১৯৭৭-৮৮ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জিয়া আল-হক পাকিস্তানে এক সফল অভ্যূত্থানে নেতৃত্ব দেন এবং অধিকতর ইসলামী সরকার গঠন করেন, অবশ্য প্রকৃত রাজনীতি থেকে ধর্মকে পৃথক করেন।
১৯৭৮-৭৯ ইরানি বিপ্লব। আয়াতোল্লাহ্ খোমিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ ফাকিহ্ হন (১৯৭৯-৮৯)।
১৯৭৯ পাকিস্তানী মৌলবাদী চিন্তাবিদ আবু আলা মউদুদীর পরলোকগমন। কয়েক শত সুন্নী মৌলবাদী সৌদি আরবে মক্কার কাবাহ্ দখল করে এবং তাদের নেতাকে মাহ্দী ঘোষণা করে; রাষ্ট্র বিদ্রোহ দমন করে।
১৯৭৯-৮১ তেহরানে মার্কিন দূতাবাসে আমেরিকান জিম্মিদের বন্দী করা হয়। ১৯৮১ মুসলিম চরমপন্থীদের হাতে প্রেসিডেন্ট আনোয়ার আল-সাদাত নিহত। এরা মিশরীয় জনগণের প্রতি সাদাঁতের অন্যায় আচরণ ও ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সম্পাদনের নিন্দা করেছে।
১৯৮৭ ইনতিফাদাহ্, পশ্চিম তীর ও গাযা স্ট্রিপের ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্যালেস্টাইনি গণঅভ্যূত্থান। HAMAS, মুজামাহর একটি উপদল এবার PLO-র পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরোধিতা শুরু করে।
১৯৮৯ দ্য স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাসে পয়গম্বর মুহাম্মদের (স:) ব্লাসফেমাস বিবরণ তুলে ধরার অভিযোগে আয়াতোল্লাহ্ খোমিনি ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদীর বিরুদ্ধে একটি ফাতওয়াহ্ জারি করেন। এক মাস পরে ইসলামী কনফারেন্সের উনপঞ্চাশটি সদস্য দেশের মধ্যে আটচল্লিশটি দেশ এই ফাতওয়াহকে অনৈসলামিক বলে নিন্দা জানায়।
আয়াতোল্লাহ খোমিনির পরলোকগমননের পর আয়াতোল্লাহ খামেনি ইরানের সর্বোচ্চ ফাকিহ হন এবং উদারপন্থী হোজ্জাত ওল-ইসলাম রাফসানজানি হন প্রেসিডেন্ট!
১৯৯০ আলজেরিয়ার স্থানীয় নির্বাচনে সেক্যুলারিস্ট FLN-এর বিরুদ্ধে ইসলামীক স্যালভেশন ফ্রন্ট (FIS) বিপুল বিজয় অর্জন করে ৷ ১৯৯২ সালের সাধারণ নির্বাচনেও ফ্রন্ট বিজয়ী হবে বলে মনে হয়।
একজন সেক্যুলারিস্ট নেতা প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেইন, কুয়েতে আক্রমণ চালান: প্রতিক্রিয়া স্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এর পশ্চিমা ও মধ্যপ্রাচ্যীয় মিত্রদেশগুলো ইরাকের বিরুদ্ধে অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম (Oparation Desert Storm) পরিচালনা করে (১৯৯১)।
১৯৯২ আলজেরিয়ায় FIS-এর ক্ষমতারোহণ ঠেকানোর জন্য সেনাবাহিনী এক অভ্যূত্থান ঘটায় এবং আন্দোলন দমন করে। ফলে অধিকতর চরমপন্থী সদস্যরা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ৷
অযোধ্যায় হিন্দু BJP-র সদস্যরা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে।
১৯৯২-৯৯ সারবিয়ান ও ক্রোয়েশিয়ান জাতীয়তাবাদীরা কৌশলে বসনিয়া ও কসোভোর মুসলিম অধিবাসীদের হত্যা ও দেশত্যাগে বাধ্য করে।
১৯৯৩ ইসরায়েল ও প্যালেস্টাইনের মধ্যে অসলো চুক্তি স্বাক্ষর।
১৯৯৪ জনৈক ইহুদি চরমপন্থী কর্তৃক হেবরন মসজিদে উনত্রিশজন মুসলিমের হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে HAMAS-এর আত্মঘাতী বোমাবাজরা ইসরায়েলে ইহুদি নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালায়।
অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের কারণে জনৈক ইহুদি চরমপন্থীর হাতে প্রেসিডেন্ট ইটযহাক রাবিনের মৃত্যু।
আফগানিস্তানে তালিবান মৌলবাদীদের ক্ষমতারোহণ।
১৯৯৭ এক ভূমিধ্বস বিজয়ের ভেতর দিয়ে উদারপন্থী ধর্মনেতা হোজ্জাত ওল-ইসলাম সাইয়ীদ খাতামি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
১৯৯৮ সালমান রুশদীর বিরুদ্ধে খোমিনির দেয়া ফতওয়াহর সঙ্গে তার সরকারের সম্পর্ক নেই বলে প্রেসিডেন্ট খাতামির ঘোষণা।
২০০১ সেপ্টেম্বর ১১। ওসামা বিন লাদেনের গ্রুপ আল-ক্কায়েদার সদস্য উনিশজন মুসলিম চরমপন্থী আমেরিকান যাত্রাবাহী বিমান হাইজ্যাক করে এবং ওঅর্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনের ওপর হামলে পড়ে।
অক্টোবর ৭। প্রতিশোধ স্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তালিবান ও আল-কায়েদার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সূচনা করে।
২. বিকাশ
২. বিকাশ
উমাঈয়াহ্ এবং দ্বিতীয় ফিৎনাহ্
খলিফাহ্ মুয়াবিয়াহ্ (৬৬১-৮০) সাম্রাজ্যের ঐক্য পূন:প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন। ফিৎনাহ্ প্রত্যক্ষ করে আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিল মুসলিমরা, তারা উপলব্ধি করেছিল যে স্বজাতি আরবদের থেকে বিচ্ছিন্ন এবং সম্ভাব্য বৈরী প্রজাদের ঘেরাওয়ের মধ্যে গ্যারিসন শহরে তাদের অবস্থান কত নাজুক। এরকম ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ মেনে নিতে পারেনি তারা। শক্তিশালী সরকার চেয়েছিল তারা এবং দক্ষ শাসক মুয়াবিয়াহ্ এমন একটি সরকার দেয়ার যোগ্য ছিলেন। তিনি আবার আরব মুসলিমদের প্রজাসাধারণ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার উমরের অনুসৃত ব্যবস্থা চালু করলেন এবং যদিও কিছু সংখ্যক মুসলিম তখনও অধিকৃত এলাকাসমূহে জমিদারি প্রতিষ্ঠা করার দাবীতে সোচ্চার ছিল, মুয়াবিয়াহ্ তার ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখেন। তিনি ধর্মান্তরকরণও নিরুৎসাহিত করেছেন এবং একটা দক্ষ প্রশাসন যন্ত্র গড়ে তোলেন। এভাবে ইসলাম বিজয় অর্জনকারী আরব অভিজাতদের ধর্ম রয়ে যায়। প্রথম দিকে আরবরা, যাদের রাজকীয় সরকার পরিচালনার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না, অমুসলিমদের দক্ষতার ওপর নির্ভর করেছিল, যারা অতীতের বাইযানটাইন ও পারসিয়ান শাসকদের সেবা দিয়েছে; কিন্তু আস্তে আস্তে আরবরা উচ্চ পদসমূহ থেকে জিম্মিদের বিতাড়ন শুরু করে। পরবর্তী শতাব্দীকালে উমাঈয়াহ্ খলিফারা ক্রমশ: মুসলিম বাহিনীর অধিকৃত বিসদৃশ এলাকাগুলোকে একটি সাধারণ আদর্শের ভিত্তিতে একক সাম্রাজ্যে পরিণত করেন। এক অসাধারণ সাফল্য ছিল এটা; কিন্তু রাজদরবার স্বভাবতই এক উন্নত সংস্কৃতি আর বিলাসবহুলে জীবন ধারা গড়ে তুলতে শুরু করে এবং বহু দিক থেকেই অন্য যেকোনও শাসক শ্রেণী হতে আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ে তা।