হীরে চুরি যাবার কথা শুনে সে বলল, বেড়ালের মতো স্বভাব হারবারির সব বেড়াল চুরি করে আর হয়তো এটা তারই কাজ।
এরপর সে দাদামশাইয়ের ঘরে আলোচনার কথা বলতে গিয়ে বলল তার দাদামশাইয়ের কোনো বংশধর নেই বলেই তিনি রেগে গিয়েছিলেন আরো। তারপরই সকলে ঘর থেকে চলে যায় শুধু হিলডা বাদে। অবশেষে জানায় অপরাধ ঘটনার সময় সে তার ঘরে যায় প্রসাধন সারার জন্য আর তখনই…
এরপর ঘরে ঢুকল স্টিফেন ফার। তার বাবা আর সাইমন ছিল বিজনেস পার্টনার।
তাকে প্রথমে হীরে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সে বলে সে ঐ ব্যাপারে জানে না। সাইমন লীর চরিত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে সে বলে যে লী ছিলেন চরিত্রবান মানুষ এবং যৌবনে অনেক স্ত্রীঘটিত মামলাতে তিনি জড়িত ছিলেন। এবং একজনকে তিনি খুঁজছিলেন প্রতিশোধ নেবার জন্য। তবে সেটা আমার বাবা নয়। তার সঙ্গে আমার বাবার কখনই কোনা বিরোধ হয়নি। শেষে সে জানালো তার এই অঘটন ঘটার সময় সে এবং পিলার বলরুমে নাচ করছিল।
ফার চলে যেতে জনসন বলল হয়তো এ-ই হীরে চুরি করেছে। এর হাতের ছাপ নেবার ব্যবস্থা করো।
সাগডেন জানালো আগেই নেওয়া হয়ে গেছে।
এরপর জনসন বলল, ফোন কল কোন সময় এসেছিল তা জানার চেষ্টা করুন, হারবারি কখন বাড়ি থেকে বেরিয়েছে, কখন ঢুকেছে, কে তাকে দেখেছে খোঁজ নিন, প্রবেশ পথগুলো খুঁটিয়ে দেখুন। উকিলের সাথে কথা বলে বিষয়বস্তু কী জেনে নিন। বাড়ি ভালো করে সার্চ করুন কোথাও রক্তমাখা জামা বা হীরে পান কী না দেখুন।
পোয়ারো বলল বাড়ির সকলকে বারবার ধরে প্রশ্ন করলে আসল সত্যটা জানা যেতে পারে। এদের মধ্যে বেশীরভাগই মিথ্যা বলছে।
কর্নেল এক এক করে সকলের কথা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলল–অ্যালফ্রেড এবং তার স্ত্রী রমণীয়। জর্জ লী এম. পি. আর তার স্ত্রী আধুনিকা। ডেভিড ভীতু প্রকৃতির আর তার স্ত্রী সমঝদার। পিলার দাদুর গলায় ছুরি বসাতে পারে না। তাহলে স্টিফেন ফারের সম্ভাবনা থাকতে পারে।
পোয়ারো জানাল-স্টিফেন একমুহূর্তে বৃদ্ধকে খুন করতে পারে তার জন্য ধস্তাধস্তির দরকার হয় না। এটা কোনো দুর্বল লোক বা স্ত্রীলোকের কাজ।
এরপর বৃদ্ধ ট্রেসিলিয়ান ঘরে ঢুকতে তাকে হারবারি সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হলে জানালো পুলিশ আসার পর যা ঘটেছে। কাপ ভাঙার কথাও বলল সে এবং তার পরই হারবারি সিনেমা যায় তবে বাড়ির পেছনে যেখান দিয়ে চাকরেরা বের হয় সেখান দিয়ে নয় রান্নাঘর দিয়ে সে বেরিয়েছে সেখানকার পরিচারিকা তাকে দেখেছে। আরো জানালো পিছনে দরজার চাবি হারবারির কাছেই থাকে আর দরজাতে ছিটকানি দেওয়া থাকে না। তারপর সে চলে যায়।
হারবারি সবেমাত্র বাড়িতে প্রবেশ করে। তার ডাক পড়ল তখনই।
হারবারি জানালো সে সন্ধ্যে সাতটায় মিঃ সাইমনকে নৈশভোজ সারিয়ে সুপার হলে লাভ ইন ওল্ড সোভল সিনেমা দেখতে যায়। যেখানে তাকে কমিশনার দেখেন আর তারপর তার প্রেমিকা ডেরিসের সঙ্গে সে দেখা করে এসেছে। সে জানায় যে হীরের ব্যাপারে সে কিছু জানে না। কিন্তু তারপরই হঠাৎ সে বলে বসে হীরে চুরি নিয়ে অ্যালফ্রেডকে কখনই মিঃ লী সন্দেহ করতে পারে না। তার সঙ্গে হ্যারির থাকা নিয়ে মিঃ লীর ঝগড়া হচ্ছিল।
পোয়ারো তাকে বলে–হীরের কথা তুমি তো আমরা বলার আগে জানতে না-তাহলে এখন কী করে হীরের কথা বলছ?
হারবারি জানালো মিঃলী ফোনে কাকে যেন হীরের কথা বলছিল তখনই সে শুনেছে। বলে সে চলে যায়।
পোয়ারো বলল–হয়তো সেই চোর আর খুনী। আবার বলল–হয়তো সে শুধুই চোর, আবার বলল, হয়তো আটটার সময় পুলিশ আসার কথা শুনে সে ভয়ে চলে গেছে পাছে তাকে সন্দেহ করা হয় তাই।
আলমারী খুঁজে হীরে পাওয়া গেল না, পাওয়া গেল খালি একটা ব্যাগ আর পনেরো বছর আগের একটা উইল, যাতে লেখা ছিল অর্ধেক সম্পত্তি অ্যালফ্রেডের বাকী অর্ধেক জর্জ, ডেভিড আর জেনিফার মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে।
৪-৬. আলো ঝলমলে দুপুরে
০৪.
২৫শে ডিসেম্বর।
আলো ঝলমলে দুপুরে পোয়ারো বাগানে বেড়াচ্ছিল। সেখান থেকে সে দেখল পিলার আর হ্যারিকে সাঁতার কাটতে।
এমন সময় মিসেস জর্জ লী এসে জানালো ব্যাপারটা কেমন যেন খাপছাড়া। কাল রাতে অমন ঘটনার পর এমন দৃশ্য বেমানান। তারপর সে পিলার সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করল এবং বলল, তার শ্বশুরের মৃত্যুটা ইংরেজ সুলভ নয়। এবং সে সেখান থেকে চলে যায়।
তারপর সাগডেন এসে জানায় হারবারি সত্যি কথা বলেছে। সে সত্যিই তার মেয়েবন্ধুর সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল এবং তার লেখিকা তার সাথেই ছিল। আর ওয়েস্টবরিংহামের থেকে ফোন যে এসেছিল তার ছমিনিট পর সে ফোন কেটে যায়। আর এর থেকে বোঝা যায় মিসেস জর্জ লী মিথ্যে কথা বলেছিল তাহলে সে এখন কোথায় ছিল আর ফোন ছাড়ার দশমিনিট পর আর্তনাদ শোনা যায় তবে সেই সময় জর্জ কোথায় ছিল?
এবার পোয়ারো ম্যাগজলেনের কাছ থেকে জানা কথাটা সত্যি কীনা জানতে চাইল সাগডেনের কাছে। সাগডেন পিলার যে কুড়িয়েছিল তাই বলেছিল। কুড়িয়েছিল রবারের টুকরো ছিদ্রসহ আর একটা পেরেক।
এবার ওরা ডায়েরী খুলে সকলের কথাগুলো পড়ে সাগডেন বলল, হ্যারির নাম উঠে আসবে বলে সে বাবাকে না মেরে বাঁচিয়ে রাখতেই চাইবে। মিঃ আর মিসেস অ্যালফ্রেডকেও বাদ দেওয়া যায়। পিলারকেও সন্দেহ-এর বাইরে রাখা যায় আর স্টিফেন যে এমনিও বেড়াতে এসেছে তাকে বাদ দিলে জর্জলী আর মিঃ ও মিসেস ডেভিড। এদের মধ্যে জর্জ লীই সন্দেহজনক আর মিসেস জর্জ লীও সন্দেহ তালিকভুক্ত। কারণ তারও টাকার উপর সমান লোভ।