ডুরেল হেসে বলল, সবাই জানে কিংবা হয়তো আমি ওদের অনেক কিছু জেনে ফেলেছি এই ভয়
ওরা ব্যাংককে তোমাকে কোন উপদেশ দেয়নি।
হ্যাঁ, তারা আমাকে বলেছিল যে ঐরকম কাহিনী কিছু একটা শুনতে পাব।
এ্যালেন জিজ্ঞেস করল, হা ভালো কথা, কনস্যুলেটর মিস্টার হ্যানসন কি ঐ প্লেনেই ছিলেন?
ডুরেল উত্তর দিতে দেরী করল।
এ্যালেন আবার জিজ্ঞেস করল, তুমি কি সাইলাস হ্যানসনকে জানো?
এফ.বি.আই.-য়ের দায়িত্বে–ডুরেল বলল, হ্যাঁ, আমি তাকে জানি।
এ জায়গাটা কেমন? অফিসটা কিসের? এসব তেমন কিছুই জানাইনি। ভেবেছিলাম তোমার সঙ্গে দেখা হলে সব খুলে বলব। একটা কাজ তোমাকে করতেই হবে
এ্যালেনের গলার স্বর কাঁপছিল ডুরেল লক্ষ্য করল। এই ধরনের অকস্মাৎ মর্মাহত এবং পীড়িত বোধের কারণ কি হতে পারে ঠিক ভাবতে পারল না ডুরেল। সে একবার শুধু ডাকল। এ্যালেন
এ্যালেন বলল, আমি সত্যিই, দুঃখিত স্যাম—
কেন? কিসের দুঃখ
জানি না
এই জীবনের কি কোন শেষ নেই–
না, শেষ নেই। চলতে চলতে এ পথ যদি ফুরিয়ে যায় যাক, ক্লান্তি আসে আসুক। জানি একদিন কোন চড়ায় গিয়ে নিশ্চয়ই ঠেকবে, সেদিন সব গ্লানি ধুয়ে মুছে যাবে। কিন্তু এমন বিচলিত হতে তোমাকে তো দেখিনি।
এ্যালেন বলল, আমি ঐসব কাজকে মনে-প্রাণে ঘৃণা করি। আগে ভাবতাম বুঝি-বা ভালো কাজই করছি। সব কাজেরই প্রয়োজন আছে দুনিয়ায়। কিন্তু এখন সত্যি ঘৃণা করি ডুরেল, তোমার কাছে বলতে লজ্জা নেই। ইলিনসে ফিরে আর পাঁচজন লোকের মতো সহজভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে বাঁচতে চাই।
ডুরেল ভাবল, সে একি শুনছে।
বলে চলল নিজের মনেই, ধরো, ববি লঙস্ট্রমের হত্যা, কিংবা জন পিটারকে হংকঙে জলে ডুবিয়ে মারা অথবা ইলিয়ট সিংগারকে লণ্ডনের আণ্ডারগ্রাউণ্ড ট্রেনের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া এ সব কাহিনী শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত স্যাম। ব্যাপারগুলো সহজভাবে নাও স্যাম।
এ্যালেন বলল, বাস্তবিকই ওসব কাজ মেয়েদের জন্য হতে পারে
ডুরেল বলল, এই জাল থেকে তুমি বেরিয়ে আসতে চাইছে। যতদূর মনে পড়ছে সেই সৌভাগ্যবানের নাম জ্যাক ট্যালবট।
এ্যালেন বলল, হ্যাঁ ঠিকই শুনেছো?
কিন্তু, ব্যাপারটা কি? সে কি ভীষণ উৎপাত শুরু করেছে।
যদি বলি তার চেয়েও খারাপ।
কত খারাপ
যার জন্য তোমাকে আমরা এখানে ডেকে এনেছি–এই সেই লোক যে কিনা প্রিন্স সুভনার পেইন্টিং স্ক্রল চুরি করেছিল, তারপর থেকে জ্যাক উধাও এবং স্ক্রলসও অদৃশ্য
তাই কি
হ্যাঁ, একেবারে নিপাত্তা। সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। অথচ জ্যাক ট্যালবটকে চাইই, চাই। উই হ্যাভ টু ফাইন্ড দোজ পেইন্টিংস এণ্ড উই মাস্ট ফাইন্ড জ্যাক—
এবং ঠোঁটের পর্দা কাঁপল ডুরেলের, এবং–তাকে খুন করতে–কবরের তলা থেকে যেন এ্যালেনের গলার স্বর উঠে এল, এবং তোমাকেই খুন করতে হবে, ডুরেল তোমাকেই, তোমাকেই
.
০২.
তারপর, অনেকক্ষণ কেটে গেল।
সে চুপচাপ বসেছিল। শান্তু, নিরুদ্বেগ। কোলের ওপর দুটো হাত অত্যন্ত স্থির এবং নিটোল পড়ে আছে। সামনে টেস্ট রুম।
ডুরেল ভাবল, এই সেই অ্যালেন, কুড়ি নম্বর এ্যানাপোলিস স্ট্রীটের হেডকোয়ার্টারে কে সেকশনে যার দায়িত্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যার বয়স মনে হয় এখন ছাব্বিশ। ডুরেল সুমিষ্ট কণ্ঠে ডাকল, এ্যালেন।
এ্যালেন তার দিকে চেয়ে একখণ্ড হাসি দিয়ে ভুলিয়ে দিতে চাইল অতীতের সব জ্বালা। তোমাকে এই পথেই যেতে হবে। ডুরেল বলল, কিন্তু জানি না কিভাবে তুমি চলবে–তুমি ছাড়া যেভাবে আমার জীবন, সময়, আয়ু কেটে গেছে। তেমনিভাবে চলে যাবে–নখ খুঁটে এ্যালেন মুখ তুলে চাইল, কি ঠিক বলছি
জানি না। স্বাভাবিকভাবেই ডুরেল নিজের কাছেই যেন জবাবদিহি করল; আই ডাজ নট এভার সীম টু এণ্ড-আবার একটু থেমে বলল, এর কোথায় শেষ জানি না, সম্ভবত আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এর শেষ নেই
মুখ তুলে তাকাল এ্যালেন।
যাক গে। এখন তোমার জ্যাক ট্যালবটের খবর বলো স্যাম–এ্যালেন বলল, তুমি কি ভাবছো বলো তো আমাকে?
কিছু না। ডুরেল বলল, তুমি তাকে ভালোবাস
এ্যালেন বলল, যথেষ্ট ভালোবাসি।
কি মনে হয় তোমার পেইন্টিং স্ক্রল চুরির সঙ্গে হাত আছে—
হা। আমি বিলক্ষণ মনে করি।
বুঝেছি। তোমার গলায় সেটাই কাটার মতো বিধছে–শুধু তাই নয়। আমি তার ভালো মন্দ সবটাই দেখতে চাই। কতখানি তোমাকে সাহায্য করতে পারবো জানি না। তবে এটা ঠিকই কর্তব্যের খাতিরে বিপদাপন্ন বন্ধুকে ত্যাগ করতে মোটেই পিছুপা হবে না
নিশ্চয়ই–ডুরেল বলল, হ্যাঁ তা ঠিক
এ্যালেন বলল, মাত্র তিন দিনের মধ্যে ফয়সালা করতেই হবে। সুভানার এটাই ছিল চরম নির্দেশ–অর্থাৎ আলটিমেটাম
সুভানার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ সম্বন্ধে তুমি কিছু জানো কি? ডাউন স্ক্রলস। বড়ডো মুশকিলে পড়ে গেছি প্রিন্সের কাছে। খুব সিরিয়াস। সেই সুযোগে এখন চেকরা দারুণ ভূমিকা নিয়েছে। অথচ ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল প্ল্যানিং বোর্ড মনে করছে
কি মনে করছে?
চেকরা চাইনীসদের মুখপাত্র, বাট উই আর নট শিওর, নেগোসিয়েসান চলছে তো চলছেই। আনটিল লস্ট নাইট-আর তখনই কি প্রিন্সের ছবিগুলো ট্যালবট চুরি করে
তাই হবে হয়তো।
আমি বহুদিন শুনেছি ডাউন স্কুলের কথা। ডুরেল বলল, দেয়ার আর ফোর অফ দেম, রাইট? এটা কি ঠিক সিল্ক পেইন্টিংস অন রোলস অ্যাবাউট থ্রী ফিট ওয়াইড অ্যাণ্ড টেন ফিট লঙ