লেগ্রাঞ্জ ইঞ্চবার্ডের দিকে তাকালো। “এ কি তোর বৌ? নাকি বেশ্যা?”
“একজন যাত্রী,” দাঁতে দাঁত চেপে বললো ইঞ্চবার্ড। ওনাকে ছেড়ে দিন হুজুর।”
“সেটা নির্ভর করবে ও আমাকে কেমন মজা দেয় তার উপর।”
দুজন লোক একটা লোহার তেপায়ার উপর একটা ব্রেজিয়ার নিয়ে এলো। ভিতরে কয়লা সামান্য আভায় জ্বলছে। লেগ্রাঞ্জ ওগুলোকে নিজের তরবারি দিয়ে নাড়তে লাগলো। একটু পরেই তরবারির ডগাটা গনগনে লাল হয়ে গেলো। তারপর ধোঁয়া ওঠা তরবারিটা তুলে এনে মেয়েটার উপর ধরে রাখলো। মেয়েটার চোখের দিকে তাকালো আবার। এখন আর সেখানে কোনো প্রতিরোধ নেই, আছে নিখাদ আতংক।
লেগ্রাঞ্জের ঠোঁটে একটা চিকন হাসি দেখা গেলো। ও তরবারিটা ঠিক মেয়েটার উরুর সংযোগস্থলের কাছাকাছি নামিয়ে আনলো। শরীরের মাত্র কয়েক ইঞ্চি উপরে হবে। মেয়েটা এক ফোঁটা নাড়াচাড়া করছে না। তরবারির ছোঁয়া লাগার ভয়ে মোচড়ামুচড়ি দূরে থাক যেনো নিঃশ্বাস নিতেও ভুলে গিয়েছে। তরবারিটা থেকে তখনও ধোঁয়া উড়ছে।
লেগ্রাঞ্জ তরবারিটা আরো খানিকটা নামানো শুরু করতেই মেয়েটা আকাশ বাতাস ফাটিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে ছিলো ধোঁকাবাজি। এখন তরবারিটা মাত্র এক চুল উপরে বলা যায়। লেগ্রাঞ্জ হেসে উঠলো। ওর অত্যাচারে দাসী মেয়েটা মারা যাওয়ার পর থেকে অনেক দিন ও এরকম মজা করার সুযোগ পায় না।
“সব নিয়ে নিন,” অনুনয় করলো মেয়েটা। “জাহাজ, স্বর্ণ, যা ইচ্ছা নিয়ে নিন।”
“নেবো,” লেগ্রাঞ্জ কথা দিলো। “কিন্তু তার আগে একটু মজা না করলে হয়!” তরবারির মাথাটা ততোক্ষণে ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছে। ও আবার সেটাকে ব্রেজিয়ারে ঠেসে দিলো। এবার আগের চাইতেও গরম হলে তারপর বের করে মেয়েটার চোখের সামনে ধরে রাখলো। মেয়েটার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গড়িয়ে পড়তে লাগলো। “দেখতে পাচ্ছিস এটা? এটায় তুই মরবি না। কিন্তু আমি তোকে এমন শিক্ষা দেবো যা তুই কোনোদিন কল্পনাও করিসনি।”
“নরকের কীট, তুই নরকেই যা,” হিসিয়ে উঠলো মেয়েটা।
ওর কথা লেগ্রাঞ্জকে বরং আরো বেশি উসকে দিলো। ওর এরকম তেজী মেয়েই পছন্দ-যখন শেষ পর্যন্ত ও হাল ছেড়ে দেবে তখনকার তৃপ্তির সাথে আর কিছুর তুলনা হয় না। ও নিজের ঠোঁট চাটতেই রক্তের স্বাদ পেলো। নিচের তলা থেকে চিৎকার আর হাতাহাতির আওয়াজ শোনা গেলো, কিন্তু লেগ্রাঞ্জ তখন এই খেলায় এতো বেশি মজে ছিলো যে অন্য কোনো দিকে মনোযোগ দেওয়ার ফুরসত ছিলো না। ভাবলো ওর লোকেরা হয়তো লুটের মাল নিয়ে ঝগড়া করছে। ওদেরকে পরে সামলানো যাবে।
ও নিজের খালি হাতটা দিয়ে মুখটা মুছে নিয়ে নরম সুরে বললো, “তোকে আমি একটু একটু করে পোড়াবো, বুঝলি মাগী? পুরো শরীরে হ্যাঁকা দেবো। তারপর তোকে ভোগ করে আমার লোকেদের মাঝে ছেড়ে দেবো। ওরা তোকে নিয়ে তখন যা ইচ্ছে করবে।”
*
“দাঁড় ওঠাও,” শান্ত স্বরে আদেশ দিলো টম। সেন্টারাসের ডিঙ্গি নৌকাটা দস্যুদের জাহাজের কালো শরীরের নিচে আসতেই আটটা দাঁড়ের সবগুলো উঠে গেলো নৌকার ভিতরে। টম আস্তে নৌকার হাল ঘুরিয়ে দিলো। ও একবারের জন্যেও উপরে তাকালো না। সমস্ত মনোযোগ নিপে নৌকাটা জাহাজের সমান্তরালে নিয়ে আসা। নৌকার সামনে বসে আবোলি আর ডোরিয়ান ফাইটিং কক-এর ডেক-এর দিকে নিজেদের মাস্কেট তাক করে রেখেছে। কিনার থেকে দেখা গেলো একটা কামান বিপজ্জনক ভঙ্গিতে ওদের দিকে তাক করে আছে। যদি দস্যুদের জাহাজে একজন দস্যুও থেকে থাকে, তাহলে সে এটা দিয়ে নৌকার সবাইকে ভর্তা বানিয়ে ফেলতে পারবে।
টম ঘাড় ঘুরিয়ে সেন্টারাস-এর দিকে তাকালো। এখান থেকে আধা মাইলটাক দূরে দাঁড়িয়ে আছে। দস্যুরা ওটাকে খেয়াল করেনি করলেও এখন লুটতরাজ নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত যে ওটার দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। সারাহ আর ইয়াসমিনির সাথে মাত্র দুজন লোককে রেখে এসেছে ও। ওরা যদি এখানে ব্যর্থ হয়, তাহলে মেয়ে দুটোর কপালে শনি আছে। ও জোর করে চিন্তাটা সরিয়ে দিলো।
ডিঙ্গি নৌকাটার গলুই দস্যুদের জাহাজের গায়ে ঘষা খেলো। হালকা খসখস শব্দ হলো শুধু। আবোলি জাহাজে ওঠার সিঁড়িটা আঁকড়ে ধরে উপরের দিকে ইশারা করলো। টম মাথা নেড়ে জানালো যে কেউ নেই। পানির কাছাকাছি জাহজের খোলে একসারি খুপরি দেখা গেল। কামানের খোপ হিসেবে খুব নিচু ওগুলো। টম বুঝলো ওগুলো সম্ভবত বাতাস চলাচলের জন্যে বানানো হয়েছে। জাহজটা যখন দাস আনা নেওয়া করতো তখন কাজে লাগতো।
টম বেল্ট থেকে নিজের ছুরিটা খুলে নিয়ে হাতের কাছের খুপরিটার জোড়া লাগানো জায়গাটায় ঢুকিয়ে চাড় দিলো। যখন দাসেরা এখানে থাকতো তখন এটাকে ভিতর থেকে হুড়কো টেনে বন্ধ করে দেয়া হতো। কিন্তু দস্যুদের এসব ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই। ওর ছুরির ফলা ভিতরের হুড়কোয় স্পর্শ করলো। ও ছুরিটা উপর দিকে চাড় দিলো।
হুড়কো খুলে পড়ে গেলো। খুপরিটা খুলে ভিতরের আলো আধারিতে উঁকি দিলো টম। কেউ ওর দিকে তেড়ে এলো না। আবোলি নৌকাটা স্থির করে ধরে রাখলো, আর ও দেহটা বাকিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলো। বাকিরাও অস্ত্র হাতে ওর পিছু নিয়ে ভিতরে ঢুকলো। আবোলির অবশ্য ওর দশাসই শরীরটা নিয়ে ঐ ছোট ফুটো দিয়ে ঢুকতে কষ্ট হলো।