হ্যাঁ, এটা পরিণত হয় সেই ব্যক্তিতে যে পোষ মানায় এবং আংটা ও বেদনাবোধ দিয়ে তৈরি করে তোমাদের বিশাল আকাক্ষার অসংখ্য নাচের পুতুল।
যদিও তার হাতদুটো নরম ও চকচকে এবং হৃদয় হচ্ছে লোহার।
সে কেবলই বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে তোমাদেরকে ঘুম পাড়ানোর জন্য শান্ত করে এবং উপহাস করে মাংসের মর্যাদাকে। তোমাদের ধ্বনি সম্পর্কিত জ্ঞানকে সে বিদ্রূপ করে এবং তাদেরকে শুইয়ে দেয় গোক্ষুর বীজ ধারণকারী খোসার ভেতরে ভঙ্গুর জলযানের মতো।
প্রকৃতঅর্থেই লালসা আয়েশের জন্য আত্মার অনুভূতিকে হত্যা করে এবং তারপর পেঁতো হাসি হাসতে হাসতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেয়।
কিন্তু তোমরা, মহাশূন্যের সন্তানেরা, বিশ্রামের ক্ষেত্রে তোমরা ক্লান্তিহীন, তোমার ফাঁদেও পড়বে না, তোমরা পোষ্যও হবে না।
তোমাদের গৃহগুলি মাস্তুল হবে কিন্তু নোঙর হবে না।
এটা কখনই হবে না কোনো চকচকে পাতলা আবরণ যা একজন আহতকে ঢেকে ফেলে, কিন্তু চোখের একটি পাতাই চোখকে পাহারা দিয়ে রাখে।
তোমরা দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারো এজন্য তোমাদের পাখা মুড়তে ভয় পাবে না, তোমরা মাথা নোয়বে না ছাদে মাথা ঠুকে যেতে পারে এই ভয়ে, এমনকি ভয় পাবে না নিশ্বাস নিতে পাছে দেয়ালে চিড় ধরে এবং খানখান হয়ে তা ভেঙে পড়ে যায়।
বেঁচে থাকার জন্য তোমরা কখনই মৃতের তৈরি সমাধিতে বসবাস করবে না।
যদিও তা চমৎকারিত্ব এবং গৌরব কিন্তু তোমাদের গৃহগুলি ধারণ করবে না তোমাদের গোপনীয়তা, তোমাদের আকুল আকাঙ্ক্ষাকেও দেবে না আশ্রয়।
সে-কারণে তোমাদের ভেতরে কোন্ সেই সীমাহীনতা যে আকাশের অট্টালিকায় প্রতীক্ষা করে থাকে, যার দরোজাগুলি হল ভোরের ধোঁয়াশা এবং জানালাগুলো হচ্ছে অসংখ্য সংগীত ও রাত্রির অন্তহীন নীরবতা।
.
এবং তাঁতি বলল, আমাদেরকে বস্ত্র সম্পর্কে বলুন।
এবং তিনি উত্তরে বললেন,
তোমাদের পোশাক তোমাদের সৌন্দর্যের অনেকটাই লুকিয়ে রাখে, যদিও তারা সৌন্দর্যহীনতাকে গোপন করে না।
যদিও তোমরা একান্ত গোপনীয়তার স্বাধীনতাকে অন্বেষণ করো পোশাকের ভেতরে, কিন্তু তোমরা ঘোড়ার সাজ-পোশাক ও শৃঙ্খলের ভেতরে সেই স্বাধীনতা খুঁজে পেতে পারো।
তোমরা সূর্য ও বাতাসের সঙ্গে মিলিত হতে পারবে তোমাদের চামড়ার চেয়ে বেশি এবং তোমাদের পোশাকের চেয়ে কম।
কারণ জীবনের শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচল করে সূর্যালোকে এবং জীবনের হাতদুটি থাকে বাতাসের ভেতরে।
তোমাদের কেউ কেউ বলে, ‘এটা হচ্ছে উত্তরের বাতাস যে পোশাকগুলি বুনেছে যা আমরা পরিধান করি।’
এবং আমি বলি, হ্যাঁ এটা ছিল উত্তরের বাতাস কিন্তু তার তাঁর ছিল তার লজ্জা এবং মাংসপেশির নমনীয়তাই ছিল তার সুতো।
এবং যখন তার কাজ সম্পন্ন হয় তখন সে বনভূমির ভেতরে হেসে ওঠে।
ভুলে যেও না সেই পরিমিতিবোধ হচ্ছে একটি রক্ষাকবচের জন্য, আবার এই রক্ষাকবচই হয় অশুচির চোখ।
এবং যখন এই অপবিত্র অধিক কিছুই হবে না তখন কোথায় ছিল পরিমিতিবোধ মনের প্রতিবন্ধক ও অশ্লীলতা ছাড়া?
ভুলে যেও না তোমাদের নগ্ন পদযুগ স্পর্শ করে মাটি উত্যু হয় এবং বাতাস দীর্ঘ সময় ধরে তোমাদের চুলের সঙ্গে খেলা করে।
.
এবং একজন ব্যবসায়ী বলল, আমাদেরকে বেচাকেনা
সম্পর্কে বলুন।
এবং তিনি উত্তরে বললেন :
মাটি তোমাদের কাছে প্রাকৃতিক রীতিতে তার ফল উৎপন্ন করে এবং তোমরা কখনই তা চাইবে না যদি তোমরা জানো কীভাবে হাতের মুঠো পূর্ণ করে নিতে হয়।
বিনিময় প্রক্রিয়ার ভেতরে এটা হচ্ছে মাটির উপহার, যার মধ্যে তোমরা খুঁজে পাবে অতি প্রাচুর্য এবং পরিতৃপ্ত হবে।
বিনিময় প্রক্রিয়া ভালোবাসার ভেতরে সম্পন্ন হবে না এবং দয়া করে তা সুবিচারও করবে না কিন্তু কাউকে নেতৃত্ব দেবে লোভের প্রতি এবং অন্যদের ক্ষুধার প্রতি।
বাজার এলাকায় যখন তোমরা সমুদ্র, শস্যক্ষেত এবং আঙুরক্ষেতের এক-একজন কঠোর পরিশ্রমী তখন তোমাদের দেখা হয় তাঁতি, কুমোর এবং যারা মশলা জড়ো করে তাদের সঙ্গে–
তারপর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো মাটির সর্বোচ্চ উদ্যম যেন সে তোমাদের মাঝে আসে, পবিত্র করে তোলে তুলাদণ্ড এবং পরিশোধকৃত মূল্যের হিসাব যা ওজন করা হয় মূল্যের বিপরীত মূল্য দিয়ে।
এবং কষ্ট পেয়ো না শূন্যহাতে তোমাদের লেনদেনে অংশ নিতে, কারা তাদের কথা বিক্রি করবে তোমাদের শ্রমের জন্য।
এরকম মানুষের কাছে তোমাদের বলা উচিত :
‘আমাদের সঙ্গে এসো শস্যক্ষেতে অথবা আমাদের ভাইদের সঙ্গে সমুদ্রে ভেসে যাও এবং তোমার জাল ফেলে রাখো,
সে কারণে ভূমি ও সমুদ্র হবে তোমার কাছে যথেষ্ট, যেমন আমাদের কাছে।’
এবং যদি সেখানে গায়ক, নৃত্যশিল্পী এবং বংশীবাদকেরা আসে তবে তাদের জন্যও উপহার কিনে নাও।
কারণ তারাও ফল ও রজন একত্রকারী এবং সেটাই তারা বহন করে আনে, যদিও স্বপ্নের প্রথা হয় তোমাদের আত্মার জন্য পোশাক এবং খাবার।
এবং বাজার এলাকা পরিত্যাগ করার আগে তোমরা দেখতে পাও কেউই শূন্যহাতে নিজের পথে যায়নি।
কারণ মাটির সর্বোচ্চ উদ্যম কখনই বাতাসের ওপর শান্তিতে ঘুমাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্ত না হয়।
.
তারপর শহরের বিচারকদের ভেতর থেকে একজন সামনে এগিয়ে এসে দাঁড়াল এবং বলল, আমাদেরকে অপরাধ এবং শাস্তি সম্পর্কে বলুন।
এবং তিনি উত্তরে বললেন :
এটা হল সেই সময় যখন তোমাদের উদ্যম বাতাসের ওপর দিয়ে দীর্ঘ পর্যটনে যায়, তাই তোমরা একাকী এবং অরক্ষিত, তোমরা অন্যের প্রতি অন্যায় করো এবং একইভাবে তা করো নিজেদের প্রতি।
এবং সেই অন্যায়ের জন্য তোমরা অবশ্যই অমনোযোগের সঙ্গে কড়া নাড়ো এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো আশীর্বাদপ্রাপ্তদের দরজায়।