“লিয়ার এখন পুরোপুরি অকেজো। মিসাইল স্ট্রাইকের পরে ডিসি এ পুরো এয়ারফ্রেম পাল্টে আকাশে উড়ার উপযোগী হবার সার্টিফিকেট চাইছে।
“কত দ্রুত, গ্যারি?” চাপ দিল শন; চিন্তায় পড়ে গেল গ্যারি, “কুইন এয়ার বেশ ধীর গতির হলেও জোহানেসবার্গের শিডিউল ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে তাড়াতাড়ি হবে। অন্তত সোজা ক্যাপরিকর্ণের এয়ারস্ট্রিপে নামা যাবে। যদি ঘণ্টাখানেক পরেই রওনা হতে পারি তাহলে বিকেল নাগাদ পৌঁছে যাবো।”
“পুলিশকে জানাতে হবে না?” শাসার প্রশ্ন শুনে অধৈর্যভাবে নিজের লাঠি ঠুকলেন সেনটেইন। “নো পুলিশ। এখনি না আর যদি আমরাই সামাল দিতে পারি। তাহলে কখনোই না। তারা’র কালো বদমাশটাকে ধরে দরকার হলে সত্যিই ওর পেট থেকে বের করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন পরিবারের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে পুরো ব্যাপার।” টেলিফোনের শব্দে থেকে গেলেন বৃদ্ধা।
রিসিভার তুলে কয়েক সেকেন্ড ওপর প্রান্তের কথা শুনল গ্যারি। তারপর উত্তর দিল : “আই সি, থ্যাঙ্ক ইউ পল। আমি এখনি প্লেনে উঠছি। দুপুর একটার মাঝে ক্যাপরিকর্ণের এয়ারস্ট্রিপে থাকব।” ফোন রেখে উদ্বিগ্ন চেহারাগুলোর দিকে তাকাল গ্যারি। “ছোট্ট পাখি খাঁচা ছেড়ে উড়ে গেছে। গত চারদিন ধরে বেনজামিন আফ্রিকা প্ল্যান্টে আসছে না। কেউ জানে না কী হয়েছে। কিংবা কোথায় আছে জানতে চাইলেন শাসা।
“ওরা এখনো চেক করছে। আমরা ক্যাপরিকর্ণে ল্যান্ড করার মধ্যে পেয়ে যাবে।” জানাল গ্যারি। “বাবা আর নানা এখন তোমরা ওয়েল্টেভ্রেদেনেই থাকো। যদি কিছু জানাতে চাও তো জ্যান সুটস্ এয়ারপোর্ট কন্ট্রোলে টেলিফোন করলে ওরা আমার কাছে রিলে করে দিবে।” ভাইয়ের দিকে তাকাল গ্যারি। “শন আমার সাথে আসুক। মনে হচ্ছে বাহুবলের দরকার পড়তে পারে।”
বাবার সামনে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল শন। “গান সেফের চাবি দাও, বাবা?”
শাসা চাবি দিতেই তালা খুলে ফেলল শন। হাট করে খুলে গেল ভারী স্টিলের দরজা।
সেফের ভেতরে ঢুকে রিভলবার আর পিস্তলের তাকগুলোকে খানিক পরীক্ষা করে তুলে নিল পয়েন্ট ৩৫৭ ম্যাগনাম স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন রিভলবার। এক প্যাকেট গুলিও নিয়ে জিন্সের বেল্টে গুঁজে নিল রিভলবার।
“আমারও একটা নেয়া উচিত” সেফে ঢুকে পড়ল গ্যারি।
“গ্যারি” পেছন থেকে বলে উঠল বেলা, “আমিও যাবো তোমাদের সাথে।”
“ভুলে যাও, যা বলেছ।” হেকলার অ্যান্ড কোর্চ ৯ মিলিমিটার বেছে নিতে ব্যস্ত গ্যারি মুখ ফিরিয়ে বোনের দিকে তাকালো না পর্যন্ত। “ঐ ব্যাপারে তোমার আর করার কিছু নেই।”
“হ্যাঁ আছে। তুমি জানোনা বেন দেখতে কেমন। আমি ওকে দেখলেই চিনে ফেলব-আর আরেকটা কথা বাকি আছে, যা আমি এখনো তোমাদেরকে বলিনি।
“তো এখন বলো”।
“আমাকে সাথে নিলে যেতে যেতে বলব।”
***
টুইন ইঞ্জিন বীচ ক্রাফট কুইন এয়ারের হেডিং উত্তরদিকে ঠিক করে নিল গ্যারি। এরপর নিজের সিটে বসেই তাকাল মেইন প্যাসেঞ্জার কেবিনে বসে থাকা বেলা’র দিকে।
সিট বেল্ট খুলে ককপিটে উঠে এলো বেলা। গ্যারির সিটের উপর ঝুঁকে তাকাতেই শুনতে পেল ভাই বলছে,
“ওকে বেলা। এবারে তাহলে ঝটপট বলে ফেলো আর কী বলতে চাও।”
কো-পাইলটের সিটে বসে থাকা শনের দিকে তাকাল বেলা। “সে রাতের কথা মনে আছে যখন চিকাম্বা নদী তীরে নিকি হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যেতে চাইল আর তুমি আর আমি মিলে তাকে ধরে ফেললাম?”
শন মাথা নাড়তেই বেলা বলে চলল, ফাস্ট ট্রাকের গেরিলা অফিসারটার কথা মনে আছে যে রোড ব্লক সুপারভাইজ করছিল? যাই হোক, আমি লোকটাকে দেখেই বুঝতে পেরেছি যে আগেও তাকে দেখেছি। আমি তখন পর্যন্ত নিশ্চিত হলেও এখনকার মতো গুরুত্ব দিয়ে আর ভাবিনি।”
“কবে আর কোথায় দেখেছিলে?”
“বেনের সাথে ছিল-কিন্তু যাচ্ছিল ফারগ্রোভে মাইকেলে’র ফার্মে।”
“মাইকেল?” বেলা’কে থামিয়ে দিল গ্যারি, “আমাদের মাইকেল?”
“হ্যা” ঘোষণা করল বেলা, “মাইকেল কোর্টনি।”
“তোমার ধারণা এসবের মাঝে মাইকেলও জড়িত আছে?”
“হ্যাঁ, তাই যদি না হয় তো এএনসি টেরোরিস্ট কমান্ডার আর বেনের সাথে কী করছিল সে?”
খানিকক্ষণের জন্য চুপ করে গেল সকলে। আর তারপর বেলা আবারো শুরু করল : “গ্যারি তুমি নিশ্চয় ভাবছ যে বেন সিনডেক্সের একটা কী দুটো সিলিন্ডার চুরি করেছে? যদি সে টেরোরিস্টদের সাথে মিলেও যায় তাহলে এটা কিভাবে ব্যবহার করবে? নিশ্চয়ই কোনো এয়ারক্রাফট থেকে স্প্রে করবে?”
“হ্যাঁ, এটা ঘটার সম্ভাবনাই বেশি।”
“ফারগ্রোভে মাইকেলের প্লেন আছে।”
“ওহ শিট” ফিসফিস করে উঠল গ্যারি, “প্লিজ, এমনটা যেন না হয়। মিকি নয়–অন্তত মিকি নয়।”
“মাইকেল গত কয়েক বছর ধরেই এসব ছাইপাশ পাবলিস করছে আর এ কারণে নিশ্চয় এ ভূতগুলোর সাথেও হাত মেলাতে হয়েছে।” কঠোর হয়ে উঠল শনের চেহারা।
বাকিরা কেউই কোনো উত্তর দিল না। বদলে গ্যারি বলে উঠল, ‘বেলা, আমাদের প্রত্যেকের জন্য কোক নিয়ে এসো, প্লিজ।”
বারের রেফ্রিজারেটরে গিয়ে দুটো ক্যান নিয়ে এলো বেলা। কোক শেষ করার পর ক্যান নামিয়ে শন্ মোলায়েম স্বরে জানাল, “আজ সকালে দেখছি র্যান্ড ইস্টার শো শুরু হলো।” ভাইয়ের দিকে তাকাল গ্যারি।
“এর সাথে ওটার কী সম্পর্ক?”।
“কিছুই না” গ্যারি’র দিকে তাকিয়ে হাসল শন। “এই শো’তে এক জায়গাতেই জড়ো হয় হাফ মিলিয়ন লোক। ইন্ডাস্ট্রির সমস্ত পণ্য, কৃষক আর ব্যবসায়িদেরকে দেখানো হয়-গয়না বিক্রেতা, টেইলর এমনকি ইন্ডিয়াল চিফ পর্যন্ত থাকে। সন্ধ্যা আটটায় গ্র্যান্ড অপেনিং হবার কথা। সাথে থাকবে ফায়ারওয়ার্কস ডিসপ্লে, মিলিটারি ট্যাটু আর স্টক কার রেসিং। বক্তব্য দেবেন প্রাইম মিনিস্টার। সাথে থাকবে কালো স্যুট পরা সব হোমড়া-চোমড়া। হেল, এর মানে তো কিছু নয়, তাই না।”