বিপনির মেয়েটা একটা পার্কের গা দিয়ে লম্বা লম্বা পায়ে পথ পাড়ি দেওয়ার সময় শুনতে পেল কে যেন তার নাম ধরে ডাকাড্রাকি করছে। সে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। চোখের পলকে লু দৌড়ে এসে তাকে জাপ্টে ধরল। উভয়ের জিভের ডগায় হাজার কৰ্কশ প্রশ্ন এসে ভিড় করল। কিন্তু কেউ-ই কাউকে আক্রমণ করতে পারলানা।ঠিক তখনই ন্যান্সির নজরে পড়ল, লু-র বরাত খুলেছে। সে গায়ে চাপিয়েছে বহুমূল্য লোমশ কোট, আর মণি-মুক্তোর অলঙ্কার ঝলমল করছে। এলাহি ব্যাপার।
ন্যান্সি মুখ খোলার আগেইলুগলা ছেড়ে বলে উঠল—বোকা মেয়ে কোথাকার! তুমি আজও সে দোকানেই কাজ করছ। তোমার গায়ে তো আগের মতই সস্তাদামের ও নোংরা পোশাক দেখতে পাচ্ছি। ভাল কথা, তোমার সে বড় শিকার ধরার কাজটা কত দূর এগিয়েছে? এখনও কাজ হাসিল করতে পারনি, তাই না?
লু এবার অনুসন্ধিৎসুদৃষ্টিতে ন্যান্সি-র দিকে তাকিয়ে চমকে উঠল। তার সর্বাঙ্গ দিয়ে অত্যুজ্বল একটা দু্যতি যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে। চোখের মণি দুটো মুক্তোর চেয়েও বেশী ঝকমক করছে। আর গাল দুটো গোলাপের আভার চেয়েও লাল হয়ে উঠেছে।
তোমার অনুমান অভ্রান্ত। এখনও সেই বিপনিতেই কাজ করছি। তবে আগামী হগুপ্তাতেই কাজটায় ইস্তফা দিয়ে দেব। আমার বাঞ্ছিত শিকারটাকে আমি হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে নিয়েছি। বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম শিকার। লু তুমি এখন আর কিছু মনে করবে না তো। আমি ডানকে বিয়ে করতে চলেছি। ডান এখন আমার-একান্তভাবেই আমার। লু, ঠিক কাজ করেছি তো?
কম বয়সী একটা নতুন পুলিশ পার্কের বঁােক ঘুরে এগিয়েই দেখতে পেল, বহুমূল্য লোমশ কোট পরা এবং আঙুলে হীরের আংটি পরে এক মহিলা পার্কের লোহার রেলিঙের ওপর ঝুঁকে ডুকরে কেঁদে চলেছে। আর সাধারণ পোশাক পরা রোগাটে খেটে-খাওয়া চেহারার একটা মেয়ে তাকে নানাভাবে প্ৰবোধ দিচ্ছে। পুলিশটা নতুন চাকরি পেয়েছে। তাই হয়ত ব্যাপারটাকে আমলনা দিয়ে, না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। কারণ তার তো আর অজানা নয়, এসব ব্যাপার স্যাপারে তার মত শক্তিধরের কিছুই করার নেই। তবে হ্যাঁ, সে হাতের লাঠিটাকে মাটিতে এমনভাবে ঠুকতে ঠুকতে এগিয়ে যেতে লাগল যে, তা থেকে স্পষ্ট শব্দটা হয়ত আকাশের দূরতম নক্ষত্রটা পর্যন্ত চলে গেল। মহিলাটা অনবরত কেঁপেই চলেছে।