প্রচুর জনসমাগম ঘটল লুক্সরে। তবে সৌভাগ্যই বলতে হবে, কারণ প্রাক্তন ফারাও উটেরিক টুরো যে সম্পত্তি এবং পদমর্যাদা আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তার সব কিছু আবার এই সময়েই আমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ফারাওইন সেরেনা। ফলে আরো একবার আমি টাইটা পরিণত হলাম মিশরের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে। দেরি না করে আমার প্রাসাদ এবং অন্য যে বাড়িগুলো ছিল সেগুলো ছেড়ে দিলাম রাজা হুরোতাস আর রানির জন্য। অন্য মিত্র রাজারাও আশ্রয় পেল সেখানে।
একই সাথে ফারাও রামেসিসের মন্ত্রিসভার প্রধানমন্ত্রী এবং অধ্যক্ষ হিসেবেও নিয়োগ পেলাম আমি। মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়ার জন্য উটেরিক যে বত্রিশজন ব্যক্তিকে দুঃখ-দুর্দশার ফটকে অর্থাৎ আনন্দের বাগানে পাঠিয়েছিল তাদের প্রায় সবাই জায়গা পেল রামেসিসের মন্ত্রিসভায়। আমার পরামর্শ অনুযায়ী তাদেরকে আনন্দের বাগান থেকে লুক্সরের প্রাসাদে ডেকে পাঠাল রামেসিস। আনন্দে প্রায় নাচতে নাচতে শহরে প্রবেশ করল তারা, এবং কোনো ঝামেলা ছাড়াই সরকার ভবনে নিজ নিজ জায়গা বুঝে নিল। এখানে আমার নেতৃত্বে কাজ করবে সবাই।
মন্ত্রিসভার প্রধান অধ্যক্ষ হিসেবে ফারাও ও ফারাওইনের আনুষ্ঠানিক অভিষেকের দায়িত্ব আমার ওপরেই পড়ল। বিজয়ীর বেশে লুক্সরে প্রবেশের ছয় মাস পর ফারাও রামেসিস ও ফারাওইন সেরেনা ক্লিওপেট্রাকে তাদের নিজ নিজ আসনে আনুষ্ঠানিকভাবে অধিষ্ঠিত করলাম আমি। এই উপলক্ষে প্রাসাদের বিশাল দরবার কক্ষে জড়ো হলো প্রায় চার শ অতিথি। ভূমধ্যসাগরের মাঝে ছড়িয়ে থাকা চৌদ্দটা রাজ্যের রাজা এবং অন্য মিত্ররাও রইল সেই অতিথিদের মাঝে।
পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় দুটো মানুষের মাথায় সোনালি রাজমুকুট পরিয়ে দিলাম আমি। আবারও নিজের সেই সম্মান আর মর্যাদা ফিরে পেয়েছে মিশর- এই ভেবে এক টুকরো হাসি ফুটে উঠল আমার ঠোঁটে।