পৃথিবীতে আটটি বৃহৎ ওয়েল কোম্পানি আছে। তারমধ্যে পাঁচটিই আমেরিকান; বাকি তিনটি বৃটিশ, ডাচ আর ফরাসি মালিকানাধীন। পঞ্চাশ বছর আগে এইসব কোম্পানির লোকেরা স্কটল্যান্ডে এক বাকবিতণ্ডার পর একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সারা বিশ্বের তেল ডিস্ট্রিবিউশন ভাগাভাগি করে নেবে তারা। কেউ কারো সাথে লাগতে যাবে না। কয়েক মাস পর তারা ওন্টেড-এ আবার মিলিত হয় কালুস্টে গুলবেনকিয়ান নামের এক লোকের সাথে, পকেটে লাল রঙের একটি পেন্সিল নিয়ে এসেছিলো সে। সেই পেন্সিলটা বের করে ভদ্রলোক পুরনো অটোমান সাম্রাজ্যের উপর যা করলো সেটাকে পরবর্তীকালে ‘থিন রেড লাইন’ হিসেবে ডাকা শুরু হয়। ইরাক, তুরস্ক আর পারস্যসাগরের কিছুটা অংশ ছিলো এরমধ্যে। ভদ্রলোকেরা পুরো এলাকাটি ভাগ করে নেয় ড্রিল করার জন্য। কিন্তু বাহরাইনে বানের জলের মতো তেল বের হতে থাকলে প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায়।
আপনি যদি এ পৃথিবীর সবচাইতে বড় ভোগ্যপণ্যের উৎপাদক এবং একই সাথে সরবরাহের নিয়ন্ত্রক হন তাহলে চাহিদা এবং সরবরাহের নিয়মটি কাগজে কলমের বিষয় হয়ে ওঠে। আমি যেসব চার্ট পড়েছি তাতে দেখা যাচ্ছে আমেরিকা দীর্ঘদিন থেকেই সবচাইতে বড় তেলের গ্রাহক। আর এইসব তেল। কোম্পানিগুলোর মধ্যে আমেরিকার কোম্পানিই যেহেতু বেশি এবং বৃহৎ সে। কারণে সরবরাহের ব্যাপারটা তারাই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কাজটা তারা যেভাবে। করে সেটা খুব সহজ-সরল। তারা তেল উত্তোলনের জন্যে চুক্তি করে, তাতে বেশিরভাগ মালিকানা থাকে তাদেরই। সেই তেল শেষপর্যন্ত বিক্রি করার কাজটাও করে তারা।
প্যান অ্যাম-এর টেকনিক্যাল এবং বিজনেস লাইব্রেরি থেকে একগাদা। বইপত্র নিয়ে এসে একা বসে আছি আমি। নিউইয়কের এই লাইব্রেরিটা হলো আমেরিকার একমাত্র লাইব্রেরি যেটা নিউইয়ার্স ইভের দিনও সারা রাত খোলা থাকে। বসে বসে জানালা দিয়ে পার্ক এভিনুতে তুষার পড়া দেখছি আর ভাবছি।
একটা চিন্তাই আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, আর সেই চিন্তাটা হলো দেশের প্রধান কর্তাব্যক্তির দৌড়ঝাঁপের ফলে তেল কোম্পানির প্রধানদের আরো ধনী হয়ে ওঠা। এটি এমন একটি ভাবনা যা কিনা যুদ্ধ, রক্তপাত আর অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করবে আচমকা। এ পৃথিবীর বড় বড় শক্তিগুলোকে দাঁড় করাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সামনে। তবে এ মুহূর্তে আমার কাছে এটাকে ঠিক বৈপ্লবিক ধারণা বলে মনে হচ্ছে না।
ভাবনাটা ঠিক এরকম : আমরা যদি তেলের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি তাহলে কি হবে? এই প্রশ্নের জবাব বাকি পৃথিবীর কাছে একেবারে পরিস্কার হয়ে উঠবে বারো মাসের মধ্যে, দেয়ালে হাতের লেখার আকাড়ে।
এটা হলো আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা।
ডিফেন্স
দ্য এইট – ক্যাথারিন নেভিল
অনবাদ : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রথম প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২০১১
[হাজার বছর ধরে এক বিস্ময়কর সিক্রেট ফর্মুলা লুকিয়ে রাখা হয়েছে শার্লেমেইনের কিংবদন্তীতুল্য দাবাবোর্ডে। প্রকৃতির নিয়মকে পাল্টে দেবার ক্ষমতা রাখে এটি-যেমন শক্তিশালী তেমনি বিপজ্জনক। দার্শনিক রুশো, ভলতেয়ার, আইজ্যাক নিউটন, ক্যাথারিন দি গ্রেট, গণিতবিদ লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি, পিথাগোরাস, সঙ্গিতজ্ঞ বাখ, রিশেলু আর ফরাসি সম্রাট নেপোলিওন বোনাপার্তসহ ইতিহাসের অসংখ্য মহানব্যক্তিত্ব এই ফর্মলার খোঁজে ছিলেন। ফর্মুলাটি করায়ত্ত করতে ফরাসি বিপ্লব আর আধুনিক সময়কালে সমান্তরালভাবে ঘটে চলেছে দুটো ঘটনা। সেই দুটো ঘটনা একবিন্দুতে এসে মিলিত হয় অভাবনীয় রোমাঞ্চ আর গোলোকধাঁধাতুল্য অ্যাডভেঞ্চারের মধ্য দিয়ে। যারা ড্যান ব্রাউন-এর দুনিয়া কাঁপানো থৃলার ‘দ্য দা ভিঞ্চি কোড’ পড়ে রোমাঞ্চিত হয়েছেন তাদের জন্যে ক্যাথারিন নেভিল-এর বহুস্তরবিশিষ্ট সিক্রেট আর পাজলের সমম্বয়ে গড়া বিশাল ক্যানভাসের ‘দ্য এইট’ অবশ্যইঠ্য।]
.
ক্যাথারিন নেভিল ১৯৪৫ সালের ৪ঠা এপ্রিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। কলেজ শেষ করে নিউইয়র্কে চলে আসেন একজন কম্পিউটার এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করার জন্য। এছাড়াও পেইন্টার এবং ফটোগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। পরবর্তীকালে ‘দ্য এইট’ বইটি লিখে পরিণত হয়ে ওঠেন থৃলার সাহিত্যের অসাধারণ এক লেখকে। তার এই বইটি অন্যান্য থৃলার লেখকদের যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করে। শুরু হয় পাজল-রহস্য আর সিক্রেট সোসাইটি নিয়ে থৃলার লেখার হিড়িক। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০০৮ সালে ‘দ্য এইট’-এর সিকুয়েল ‘ফায়ার’ বের করেন তিনি। প্রায় সমগ্র আমেরিকা ঘুরে বেড়িয়েছেন, থেকেছেন বহু রাজ্যে। সত্তুরের দশকে আলজেরিয়ান সরকারের জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কনসালটেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন কিছুদিন। তবে আশির দশকে সানফ্রান্সিসকোতে ফিরে এসে ব্যাঙ্ক অব আমেরিকার ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটনের ভার্জিনিয়াতে বসবাস করছেন এবং শুরু করেছেন পেইন্টিংয়ের উপর একটি থৃলার লেখার কাজ।
.
দাবা হলো জীবন।–ববি ফিশার
জীবন এক ধরণের দাবা।–বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন
ডিফেন্স
দু’ধরণের চরিত্র আছে–একদল অম্বেষণপ্রিয় আরেকদল এর বিরুদ্ধে। যারা অম্বেষণপ্রিয় তারা অভাবনীয় কিছু লাভ করে; আর যারা এর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তারা কাপুরুষ এবং খলনায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়।