পোয়ারো বলল–সে খুনীকে প্রায় ধরে ফেলেছে এবং হীরের ব্যাপারও জানালো। তারপর মিঃ সাইমন লীর যুবক অবস্থার ছবি চাইল।
.
০৬.
২৭শে ডিসেম্বর।
সলিসিটার মিঃ চার্লটন এসে উইলের কথা জানালো। এতে জানা গেল পরিবারের সকলে নিজেদের প্রাপ্য পেয়েছে বাদ পড়েছে কেবল পিলার। সকলে নিজেদের প্রাপ্য থেকে পোয়ারোকে দিতে রাজী হল। জর্জ লী তাকে পোষাকের জন্য কিছু দিতে রাজী হল। মনের দুঃখে সে ঘর ছেড়ে চলে গেল।
খাওয়া-দাওয়ার পর অ্যালফ্রেড আর তার স্ত্রী পিলারকে তার সম্পত্তির ভাগ দিতে চাইল কিন্তু পিলার তা নিতে চাইল না।
ঠিক সেই সময় ট্রেসিলিয়ান পোয়ারোকে জানালো দরজার ধারে দুটো বড় ভারী পাথর ছিল তার একটা পাওয়া যাচ্ছে না। আর তার পর সাগডেন এসে জানালো স্টিফেন ফার মারা গেছে দুবছর আগে এখানে যে এসেছে সে মিথ্যে বলেছে।
তারপরই শোনা যায় একটা আর্তনাদ। ওপরে গিয়ে জানা গেল যে পাথরের বলটা পাওয়া যাচ্ছিল না সেই বলটা পিলারের দরজার উপরে রাখা ছিল তাকে খুন করার জন্য কিন্তু পেরেকে আর স্কার্টটা আটকে যায় তার ফলেই সে বেঁচে যায়।
পোয়ারো সকলকে একত্র হতে বলে আর সেই সময় স্টিফেন জানায় তার আসল পরিচয়। তার নাম স্টিফেন গ্রাণ্ড, স্টিফেন ফার তার বন্ধু ছিল তার কাছ থেকেই সাইমন লীর কথা আর ট্রেনে মিস পিলারের ব্যাগে এখনকার ঠিকানা দেখে সে চলে আসে।
পিলার বলল, সে আসলে পিলার নয়। বলল, গাড়িতে পিলারের সঙ্গে তার আলাপ। বোমায় পিলার মারা যায় কিন্তু তার কিছু হয়নি। আগেই সে শুনেছে পিলারের সব কথা আর তাদের পাশপোর্টের ফোটো একরকম তাই চলে এসেছে এখানে, তবে সে শপথ করে জানায় যে খুন। বা চুরি কিছুই করেনি।
পোয়ারো সকলকে সন্দেহ করতে করতে আসল কথায় আসে–এ খুন স্টিফেন বা পিলার কেউই করেনি। এ খুন করেছে রক্তের একজন। তারপর পোয়ারো সাগডেনকে বলে–আপনার মা টাকার জন্য সাইমন লীকে ছেড়ে অন্য লোককে বিয়ে করতে বাধ্য হন আর তার সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই আপনি এই খুন করেন।
কিন্তু আমি যখন যাই তখন তিনি জীবিত।
তিনি তখন জীবিত কী মৃত কেউই তা দেখতে যায়নি। আপনাকে মিঃ লী ফোন করেননি বরং আপনিই তাকে মিথ্যে হীরে চুরির গল্প বলে আপনি এখানে আসেন তারপর দেখেন আসল হীরে আলমারীতে। তারপর ফায়ার প্লেসের সামনে আপনারা বসে কথা বলেন আর তখনই আপনার আসল পরিচয় জানান লীকে। এবং তখনই তার কণ্ঠনালী কেটে তাকে মেরে ফেলেন সঙ্গে করে দড়ি নিয়ে এসেছিলেন যা দিয়ে ঘরের সব আসবাবপত্র বাঁধেন এবং একটা বোতলে জানোয়ারের রক্ত নিয়ে এসেছিলেন সেটাকেও দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে যান। দড়িটাকে জানলে দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে হীরেগুলো চুরি করে নিয়ে বাগানে সাজিয়ে রাখেন। যাতে চোর ও খুনী বাড়ির কাউকে মনে করে। এরপর চলে যাওয়ার সময় ঘরের দরজা বাইরে থেকে লক করে রেখে যান যাতে কেউ ঘরে ঢুকতে না পারে। তারপর সোয়া নটা নাগাদ এসে জানালা দিয়ে দড়ি টেনে সব জিনিষগুলো ফেলে দেন। আর একটা বেলুন রেখে যান যেটাতেও একটা দড়ি বাঁধা থাকে–যেটার দড়ি ফেলার সাথে ঐ বিকট আওয়াজ বেরিয়ে আসে। আমি মিঃ লীর ছবি নিয়ে গিয়ে তাতে নকল গোঁফ লাগিয়ে দেখি তার সাথে আপনার মুখের হুবহু মিল। আর পিলারও আপনাকে একই কথা বলেন, আর প্রথমে ওর বেলুনে রবারের ছিপি দেখে পিলার। তাই যদি আরো কিছু বলে দেয় তাই আপনি তাকেও মারার চেষ্টা করেন। এসব কথা শুনে সাইমন বলে হ্যাঁ, আপনার কথা সত্যি আমিই তাকে খুন করেছি। আমি এর জন্য নিজেকে অপরাধী বলে মনে করি না। আমি এর জন্য খুব খুশী, সত্যিই খুশী। এখানে মি সাইমন লীর আর্তনাদ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে।
মিঃ জর্জ লী বলেন এটা একটা মানুষের আর্ত চিৎকার।
মিসেস জর্জ লী আর মিঃ ডেভিড বলল, এটা এমন একটা চিৎকার যার আত্মা নেই।
মিসেস ডেভিড লী বলেন একটা নারকীয় চিৎকার শোনা গেল।
মিঃ এণ্ড মিসেস অ্যালফ্রেড লী বলেন এই চিৎকার এক জানোয়ারের। মিঃ হ্যারি লী তিনি খুব কাছাকাছি গেছেন, তিনি বলেন এই চিৎকার শুনে মনে হয়েছিল শূকরছানার চিৎকার। আর মিস পিলার এমনই একটা বেলুন মেলায় কেনেন, আর তখনই আমার সন্দেহ বাস্তব রূপ পায়।