মিশন ব্যবস্থাপনে সংগঠনমূলক কাঠামো
অগ্রবর্তী ক্ষেত্রের মিশন ব্যবস্থাপনের জন্য প্রতিভূস্বরূপ আদর্শের দ্বারা যেতে গিয়ে আমি মনশ্চক্ষে দেখি
• যখন নির্বাচিত সাংসদরা মিশনের সমন্বয়সাধন করবেন, সংশ্লিষ্ট শাসনতান্ত্রিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী একই মিশনে প্রয়োজনীয় পরিধিতে এবং নিজের নিজের মন্ত্রক/বিভাগের সীমারেখার মধ্যে যতদূর সম্ভব সরাসরি নেতৃত্ব দান করবেন।
• কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ‘মিশন মন্ত্রী’ কে প্রয়োজনীয় মন্ত্রক/বিভাগীয় সংস্থানকে দায়িত্বভার অর্পণ করবেন যাঁকে তাঁর মিশনের জন্য বার্ষিক কর্মসূচি এবং আর্থিক লক্ষ্যপূরণের উপলব্ধির জন্য দায়ী করা হবে।
ইন্ডিয়া ২০২০ স্বপ্ন উপলব্ধি করতে বহুগুণিত মিশনের ম্যাট্রিক্স কাঠামোর একটা ধারণামূলক রেখাচিত্র দেখানো হল
মিশনে কার্যপ্রণালী ব্যবস্থাপনের জন্য মন্ত্রক বা বিভাগীয় বাজেটের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বিকেন্দ্রীকরণ এবং মিশন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ বরাদ্দের প্রয়োজন। কোনও বিশেষ মিশনের জন্য প্রতিটি মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ দায়িত্বভার অধিকর্তা/ যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নির্দিষ্ট আধিকারিকের ওপর ন্যস্ত করা হবে। এভাবে মিশন— মন্ত্রীর একটা দল হবে বিভিন্ন মন্ত্রকের কয়েক জন যুগ্ম সচিব/অধিকর্তা নিয়ে এবং মিশনের লক্ষ্য সফল করার দিকে তাঁদের মনোনিবেশ করাবে। মিশন ব্যবস্থাপন দলের প্রতিটি সদস্য শাসনতান্ত্রিকভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে কিন্তু কর্তব্যগতভাবে মিশন পরিচালকের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।
তা হলে সহজেই দেখা যাচ্ছে ‘ম্যাট্রিক্স ব্যবস্থাপন’-এ সাংসদদের এ ধরনের বিস্তৃত অংশগ্রহণে নিম্নলিখিত সংগঠনের নীতিসমূহ এবং দায়বদ্ধতার প্রয়োজন হবে।
ক. মিশন মন্ত্রীরা রাজ্যের মন্ত্রী হতে পারেন বা তাঁদের সংসদ থেকে আনা হতে পারে। এমনকী শাসন রূপরেখায় অবস্থান না করা কোনও রাজনৈতিক দলেরও হতে পারেন।
খ. নির্দিষ্ট মিশনসমূহ, কার্যক্রমগুলি এবং প্রকল্পগুলির জন্য মিশন মন্ত্রীদেরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দ্বারা সংস্থান ও ক্ষমতার উপর থেকে নীচে ক্ষমতার দায়িত্ব বিতরণ।
গ. মিশন মন্ত্রীদের দ্বারা বিভাগীয় সীমা অতিক্রম করে মিশন ব্যবস্থাপন টিমের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট মিশনের সমান্তরাল একীকরণ।
ঘ. সামগ্রিক মিশন পরিকল্পনা এবং সংস্থান বিলিবণ্টনের জন্য পরিকল্পনা কমিশন এবং প্রতিটি মন্ত্রক/বিভাগের ইন্ডিয়া ২০২০ স্বপ্ন পরিকল্পনা টিম গড়ে তুলতে হবে।
ঙ. প্রতিটি মন্ত্রক এবং মিশন পরিকল্পনা দল দ্বারা সযত্নে বিস্তৃত মিশন ২০২০ পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে হবে।
চ. মিশনগুলিকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং মিশনগুলির কার্যকালের মেয়াদ সংসদ ও সরকারের কার্যকালের মেয়াদের পরিধির বাইরে অবধি বিস্তৃত করতে হবে।
ছ. ই-গভর্ন্যান্স নেটওয়ার্ক ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
জ. মিশন-মন্ত্রীরা সংসদের কাছে সরাসরি দায়বদ্ধ থাকবেন।
ঝ. কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা মন্ত্রিসভার কাছে এবং মন্ত্রিসভা সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।
ঞ. বহুলসংখ্যক মিশন-মন্ত্রীরা ইন্ডিয়া ২০২০ স্বপ্ন ম্যাট্রিক্স-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে, এর ফলে সংসদের ভূমিকা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে এবং নির্দিষ্ট মিশনগুলোর জন্য উচ্চ সরকারি পদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
গণতন্ত্র বজায় রাখতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও একে শুধুমাত্র উন্নতির জন্য একটা যান্ত্রিক কৌশল হিসেবে দেখা উচিত হবে না। শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে এর সফল ব্যবহার সামাজিক মূল্যবোধ এবং জনগণের কার্যকরী অংশগ্রহণের ওপর নির্ভর করে। এবং নিয়মমাফিক পরিবর্তনের জন্য অনুঘটক হিসেবে জাতীয় বিতর্কের সময় এসে গেছে।
৭. এক প্রতিযোগিতামূলক রাষ্ট্রের উদ্দেশে
৭. এক প্রতিযোগিতামূলক রাষ্ট্রের উদ্দেশে
জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রতিযোগিতার দ্বারা শক্তিশালী।
প্রতিযোগিতা জ্ঞান দ্বারা শক্তিশালী।
জ্ঞান প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
ভারতের জনসংখ্যার বৃহদাংশ গ্রামে বাস করে এবং এটাই হল বিজ্ঞানীমহলের প্রকৃত চ্যালেঞ্জ; যেখানে ৭৫০ কোটি বাস করে তাদের জীবন প্রযুক্তির ফল ব্যবহার করে সমৃদ্ধ করা।
বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ৫০ বছরের কর্মজীবনে আমি সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি— এই দুই ক্ষেত্র সামনে রেখে অগ্রসর হওয়া এক উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার একমাত্র পথ। তিনটি যে মূল ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য স্থির করা উচিত তা হল, ন্যানো টেকনোলজি, ই-গভর্ন্যান্স এবং জৈব-ডিজেল। উদ্ভাবনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হল রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে শুরু করি না কেন?
জটিল এবং নতুন সূচনায় অসংখ্য বিশেষজ্ঞের মিলিত ভাবনার প্রয়োজন। লক্ষ্য এবং কর্ম সম্পাদন করার জন্য বিভিন্ন মতামত এবং সংকলিত প্রচেষ্টা বিবেচনা করতে হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি ভবন এবং সেকেন্দ্রাবাদে রাষ্ট্রপতির বিশ্রামস্থল রাষ্ট্রপতি নিলয়ম-এ তিনটি নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনা তিনটি হল— ন্যানো টেকনোলজির অধিবেশন, ই-গভর্ন্যান্স অধিবেশন এবং জৈব-ডিজেল অধিবেশন। রাষ্ট্রের কর্মক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনাগুলি খুব তাত্পর্যপূর্ণ ছিল।