প্রথমত, তার সাহস ছিল না। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ চিন্তিত ছিল সে। নিজেকে রক্ষা করাই তার প্রধান ধ্যান-জ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়।
দ্বিতীয়ত, অসম্ভব উচ্চাকাক্ষি লোক ছিল সে। লোভ ছিল অসীম ক্ষমতার। অ্যাটলাসকে নিজের বাহন হিসেবে ব্যবহার করেছিল সে। তার প্রথম লক্ষ্যই ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্সি। অ্যাটলাসের মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ধ্বংস করছিল সে। একবার প্রেসিডেন্সি পেলে যে কি করত–কেউ বলতে পারে না।
হাত মুঠো পাকাল কলিন।
জেরিকোতে, কিংস্টোন পার্কারের সাথে তোমার মোলাকাতের ব্যাপারে বেশ ক-জন কলকাঠি নাড়ছিল। বিভিন্ন দেশের।
বল ওকে, ম্যাগডা শান্ত স্বরে বলে। পুরোটা বল, কলিন। বেচারা বেশ দুর্বল। দ্রুত শেষ কর।
হ্যাঁ, কলিন সায় দেয়। গত দুপুরে, অ্যাটলাসের অধিনায়ক হিসেবে কিংস্টোন পার্কারের পর তোমার হওয়ার কথা গোপনে পাকা করা হয়েছে।
পিটারের কাছে এ যেন বহুকাল বন্ধ থাকা একটা দরজা খুলে যাওয়ার মতন। নিজের ভবিষ্যত দেখতে পারছে সে, ওই দরজার ওপাশে।
ওই পদের জন্যে শারীরিক সামর্থ এবং মানসিকতা মিলিয়ে তুমি যোগ্যতম লোক।
এমনকি নিজের দুর্বল, আহত শরীরেও শক্তির জোয়ার অনুভব করে পিটার। যেন আজকের মতো কোনো সময়ের জন্যেই ওর মধ্যে সঞ্চিত ছিল এই শক্তি।
অ্যাটলাসের কমান্ড নেবে তুমি? কলিন বলে। কি উত্তর নিয়ে যাব আমি, তোমার পক্ষ থেকে?
ম্যাগডার লম্বা আঙুলগুলো পিটারের কাধ আঁকড়ে ধরে রাখে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার সিন্ধান্ত জানায়। সাথে সাথেই উত্তর দেয় পিটার। আর কোনো পথ যে নেই–ওটাই তার নিয়তি।
আমি রাজি, পরিষ্কার, দৃঢ়স্বরে জানায় সে। তুমি ওদের বলতে পারো, এই দায়িত্ব নিলাম আমি।
আরাধ্য একটি মুহূর্ত। দীর্ঘ একটা সেকেন্ড কেউ হাসে না, কথাও বলে না। আর তারপর, আস্তে আস্তে ম্যাগডা বলে, খলিফা মারা গেছে। সে দীর্ঘজীবী হোক!
মাথা উঁচিয়ে তাকে দেখল পিটার স্ট্রাইড। কণ্ঠস্বরে বরফের শীতলতা।
জীবনে কখনো ওই নামে ডাকবে না আমাকে! বলল সে।
আলতো করে মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দেয় ম্যাগডা, পরিপূর্ণ দৃষ্টিতে পিটারের পানে তাকিয়ে গাঢ় চুমো খায় ওর ঠোঁটে।