্তরাধিকারী হওয়া উচিত ছিল তাঁরই এবং তারা তাঁকে ইসলামী সমাজের প্রথম ইমাম হিসাবে শ্রদ্ধা করে। ইরাকের নাজাফে তাঁর সমাধি রয়েছে যা শিয়া তীর্থযাত্রীদের অন্যতম প্রধান স্থান।
আলী আল-হাদি: দশম শিয়া ইমাম। ৮৪৮-এ খলিফাহ্ আল-মুতাওয়াক্কিল কর্তৃক সামারায় তলব পান এবং সেখানে গৃহবন্দী হন। ৮৬৮-তে আসকারি দুর্গে পরলোকগমন করেন তিনি।
আলী আল-রিদা: অষ্টম শিয়া ইমাম। খলিফাহ্ আল-মামুন তাঁর সাম্রাজ্যের অসন্তুষ্ট শিয়াদের সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে ৮১৮-তে তাঁকে উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন, কিন্তু সেটা ছিল অজনপ্রিয় পদক্ষেপ এবং আল-রিদা পরবর্তী বছরেই মারা যান, সম্ভবত: খুন।
আলী যায়েন আল-আবিদিন (মৃত্যু:৭১৪): চতুর্থ শিয়া ইমাম, অতীন্দ্রিয়বাদী, যিনি মদীনায় অবসর জীবনযাপন করেছেন এবং সক্রিয় রাজনীতি হতে বিরত ছিলেন।