১৯১৯-২১ টার্কির স্বাধীনতা যুদ্ধ। আতাতুর্ক ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে ঠেকিয়ে স্বাধীন তুর্কী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন। তিনি চরম সেক্যুলারকরণ ও আধুনিকীকরণের নীতিমালা গ্রহণ করেন (১৯২৪-২৮)।
১৯২০ সাইকস-পিকোট চুক্তি প্রকাশ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের প্রেক্ষাপটে সাম্রাজ্যের প্রদেশগুলো ব্রিটিশ ও ফ্রেঞ্চদের মাঝে ভাগাভাগি হয়, যারা ম্যান্ডেট ও প্রটেক্টরেটসমূহ প্রতিষ্ঠা করে, যদিও যুদ্ধের পর আরবদের স্বাধীনতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।
১৯২০-২২ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জনগণকে দুটি অসহযোগ আন্দোলনে সংগঠিত করেন গান্ধী।
১৯২১ ইরানে রেযা খান একটি সফল ক্যু দে’তায় নেতৃত্ব দেন এবং পালভী রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। ইরানে এক নিষ্ঠুর আধুনিকীকরণ ও সেক্যুলারকরণের নীতি গ্রহণ করেন তিনি।
১৯২২ মিশর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা লাভ করে, কিন্তু প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি এবং সুদানের নিয়ন্ত্রণ ব্রিটিশদের হাতে রয়ে যায়। ১৯২৩ ও ১৯৩০ এর মাঝে জনপ্রিয় ওয়ফদ্ পার্টি তিনটি নির্বাচনে ব্যাপক জয়লাভ করে, কিন্তু প্রতিবারই তারা ব্রিটিশ কিংবা রাজা কর্তৃক পদত্যাগে বাধ্য হয়।
১৯৩২ সউদি আরবের রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৩৫ মিশরে সালাফিয়াহ্ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মুসলিম সংস্কারক ও সাংবাদিক রশিদ রিদার পরলোকগমন।
১৯৩৮ ভারতীয় কবি-দার্শনিক মুহাম্মদ ইকবালের পরলোকগমন।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ব্রিটিশরা রেযা শাহকে উৎখাত করে। পুত্র মুহাম্মদ রেযা (১৯৪৪) তাঁর উত্তরাধিকারী হন।
১৯৪০ দশক মুসলিম ব্রাদারহুড মিশরের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়।
১৯৪৫ টার্কির জাতিসংঘে যোগদান, বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত (১৯৪৭)।
আরব লীগের প্রতিষ্ঠা।
১৯৪৬ পৃথক রাষ্ট্রের দাবীতে মুসলিম লীগের প্রচারণার প্রেক্ষাপটে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।
১৯৪৭ মুসলিম প্রধান এলাকা নিয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি। ভারত বিভাগের ফলে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের প্রাণহানি।
১৯৪৮ প্যালেস্টাইনে ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অবসান ও জাতিসংঘের এক ঘোষণাবলে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের সৃষ্টি। নয়া ইহুদি রাষ্ট্রে আক্রমণ পরিচালনাকারী পাঁচটি আরব সেনাবাহিনীকে ইসরায়েল পরাস্ত করে। এই বৈরিতার সময় প্রায় ৭,৫০,০০০ প্যালেস্টাইনি দেশত্যাগ করে, পরে আর তারা স্বদেশে ফেরার অনুমতি পায়নি। ১৯৫১-৫৩ মুহাম্মদ মুসাদ্দিক এবং ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টি ইরানি তেল জাতীয়করণ করে। রাজতন্ত্র বিরোধী এক বিক্ষোভের পর ইরান ছেড়ে পালিয়ে যান শাহ্, কিন্তু CIA ও ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্সের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত অভ্যুত্থানে আবার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। ইউরোপীয় তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে নতুন করে চুক্তি সম্পাদিত হয়।
১৯৫২ মিশরে জামাল আবদ আল-নাসেরের নেতৃত্বে স্বাধীন অফিসারদের বিদ্রোহে রাজা ফারুক ক্ষমতাচ্যুত হন। আল-নাসের মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমন করেন এবং হাজার হাজার ব্রাদারকে নির্যাতন শিবিরে পাঠান।
১৯৫৪ আলজেরিয়ায় ফ্রেঞ্চ উপনিবেশবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সেক্যুলারিস্ট ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের (FLN) নেতৃত্বে অভ্যুত্থান।
১৯৫৬ পাকিস্তানে প্রথম সংবিধান অনুমোদন।
জামাল আবদ আল-নাসের সুয়ে খাল জাতীয়করণ করেন।
১৯৫৭ আমেরিকান CIA এবং ইসরায়েলি MOSSAD-এর সহায়তায় ইরানের শাহ্ রেযা মুহাম্মদ পালভী গুপ্ত পুলিশ বাহিনী SAVAK প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৮-৬৯ পাকিস্তানে জেনারেল মুহাম্মদ আইয়ুব খানের সেক্যুলারিস্ট সরকার। ১৯৬১ ইরানের শাহ্ মুহাম্মদ রেযা পালভী আধুনিকীকরণের ‘শ্বেত বিপ্লবে’র ঘোষণা দেন, যা ধর্মকে আরও প্রান্তিক পর্যায়ে ঠেলে দেয় এবং ইরানি সমাজে বিভেদকে আরও প্রবল করে তোলে।
১৯৬৩ আলজেরিয়ায় NLF সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে। আয়াতোল্লাহ রুহুল্লাহ্ খোমিনি পাহলভী শাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। গোটা ইরানে বিক্ষোভে অনুপ্রেরণা যোগান। পরে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন তিনি এবং শেষে ইরাকে নির্বাসিত হন।
১৯৬৬ আল-নাসের মিশরের নেতৃস্থানীয় মৌলবাদী চিন্তাবিদ সাইয়ীদ কুতব-এর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
১৯৬৭ ইসরায়েল ও প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর মধ্যে ‘ছয়দিনের যুদ্ধ’। ইসরায়েলি বিজয় এবং আরবদের চরম পরাজয় গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এক ধর্মীয় পুনর্জাগরণ সৃষ্টি করে, কেননা পুরনো সেক্যুলারিস্ট নীতিমালা ভ্ৰান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে।
১৯৭০ আল-নাসেরের পরলোকগমন; আনোয়ার আল-সাদাত তাঁর স্থলাভিষিক্ত, যিনি মিশরীয় ইসলামপন্থীদের সমর্থন লাভের জন্য তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেন। ১৯৭১ শেখ আমাদ ইয়াসিন কল্যাণমূলক সংগঠন মুজামাহ (কংগ্রেস) প্রতিষ্ঠা করেন এবং PLO-র সেক্যুলার জাতীয়বাদের বিরোধিতা করে প্যালেস্টাইনের একটি ইসলামী পরিচয়ের অনুসন্ধান করেন; মুজামাহ ইসরায়েলের সমর্থন লাভ করে।
১৯৭১-৭৭ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আলী ভূট্টো বামপন্থী-সেক্যুলারিস্ট সরকারের নেতৃত্ব দেন, এই সরকার ইসলামপন্থীদের ছাড় দিলেও তা যথেষ্ট ছিল না। ১৯৭৩ ইয়োম কিপ্পুর দিবসে মিশর ও সিরিয়া ইসরায়েলে আক্রমণ চালায় এবং রণক্ষেত্রে এমন আকর্ষণীয় শক্তি প্রদর্শন করে যে আল-সাদাত ইসরায়েলের সঙ্গে দুঃসাহসী শান্তি উদ্যোগ গ্রহণের মত অবস্থানে পৌঁছেন এবং ১৯৭৮ সালে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।