‘সুন্দর?’ হেসে নিজেও স্বীকার করল। ক্র্যাপ!’ ময়লার ঝুড়িতে ছুঁড়ে ফেলল ম্যাচ বক্স। নিশানা ব্যর্থ হলো।
.
টেলিফোনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল মিটজি মরগ্যানের। বালিশের নিচে থেকে বের হয়ে অন্ধের মতো হাতড়াতে লাগল শব্দের উৎস।
‘লো।
‘মিটজি?
‘হাই ড্যাড, তুমি আসছো? বাবার গলা শুনে ঘুম ভেঙে অর্ধেক জেগে উঠল মিজি। মনে পড়ে গেল আজ তাদের পরিবারের সাথে হলিড়ে হোমে যোগ দেবার কথা বাবার।
‘সরি, বেবি। একটা ঘটনা ঘটেছে। আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত আসতে পারব না আমি।’
“ওহ ড্যাড!’ নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করল মিটজি।
‘ডেভি কোথায়? আর কোন অভিযোগ শোনার আগে তাড়াতাড়ি প্রশ্ন করল মিটজির বাবা।
“ওকে, বলব তোমাকে ফোন করতে?
‘না, আমি অপেক্ষা করছি। ওকে ডেকে দাও বেবি।
বিছানা থেকে নেমে আয়নার সামনে দাঁড়াল মিটজি। হাত দিয়ে চাইল চুলগুলোকে খানিক আঁচড়ে নিতে। উস্কোখুস্কো চুল এমন হয়ে আছে যেন সূর্যের আলো অথবা লবণাক্ত পানি বা ঝড়ো বাতাস বয়ে গেছে এগুলোর উপর দিয়ে। তার চেয়েও বাজে দেখাচ্ছে ছোট ছোট তিল। নিজের উপর অসন্তুষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল সে।
‘তোমাকে দেখাচ্ছে একটা পোকার মতো’, উঁচুস্বরে নিজেকে শোনাল মিটজি, ‘একটা মোটাসোটা ছোট্ট পোকা….তিলওয়ালা। পরিবর্তনের সব চেষ্টা। ছেড়ে গায়ের উপর ড্রেসিং গাউন চাপিয়ে নিল। ডেভিড তাকে এভাবে জিলিয়ন সময়ের চেয়েও বেশি বার দেখেছে। প্যাসেজে বের হয়ে এলো সে। বাবা মায়ের স্যুইট পার হয়ে এলো। মা এখন একা শুয়ে আছে সেখানে। বাসার লিভিং এরিয়ায় চলে এলো।
বাসা ভর্তি খোলা জায়গা, গ্যালারি, গ্লাস, স্টিল আর সাদা স্তম্ভ, সমুদ্রতটের কাছে বালিয়াড়ি থেকে উপরে উঠে গেছে। মিশে গেছে সমুদ্র আর আকাশের সাথে। গ্লাস শুধুমাত্র আলাদা করে রেখেছে। প্রভাতের অদ্ভুত আলোয় ভরে আছে চারপাশ।
প্লে-রুমের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে গত রাতের পার্টির নিদর্শন সমূহ, বিশজন অতিথি আর বালিয়াড়ির পাশে বড় হলিডে হোমস্ থেকে আগত সমান সংখ্যক জন ছাড়িয়ে গেছে নিজেদের সীমা-বিয়ার ফেলেছে, যত্রতত্র ছড়িয়েছে অ্যাশট্রে আর সিগারেটের মোড়ক।
আবর্জনার মধ্য দিয়ে পথ করে নিয়ে অতিথি কক্ষের গোলাকার সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেল মিটজি। ডেভিডের দরজা চেক্ করে দেখল খোলা, ঢুকে পড়ল ভেতরে। বিছানা একেবারে নিপাট ভাঁজ হলেও চেয়ারের উপর পড়ে আছে ডেনিম আর ভেজা শার্ট। জুতো জোড়াও ফেলে রাখা হয়েছে অনাদরে।
হেসে ব্যালকনিতে পা বাড়ালো মিটজি। সমুদ্রতট থেকে অনেক উপরে ঝুলে আছে এটি। ঠিক গাংচিলদের বরাবর, ইতিমধ্যে রাতের বেলা সমুদ্রে ভেসে আসা পরিত্যক্ত আবর্জনা আর খাদ্যাবশেষের সন্ধানে উড়তে শুরু করেছে তারা।
দ্রুত গাউন তুলে কোমরে পেঁচিয়ে নিল মিটজি। ব্যালকনির রেইলে উঠে পাশের ব্যালকনির রেইলে লাফ দিল। নিচে নেমে পর্দা সরিয়ে ঢুকে পড়ল ম্যারিয়নের বেডরুমে।
ম্যারিয়ন ছিল তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। গোপনে গোপনে সে জানে যে এই আনন্দময় সম্পর্কের পেছনে কাজ করেছে ম্যারিয়নের পুতুলসুলভ সৌন্দর্যের জন্যে মিজির উপহার, পার্টি, ফ্রি হলিডে আর অন্যান্য আরো অনেক কিছু।
ঘুমের মাঝেও অসম্ভব সুন্দরী দেখাচ্ছে ওকে। নরম সোনালি চুল ছড়িয়ে আছে ডেভিডের বুকে। মিটজি মনোযোগ দিল নিজের কাজিনের দিকে। অনুভব করল বুকের মাঝ থেকে পেট পর্যন্ত নেমে গেল মোলায়েম একটা অনুভূতি। ডেভিডের বয়স এখন সতেরো। কিন্তু ইতিমধ্যেই পূর্ণাঙ্গ পুরুষে রূপান্তরিত হয়েছে সে।
মনে মনে ভেবে দেখল যে ডেভিডই ছিল পুরো পৃথিবীতে তার সবচেয়ে পছন্দের জন। ও এতো সুন্দর, এত লম্বা, ঋজু, সুন্দর আর চোখ জোড়া তো হৃদয়কে ভেঙ্গে দিতে পারে।
রাতের উষ্ণতায় নিজেদের চাদর একপাশে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল জোড়া দেহ। ডেভিডের বুকে দেখা যাচ্ছে ঘন, গাঢ় আর কোঁকড়া চুল। পেশীবহুল হাত-পা, চওড়া বুক।
‘ডেভিড, আলতো স্বরে কাঁধ ঝাঁকালো মিটজি। ওঠো।
চোখ মেলে তাকাল ডেভিড। জেগে উঠল তৎক্ষণাৎ। হয়ে উঠল সচেতন।
‘মিটজি? কি হয়েছে?
‘প্যান্ট পড়ে নাও, বাছা। পাপা লাইনে তোমার অপেক্ষায়।
‘গড। উঠে বসল ডেভিড। বালিশে ফেলে দিল ম্যারিয়নের মাথা।
কয়টা বাজে?
‘অনেক। উত্তর দিল মিজি। তোমার উচিৎ অ্যালার্ম সেট করে ঘুমানো।
বিড়বিড় করে চাদরের খোঁজে হাত বাড়ালো ম্যারিয়ন।
‘ফোন কোথায়?
‘আমার রুমে–কিন্তু তুমি তোমার এক্সটেনশন লাইনে কথা বলতে পারো।
ব্যালকনির রেলিং টপকে ডেভিডের পিছুপিছু তার রুমে এলো মিটজি। শুটিসুটি মেরে উঠে বসল ডেভিডের বিছানায়। রিসিভার তুলে নিয়ে এক্সটেনশন কর্ডের সাথে ঘন কার্পেটের উপর অস্থিরভাবে পায়চারি শুরু করল ডেভিড।
‘আংকেল পল? কথা বলল ডেভিড। কেমন আছো তুমি?
গাউনের পকেটে হাত দিয়ে সিগারেট খুঁজে পেল মিটজি। সোনালি ডানহিল দিয়ে আগুন ধরালো। কিন্তু তৃতীয় বার টান দিতেই হাঁটা থামিয়ে কাছে এসে দাঁড়াল ডেভিড। হেসে মিজির দুঠোঁটের ফাঁক থেকে সিগারেট নিয়ে টান দিল গভীরভাবে।
ডেভিডের নগ্নতা তার উপর কী প্রভাব ফেলেছে লুকোতে চাইল মিটজি। আরেকটা সিগারেট খুঁজে নিল নিজের জন্য।
‘ও মরে যাবে আমি কী ভাবছি জানতে পারলে। মনে মনে বলল মিটজি। খানিকটা আনন্দ পেল এ ভাবনা থেকে।