“চুপ করে আছে কেন? বলো” সাপের মতো ফণা তুললেন সেনটেইন।
“সিনডেক্স-২৫” উচ্চারণ করল বেলা।
“ওহ্ গড!” মনে হল যেন দম বন্ধ হয়ে মারা যাবেন শাসা।
“এই কারণেই নিকি’র কাছে যেতে পেরেছি এবার-সিনডেক্সের বিস্তারিত বিবরণ আর বেন।”
“বেন?” নিজের চেয়ারে সোজা হয়ে বসল গ্যারি। “বেন কে?”
“বেন গামা” কর্কশ স্বরে জানালেন সেনটেইন, “তারা’র লিটল ব্ল্যাক বাস্টার্ড, মোজেস গামা’র ছেলে। যে লোকটা আমার ব্লেইনকে মেরে ফেলেছে, এই পরিবারকে কলঙ্কিত করেছে।” ইসাবেলার দিকে তাকালেন সেনটেইন।
“হ্যাঁ, নানা। আমার সৎ ভাই বেন।” ভাইদের দিকে তাকাল বেলা, “তোমাদেরও সৎ ভাই। শুধু পার্থক্য হলো এখন আর নিজেকে বেন গামা বলে না; ওর নাম এখন বেনজামিন আফ্রিকা।”
“এই নাম জেনে আমি কী করব?” জিজ্ঞেস করল গ্যারি। “কারণ ও তোমার জন্যই কাজ করে।” জানাল বেলা। “ওরা আমাকে দিয়ে বেনের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করেছে। লন্ডনে থাকার সময়েই ওকে আমি ক্যাপরিকর্ণে নিয়োগ দিয়েছি। পয়জনস ডিভিশনে ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের কাজ করছে।”
“সিনডেক্স প্ল্যান্টে?” বিশ্বাস করতে পারছেন না শাসা। “তুমিই তাকে এখানে ঢুকিয়েছো?
“হ্যাঁ, বাবা।” আবারো ক্ষমা চাইতে গিয়ে দাদিমার মুখের দিকে তাকাল বেলা।
লাফ দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েই জেস্কর দিকে দৌড় দিল গ্যারি। টেলিফোন তুলে নিয়ে কথা বলল ওয়েল্টেভ্রেদেনের একচেঞ্জের সঙ্গে।
“ক্যাপরিকর্ণ কেমিকেলসে ফোন করতে চাই-নাম্বার আছে তো, তাই না? এক্ষুণি আমি ম্যানেজিং ডিরেকটরের সাথে কথা বলতে চাই-খুব দরকার, আর্জেন্ট। লাইনে পাবার সাথে সাথে আমাকে ফোন করবে।”
টেলিফোন আবার আগের জায়গায় রেখে দিল গ্যারি। “বেন’কে এখনি ধরতে হবে। তারপর জিঙ্গাসাবাদ করতে হবে। যদি ওরা তাকে প্ল্যান্টে ঢুকিয়ে থাকে নিশ্চয় এর পেছনে কোনো জঘন্য কারণ থাকবে।”
“ও তাদেরই একজন।” ক্ষেপে গিয়ে চিৎকার করে উঠলেন সেনটেইন। কেউই এর আগে কখনো বৃদ্ধার কণ্ঠস্বরে এতটা তিক্ততা কিংবা চেহারাতে এতটা ঘৃণা দেখেনি। আতঙ্ক নিয়ে সবাই সেনটেইনের দিকে তাকিয়ে রইল। “ও’ ও সেসব ধ্বংসকারী বিপ্লবীদের একজন। ওই কালো শয়তানটা ওর বাবা আর এত বছর ধরে তারা ওর মানসিক জগৎ দখল করে থাকাতে ও ওদের না হয়ে আর পারেই না। এটা ঈশ্বরেরই ইচ্ছে যে বদমাশগুলোর ভয়ংকর কোন বদমতলব থাকলেও আমরা তা নসাৎ করে দেব।”
ব্যাপারগুলো কল্পনা করে শিউরে উঠল উপস্থিত সকলে। বুঝতে পারলো কতটা নিষ্ঠুর এরা।
টেলিফোনের শব্দে সবার ঘোর কাটতেই ছোঁ মেরে রিসিভার তুলে নিল গ্যারি। “আমি ক্যাপরিকর্ণের ম্যানেজিং জিরেকটর’কে লাইনে পেয়েছি।”
“গুড। হ্যালো পল। থ্যাঙ্ক গড় যে তোমাকে পেয়েছি। হোল্ড অন ওয়ান সেকেন্ড” বলেই টেলিফোনের কনফারেন্স কী চেপে ধরল গ্যারি। ফলে রুমের সবাই শুনতে পেল পুরো আলাপচারিতা।
“শোন পল, পয়জনস্ ডিভিশনে তোমার একজন কর্মচারী আছে, নতুন কীটনাশক প্ল্যান্টে, বেনজামিন আফ্রিকা।”
“ইয়েস, মিঃ কোর্টনি, আমি ওকে ব্যক্তিগতভাবে না চিনলেও নামটা পরিচিত। হোল্ড অন, ওর উপরে কম্পিউটার প্রিন্ট নিয়ে আসি। ইয়েস, পেয়েছি, বেনজামিন আফ্রিকা। এপ্রিলে জয়েন করেছে।”
“ও’কে পল। কোম্পানির সিকিউরিটি গার্ডস দিয়ে ওকে এখনি অ্যারেস্ট করাও। তবে খেয়াল রাখবে যেন কোথাও যোগাযোগ করতে না পারে। বুঝতে পেরেছ? কোনো ফোন কল, ল, ইয়ার, প্রেস কিছু না।”
“সত্যি এটা করব মি: কোর্টনি?”
“আমি যা করতে চাই তাই আমি পারব, পল। এটা মাথায় রাখবে সবসময়। এখন ওকে অ্যারেস্ট করার অর্ডার দাও। আমি লাইনে অপেক্ষা করছি।”
“দুই সেকেন্ড লাগবে মাত্র।” সম্মত হলেন ম্যানেজিং ডিরেকটর। ফোনের এ পাশ থেকে গ্যারি শুনল ইন্টারন্যাল সার্কিটে সিকিউরিটির সাথে কথা বলছেন ভদ্রলোক। “অল রাইট মিঃ কোর্টনি, ওরা আফ্রিকাকে গ্রেফতার করতে যাচ্ছে।”
“এখন শোন, পল, সিনডেক্সম্যানুফ্যাকচারির প্রোগ্রামের বর্তমান অবস্থা কী? সেনাবাহিনীর কাছে পাঠানো শুরু করেছ?”
“এখনো না, মি: কোর্টনি। আমাদের প্রথম শিপমেন্ট যাবে পরবর্তী মঙ্গলবার। সেনাবাহিনী নিজেদের ট্রাক পাঠাবে।”
“ওকে পল। এ মুহূর্তে তোমার হাতে কতটুকু স্টক আছে?”
“আচ্ছা, কম্পিউটার চেক করে দেখছি। এই মুহূর্তে পাঁচ কিলো আর্টিলারী ক্যানিস্টারের মাঝে ৬৩৫টা ফর্মুলা এ আর বি আছে। এছাড়া পঞ্চাশ কিলো এরিয়াল সিলিন্ডারের মাঝে উভয় ফর্মুলাই আছে ছাব্বিশটা করে। আগামী সপ্তাহ শেষে এয়ার ফোর্সের কাছে”।
পলকে থামিয়ে দিল গ্যারি। “পল, আমি প্রতিটি ক্যানিস্টার আর সিলিন্ডারের হিসাব চাই। তোমার কয়েকজন সিনিয়র কর্মীকে এখনি স্টোরেজ এরিয়াতে পাঠিয়ে দাও যেন প্ল্যান্ট ম্যানিফেস্টের সাথে মিলিয়ে দেখে প্রতিটা সিরিয়াল নাম্বার আর এক ঘণ্টার মধ্যেই এ কাজ শেষ হওয়া চাই।”
“কোথাও কোনো সমস্যা হয়েছে মিঃ কোর্টনি?”
“তুমি তোমার স্টকের হিসাব জানালেই তোমাকে জানাব আমি। এই নাম্বারেই অপেক্ষা করছি। যত দ্রুত সম্ভব আমাক জানাও-অথবা পারলে তার চেয়েও দ্রুত।”
গ্যারি ফোন রাখার সাথে সাথেই জানতে চাইল শন্ : “তুমি আমাদেরকে কত দ্রুত ক্যাপরিকর্ণে পৌঁছে দিতে পারবে?”