ডেভিড লীকে তারা সন্দেহ করছে এই ভেবে যে, সে তার মার মৃত্যুর ঘটনা ভুলতে পারছে না। তাই হয়তো…
তারা আলোচনা করতে করতে বলল, বিকেলে পারিবারিক মিলননোৎসবে সকলে যখন একত্র হবার পর চলে যাচ্ছিল তখন হিলডা কিছুক্ষণের জন্য ঘরে ছিল। তার পর আসে অ্যালফ্রেডও আর তার পর আসে হ্যারি। এরপর সে ফোন করে সাগডেনকে। হয়তো রাত আটটার পর সে আসল চোরকে ধরতে পারে মিঃ অথবা মিসেস জর্জ আবার পিলারও হতেপারে। তার বাবাও একজন অপরাধী আর তার জন্য সেও অপরাধ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়, এবং ঐ বৃদ্ধকে খুন করতে বাধ্য হয়।
সাগডেন শহরের লোকের মতামত বলতে গিয়ে জানালো তারা বলছে মিঃ সাইমন লীর অনেক মেয়েকে বিয়ে করে আর সেই স্ত্রীকে পরে টাকা দিয়ে ছাড়ে এজন্য তার স্ত্রী ভগ্ন হৃদয়ে মারা যান। এই প্রতিশোধ নিতে গিয়েই হয়তো কোনো ছেলে তাকে খুন করে।
পোয়ারো একটা কথা বলতে গিয়ে থামল। তাদের দিকে হিলডা আসছে। সাগডেন বাড়ির ভেতরে চলে গেল।
হিল পোয়ারোকে বলল, আপনাকে দেখে আমার সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলে মনে হয়েছে, আর মনে হয়েছে আপনিই আমাকে সাহায্য করতে পারতেন। আমার স্বামী মায়ের ভক্ত। বলে সে স্বামীর মনোভাবের কথা, বাবার ওপর ডেভিডের মনোভাবের কথা জানালো। সে বলল, তার স্বামী তার বাবাকে সহজেই খুন করতে পারে কিন্তু সেই সময় সে পিয়ানো বাজাচ্ছিল।
এই কথা বলতে বলতে উপস্থিত হল ডেভিড। সে হিলডাকে নিয়ে গেল খ্রীস্টমাসের আনন্দ উৎসব দেখতে।
বাগানে হাঁটতে হাঁটতে তার দেখা হল লিডিয়ার সঙ্গে। সে জানালো তার স্বামী তার সাথে দেখা করে যায়। এখন সে ঘুমোচ্ছে তাই একটু পরই পোয়ারোর সাথে সে দেখা করবে।
তারপর লিডিয়া খুনের ব্যাপারে জানতে চাইলে পোয়ারো বলে বাড়ির কেউ একজন তাকে খুন করেছে।
এই কথার পর লিডিয়া চলে যায় আর পোয়ারো বাগানে হাঁটতে হাঁটতে চারিদিক পর্যবেক্ষণ করছিল। হঠাৎ সে কতকগুলো নুড়ি সরিয়ে সরিয়ে কতকগুলো অদ্ভুত জিনিষ দেখতে পেল। ভাবতে লাগল এর অর্থ কী?
.
০৫.
২৬শে ডিসেম্বর।
কর্নেল জনসন আর সাগডেন তাকিয়ে আছে পোয়ারোর দিকে। একী এগুলো যে হীরে, পেলেন কোথা থেকে?
মিসেস অ্যালফ্রেডের সাজানো বাগান থেকে। এক সময় ওটা সমুদ্রের নীচে ছিল তাই এমন পাথর থাকা কোনো অস্বাভাবিকই নয়।
তাহলে বেশ আঁটঘাট বেধে নেমেছিল।
হয়তো মিসেস লী ওটা সরিয়ে ছিলেন কারণ হয়তো তিনি বুঝেছিলেন কিছু একটা ঘটতে চলেছে।
তবে হীরে সরালেও সে খুন করেনি। কারণ খুনের সময় বৃদ্ধ খানসামা তাকে ঘরে দেখেছিল।
সাগডনে জানালো সে কিছু নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছে–ম্যাগজলেন কমাণ্ডার জোন্সের নিজের মেয়ে নয়। এই ঘটনা সাইমন লী জানত তাই মিসেস লী হয়তো ভয় পেয়েছিলেন। তার স্বামীকে জানালো বিবাদ হবে তাই হয়তো সে খুন করেছে। টেলিফোনের গল্পটা বানানো। জর্জ লী আর তার স্ত্রী ঘরে ঢোকার পর তাদের সুপ্রভাত জানিয়ে প্রশ্ন করা শুরু হয়।
আচ্ছা আপনি ফোনে কথা বলতে শুরু করেন আটটা উনষাটে আর কথা বলা শেষ হয় নটা চার-এ। আর খুন হয় সোয়া নটায়, এই মধ্যের সময় আপনি কোথায় ছিলেন?
–আমি ফোন করছিলাম।
–না, হয়তো ভুলে যাচ্ছেন; হয়তো অন্য কোথা ফোন করছিলেন
এরপর ম্যাগজলেনকে প্রশ্ন করা শুরু হয়–আপনি তো বলেছিলেন এই ঘরে আপনি একা ফোন করছিলেন আসল কথা আপনি ফোন করেনই নি। আপনি কোথায় ছিলেন?
পুলিশের জুলুমবাজী আমরা আলাদতে তুলব। এই বলে ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রী চলে যায়।
তারা তিনজন ওদের নিয়ে আলোচনা করছিল ঠিক সেই সময় ঘরে ঢুকল ম্যাগজলেন। সে জানালো যে, সে তার ছেলেবন্ধুকে ফোন করতে গিয়ে দেখেছিল জর্জ ফোন করছে। সে যাতে জানতে না পারে তাই ম্যাগজলেন সিঁড়ির আড়ালে লুকিয়ে ছিল আর তখনই..
ডাইনিংরুমের জানলার কাছে লিডিয়া দাঁড়িয়ে ছিল নিঃশব্দে ঘরে ঢুকল পোয়ারো। হঠাৎ একটা আওয়াজ হললিডিয়া তাকিয়ে দেখল পোয়ারো।
পোয়ারো বলল, আমি নিঃশব্দে চলি।
–আমি ভেবেছি হারবারি। সে এমন ভাবে এসে অনেক গোপন কথা শোনে। আপনার কী মনে হয়? সে আমাদের এমন ভাবে কথা শুনে ব্ল্যাকমেল করতে পারে? যদি হারবারি চোর আর খুনী না হয় তাহলে–চোর বা খুনী আমাদের বাড়ির কেউ হবেই। তাই আমার আর আমার স্বামীর মত সেই মানুষকে যদি আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে আমাদেরই বদনাম। অনেক কেস তো চাপা পড়ে যায় তাই এটাকেও চাপা দিলে কেমন হয়?
আপনি হয়তো জানেন খুনী কে কিন্তু আমি ঠিক বলতে পারব না। তাই এখনই কোনো মতামত দিতে পারছি না।
মিউজিক রুমে পিলার আর স্টিফেন কথা বলছিল। তারা চলে যেতে চায় কিন্তু পুলিশ যেতে দেবে না। তারপর তারা কথা বলছিল উইল সম্পর্কে। হঠাৎ দেখা হল পোয়ারোর সাথে সে ঘরে বসে ছবি দেখছিল। আর বলল–লী পরিবারের বেশীর ভাগের মুখ মার মত। শুধুমাত্র হ্যারির বাবার মত।
একটা তরুণীর ছবি দেখিয়ে পোয়ারো বলল, একদম মিসেস সাইমন লী।
পিলার জানালো যে, ওটা তার মার ছবি তারপর নিজের গলার লকেটে তার বাবা-মার ছবি দেখালো।
পোয়ারো পিলারের পাশপোর্ট দেখতে চাইল এবং সেটা দেখার পর চলে গেল। তখন দেখা হল মিঃ আর মিসেস অ্যালফ্রেডের সাথে।
অ্যালফ্রেড বলল–আপনি আমার প্রস্তাবের কথা কী ভাবলেন?