পোয়ারো মিসেস লীকে কোনো চাকর-বাকরকে সন্দেহ হয় কী না বলতে জানা গেল সবাই বিশ্বাসী লোক। তবে শ্বশুরমশাইয়ের ঘরে সবসময় থাকত দ্বিতীয় পরিচারিকা হারবারি। অন্যান্য সব মেয়েদের কথা বলতে গিয়ে লিডিয়া জানালো ম্যাগজলেন ফোন করতে গেছিল, পিলার কোথায় গেছিল সে জানে না আর হিলডা ডেভিডের সঙ্গে অর্থাৎ সে একাই ছিল ডাইনিংরুমে।
এরপর মিঃ লীর কাছ থেকে জানা গেল পুরোনো আলমারী খোলার পদ্ধতি একটা নোটবুকে ছিল আর সেটা তার বাবার গাউনের মধ্যেই থাকে সবসময়।
আর বাকী সকলকে একে একে পাঠাতে বলে তাদের চলে যেতে বলল ওরা।
এরপর জর্জ এসে তার মতামত জানালো–সে তখন ফোনে কথা সবেমাত্র শেষ করেছে আর ঠিক সেই সময়ই তার ধারণা এটা কোনো পাগলের কাজ।
এরপর তাকে হীরের ব্যাপারে জানানো হল। তা শুনে জর্জ হতবাক হয়ে গেল। সে জানত না যে হীরেগুলো চুরি গেছে।
এরপর দৃঢ় আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঘরে ঢুকলো হ্যারি, ঢুকেই কোনো একটা ব্যাপারে সে নার্ভাস হয়েছিল বটে কিন্তু কাউকেই বুঝতে দেয়নি।
হ্যারি জানাল দীর্ঘ কুড়ি বছর পর যখন তার বাড়িতে ফিরতে মন করছে ঠিক তখনই সে বাবার চিঠি পেল আর বাড়ি ফিরে এল স্থায়ী ভাবে থাকার জন্য। তার বাবাও খুবই খুশী হয়েছিল। কিন্তু তার ভাই অ্যালফ্রেড এতে রেগে যায়। তবে তার স্ত্রীর কথা সে জানে না। সে খুব ভালো মেয়ে। আর অ্যালফ্রেড খুব কর্তব্যপরায়ণ।
খুনী কে হতে পারে বলতে গিয়ে হ্যারি বলল যে, সে ঐ বুড়ো শয়তানকে কখনই সহ্য করতে পারে না আর যেহেতু তার বাবা তাই খুনের বদলা নিতে সে চায়, তার ধারণা বাড়ির কেউ খুনী। তবে চাকর-বাকরদের কেউ না। তারা খুব বিশ্বাসী। অ্যালফ্রেড বাবাকে খুব ভালোবাসত। জর্জের খুন করার সাহস নেই আর ডেভিড নিজের হাতের আঙুল কেটে গেলেই অজ্ঞান হয়ে যায়।
তবে কী ফারকে সন্দেহ করা যেতে পারে?
হ্যারি আরো জানালো চায়ের পর বাবা তার সাথে উইল বদলের কথা বলছিলেন। আগের উইলে তার আর ভাগ্নী পিলারের নাম ছিল না, তাই যোগ করতে তিনি সকলের সামনেই খ্রস্টমাসের পর উকিলকে দেখা করতে বলে। আর আর্তনাদ হওয়ার আগের মুহূর্তে সে তার ভাই আলফ্রেডের সঙ্গে ডাইনিংরুমে তর্ক করছিল, এই কথা জানিয়ে সে চলে যায়।
এরপর আঁটো পোষাকে শরীরের উঁচু নীচু রেখাগুলো স্পষ্ট করে সামনে এসে দাঁড়ায় ম্যাগজলেন।
ম্যাগজলেন জানালো সে খুনের ব্যাপারে কিছুই জানে না। তবে বিকেলে তারা সকলে মিঃ লীর ঘরে যায়। সেখানে হারি আর ডেভিডের এমন ঝগড়া হয় যে, সে যেন তক্ষুনি তার হ্যারিকে খুন করবে। কারণ তার স্ত্রীকে ইতর বলা হয়েছিল। এরপর ম্যাগজলেন সতর্ক হয়ে বলে সে এইভাবে ব্যাখ্যা করতে চায়নি। এই ঘটনার পর হিলডা ডেভিডকে শান্ত করে।
খুনের সময় সে কোথায় ছিল জানতে চাইলে ম্যাগজলেন বলল, সে একা ফোন করতে এসে ছিল। ঠিক তখনই আর্তনাদ।
সে চলে গেল। পোয়ারো জানাল উপরে মিঃ লীর ঘর ছাড়া এখানে একটা ফোন আছে। এখানে মিঃ এবং মিসেস জর্জ লী একসাথে দুজায়গায় ফোন করল তাও একা…এটা একটু অবাস্তব। আরো একটা ব্যাপার সাইমন লী যে সময় সকলকে তার ঘরে ডাকলেন ঠিক সেই সময়ই তিনি উকিলকে ফোন করে মানুষের মনে অর্থলিপ্সা, লোভ জাগিয়ে তুলে একটা আনন্দ অনুভব করতে চেয়েছিলেন।
এরপর ঘরে ঢুকল অস্বাভাবিক শান্ত এক মানুষ। মিঃ ডেভিড লী।
সে জানালো, সে আর তার স্ত্রী ডাইনিংরুমের পাশে মিউজিক রুমে ঘটনাটা ঘটার আগে পর্যন্ত পিয়ানো বাজাচ্ছিলেন। চিৎকার শোনার পর ওপরে যায়।
তার বাবা আলোচনায় কী বলেছিল বলতে গিয়ে সে জানালো তার বাবার মতে তারা সকলে বাজে অকাজের। পৃথিবীর কোনো না কোনো জায়গায় কুপথে জন্মালেও তার ভালো ছেলেরা আছে ইত্যাদি। সব বাজে কথা।
খুনী কে বলতে গিয়ে সে জানালো কাউকে তার সন্দেহ হয় না এবং ঘর থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেল।
এরপর শক্তসমর্থ চেহারায় সাধারণ পোষাক পড়ে ঘরে ঢুকল হিলডা।
পোয়ারো তাকে তার শ্বশুরমশাই-এর ঘরে সকলকে ডাকার পর তার শ্বশুরমশাই জর্জ লীকে কি বলেছিলে তাই জানতে চাইলে হিলডা বলল, তার শ্বশুরমশাই জর্জকে যে মাসোহারা পাঠাতো তা থেকে কম দেবেন বলেছিলেন। কারণ আয় কম আর পরিবারের সদস্য বাড়তে চলেছে বলে, মানে হ্যারির কথা তিনি বলেছিলেন। হীরের কথা বলতে হিলডা জানালো এই ব্যাপারে সে কিছু জানে না। তারপর তিনি আরো বলেন উইল বদল করুক আর না করুক, তার শ্বশুরমশাই আসলে সব ছেলেদের থেকে তারপর ফোন করার অর্থ ছেলেদের মনে অর্থলোভ জাগিয়ে তোলা। হিলডার ধারণা ছিল তার শ্বশুরমশাই সব ছেলেদের একত্র করে একটু আনন্দে দিন কাটাতেন কিন্তু তিনি একটা অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠেছিলেন, সে আরো বলল, তার শাশুড়ির নামে তিনি সকলের কাছে নিন্দা করলেই ডেভিড তার উপর রেগে যায় কারণ ডেভিড মায়ের ভক্ত ছিল।
উইল বদল করার ব্যাপারে হিলডা জানালেন হয়তো পিলারের নাম ঢোকানোর জন্য উইল বদলাতে চয়েছিলেন তিনি। অবশেষে সে জানালো সে তার স্বামীর সাথে মিউজিক রুমে ছিলেন এই বলে সে ঘর থেকে চলে গেল।
জীবজন্তু ফাঁদে পড়ার ভয় নিয়ে ঘরে ঢুকলো পিলার।
তারপর পিলার শুরু করল। সে তার মার কাছ থেকে শুনে এসেছিল তার দাদামশাই বৃদ্ধ শয়তান! এখানে এসে তার মনে হয়েছিল তিনি যৌবনে সুপুরুষ ছিলেন। হীরেগুলো সে দেখেছে এবং ভেবেছে যদি সে রোজ তার কাছে এসে বলে তাহলে তাকে দাদামশাই হীরে দিতে বাধ্য।