৬২৫ মদীনার বাইরে উঁহুদের যুদ্ধে মুসলিমরা মক্কা-বাহিনীর কাছে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে।
মক্কার সঙ্গে সহযোগিতা করায় ইহুদি গোত্র কায়নুকাহ্ এবং নাদিরকে মদীনা হতে বহিষ্কার করা হয়।
৬২৭ পরিখার যুদ্ধে মুসলিমরা অনায়াসে মক্কা-বাহিনীকে পরাস্ত করে। এর পরপরই সংঘটিত হয় ইহুদি গোত্র কুরাইযা বিনাশ, এ গোত্রটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে মক্কাবাসীদের সমর্থন দিয়েছিল।
৬২৮ মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী হুদাইবিয়াহ্ নামক স্থানে হুদাইবিয়া-সন্ধির মাধ্যমে মুহাম্মদের(স:) দুঃসাহসী শান্তি উদ্যোগ ফলপ্রসু হয়। এই সময় তাঁকে আরবের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি হিসাবে দেখা হয় এবং বহু আরবীয় গোত্র তাঁর কনফেডারেসিতে যোগ দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
৬৩০ মক্কাবাসীরা হুদাইবিয়াহর-সন্ধি লঙ্ঘন করে। মুসলিম এবং মিত্রদের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কা অভিমুখে যাত্রা করেন মুহাম্মদ(সঃ)। পরাজয় টের পেয়ে মক্কা স্বেচ্ছায় মুহাম্মদের(স:) জন্যে পথ খুলে দেয় এবং তিনি বিনা রক্তপাতে ও কাউকে ধর্মান্তরিতকরণে বাধ্য না করেই নগরী অধিকার করে নেন।
৬৩২ পয়গম্বর মুহাম্মদের(স:) পরলোকগমন।
আবু বকর তাঁর খলিফাহ্ (প্রতিনিধি) নির্বাচিত হন।
৬৩২-৩৪ আবু বকরের খেলাফত এবং কনফেডারেসি থেকে বেরিয়ে যাওয়া গোত্র সমূহের বিরুদ্ধে রিদ্দাহ (riddah)র যুদ্ধ। আবু বকর বিদ্রোহ দমনে সফল হন এবং আরবের সকল গোত্রকে ঐক্যবদ্ধ করেন।
৬৩৪-৪৪ উমর ইবন আল-খাত্তাবের খেলাফত।
মুসলিম বাহিনী ইরাক, সিরিয়া এবং মিশর আক্রমণ করে।
৬৩৮ মুসলিমরা জেরুজালেম অধিকার করে। এই নগরী মক্কা ও মদীনার পর ইসলামী-বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র-নগরীতে পরিণত হয়।
৬৪১ মুসলিমরা সিরিয়া, প্যালেস্টাইন এবং মিশরের নিয়ন্ত্রণ লাভ করে, তারা পারসিয়ান সাম্রাজ্যকে পরাস্ত করে এবং লোকবল অর্জিত হওয়ার পর এর অঞ্চলসমূহ অধিকার করে।
মুসলিম-বাহিনীর অবস্থানের জন্য কুফাহ, বসরাহ্ এবং ফুস্ট্যাটে গ্যারিসন- শহর নির্মিত হয়; মুসলিম-বাহিনী প্রজা-সাধারণ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করত।
৬৪৪ জনৈক পারসিয়ান যুদ্ধবন্দীর হাতে খলিফাহ্ উমর নিহত হন।
উসমান ইবন-আফফান তৃতীয় খলিফাহ্ নির্বাচিত হন।
৬৪৪-৫০ মুসলিমরা সাইপ্রাস, ত্রিপোলি, উত্তর আফ্রিকা দখল করে এবং ইরান, আফগানিস্তান এবং সিন্ধ-এ মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
৬৫৬ জনৈক অসন্তুষ্ট মুসলিম সৈনিকের হাতে খলিফাহ্ উসমান প্রাণ হারান; এই সৈনিক আলী ইবন আবি তালিবকে খলিফাহ্ ঘোষণা করে, কিন্তু সকলে আলীর শাসন মেনে নেয়নি।
৬৫৬-৬০ প্রথম ফিৎনাহ্। গৃহযুদ্ধ আসন্ন।
৬৫৬ উটের যুদ্ধ। উসমানের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ না করায় পয়গম্বরের স্ত্রী আয়েশা, তালহা এবং যুবায়ের আলীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। আলীর বাহিনীর কাছে পরাস্ত হন তাঁরা।
সিরিয়ায় বিরোধীপক্ষের নেতৃত্ব দান করেন উসমানের আত্মীয় মুয়াবিয়াহ্ ইবন আবি সুফিয়ান।
৬৫৭ সিফফিনে দু’পক্ষের মাঝে এক আপোস রফার প্রয়াস নেয়া হয়; সালিশের রায় আলীর বিপক্ষে গেলে মুয়াবিয়াহ্ তাঁকে পদচ্যুত করে জেরুজালেমে খেলাফত দাবী করেন।
খারেজিরা আলীর পক্ষ ত্যাগ করে চলে যায়।
৬৬১ জনৈক খারেজি চরমপন্থীর হাতে নিহত হন আলী।
আলীর সমর্থকরা তাঁর পুত্র হাসানকে পরবর্তী খলিফাহ্ হিসাবে ঘোষণা করে, কিন্তু হাসান মুয়াবিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন।
৬৬১-৮০ প্রথম মুয়াবিয়াহর খেলাফত। ইনি উমাঈয়াহ্ বংশের প্রতিষ্ঠা করেন এবং মদীনা হতে দামাস্কাসে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।
৬৬৯ মদীনায় হাসান ইবন আলীর পরলোকগমন।
৬৮০ পিতা মুয়াবিয়া মৃত্যুর পর প্রথম ইয়াযিদ দ্বিতীয় উমাঈয়াহ্ খলিফাহ্ হন। ৬৮০-৯২ দ্বিতীয় ফিৎনাহ্। আবার গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা।
৬৮০ নিজেদের শিয়াহ্-ই-আলী বলে আখ্যাদানকারী কুফাবাসী মুসলিমরা আলী ইবন আবি-তালিবের দ্বিতীয় পুত্র হুসেইনকে খলিফাহ্ ঘোষণা করে। ক্ষুদ্র এক বাহিনী নিয়ে কুফার উদ্দেশ্যে মদীনা ত্যাগ করেন হুসেইন এবং কারবালা- প্রান্তরে ইয়াযিদ বাহিনীর হাতে নিহত হন।
আরবে আবদাল্লাহ ইবন আল-যুবায়ের ইয়াযিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।
৬৮৩-প্রথম ইয়াযিদের মৃত্যু।
তাঁর শিশু-পুত্র দ্বিতীয় মুয়াবিয়া মৃত্যু।
খেলাফাতের উমাঈয়াহ্ দাবীদার প্রথম মারওয়ানের সিংহাসন আরোহণ, সিরিয়রা তাঁকে সমর্থন দেয়।
৬৮৪-উমাঈয়াদের বিরুদ্ধে খারেজি বিদ্রোহীরা মধ্য আরবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করে।
ইরাক ও ইরানে খারেজি-বিদ্রোহ।
কুফায় শিয়া অভ্যুত্থান।
৬৮৫-৭০৫ আব্দ আল-মালিকের খেলাফত, যিনি উমাঈয়াহ্ শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন।
৬৯১ উমাঈয়াহ্-বাহিনী খারেজি ও শিয়া বিদ্রোহীদের পরাস্ত করে।
জেরুজালেমে ডোম অভ দ্য রক সমাপ্ত হয়।
৬৯২ উমাঈয়াহ্-বাহিনী ইবন আল-যুবায়েরকে পরাজিত ও হত্যা করে।
ফিৎনাহ্-যুদ্ধ সমূহের ফলে বসরাহ্, মদীনা এবং কুফায় এক ধর্মীয় আন্দোলন গড়ে ওঠে; বিভিন্ন মতবাদ-এর অনুসারীরা রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি জীবনে কুয়ারাহ’র অধিকতর কঠোর প্রয়োগের প্রচারণা চালায়।
৭০৫-১৭ আল-ওয়ালিদের খেলাফত।
মুসলিম বাহিনীর উত্তর আফ্রিকা অধিকার অব্যাহত থাকে।