ডুরেলের সঙ্গে ছিল ভারী আগ্নেয়াস্ত্র। সেই জ্যাকের অস্ত্রটিকে সে প্যাসেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবার জন্যে দূরে ছুঁড়ে দিলো।
কিন্তু সে এখানে ছায়ায় ছায়ায় ঢুকে পড়েছে। প্যাসেক ট্যালবটের সঙ্গে কথা বলছিল।
সে সেই ডাটাগুলো চায়।
কেউই সীজারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো না। সীজার দাঁড়াল কেউই দেখলো না। পাহাড়ে হেলান দিয়ে নিজেকে স্থির করলো, বন্দুক ছুঁড়ল তারপর।
প্রথম সাবধান বাণী।
কিন্তু সন্দেহজনক ট্যালবট এটা শুনেছে কিনা।
প্যাসেকের সঙ্গে তর্ক করছিল সেই বিরাট লম্বা লোকটা। ডাটাগুলো যে তার কাছে নেই সেটা প্রমাণ করবার জন্যে সে প্রচুর চেষ্টা করলো।
প্যাসেক তার দ্রুতগামী বিরাট দেহটা কিছুটা নাড়িয়ে সীজারের দিকে গুলি ছুড়লো।
প্যাসেকের তিনটি গুলি লক্ষ্য অনুযায়ী গেলো।
কেবল একবার ডুরেল প্যাসেককে সতর্ক করে দিল।
তারপর তার বন্দুকের গুলি শত্রুদের দিকে বন্দুক নিয়ে প্যাসেক প্রস্তুত, কিন্তু অন্য কোন উপায় ডুরেলের ছিল না। সে একবারই গুলি করলো। দ্বিতীয়বার আর গুলি ছুঁড়তে হলো না।
ডুরেল তার বন্দুকটা নামাল।
দাদ্রে
আমি ঠিক আছি স্যাম।
আমি ভাবতেই পারিনি যে এমন হতে পারে।
যাক গে।
ভুলে যাও ব্যাপারটা।
এস্টান প্যাসেক তাকে পৌঁছে দিলো।
সীজার বলল নিঃশব্দে, আমি মারা যাচ্ছি। প্রথমে এ্যাপোলিও তারপর এই লোকটি আমাকে মেরে ফেলার জোগাড় করেছে–আমি প্রতারিত হয়েছি ফ্রান্সিসকা।
আর কোন বিপদ নেই ফ্রান্সিসকা।
জ্যাক ট্যালবটের পকেট উল্টেপাল্টে দেখলো। তারই পকেটের মধ্যে সেগুলো ছিল।
মিথ্যে কথা বলেছিল ট্যালবট।
ঠিকই ছিল ফ্ৰীমন্ট ডাটাগুলো। এবং ইস্যুরেন্স কাগজগুলো ছিল। কোডচিহ্ন দেওয়া ছিল একটা কালো ডায়েরীর মধ্যে।
পকেট বইটা ডুরেল রাখল। এবং যেখানে দাদ্রে দাঁড়িয়েছিল, সেখানে গেল। এমনভাবে তার দিকে তাকাল যেন সে একজন বিদেশী স্পাই। সে সম্ভবত সেই সময় তাই ছিল।
কোন কিছু অনুরোধ ডুরেলকে করতে হলো না। আরো কিছুক্ষণ বাদে পেন্টিংগুলো ফেরৎ দিয়ে দিল তাকে অতি অনায়াসে।
জিজ্ঞেস করল ডুরেল, কেমন আছেন এ্যাপোলিও?
আগের চেয়ে এখন ভালোই আছেন।
চোখর পাতা বন্ধ করে কাউন্টেস বলল, এখন আমি সেই বিশ্রী ফুলের মতো পাকরী। আর কেউই আমাকে ভাল মনে ঘরের আলমারীতে তুলে রাখবে না।
ডুরেল বলল, কেন চেষ্টা করে দ্যাখো। তাকে তো ফিরেও পেতে পারো।
সে উত্তরে বলল, দেখি, তোমার কথাটা হয়তো ফলেও যেতে পারে।
ডুরেল তারপর পরিধান অতি দ্রুত পাল্টে পেন্টিংয়ের প্যাকেটটা নিয়ে একেবারে দাদ্রের পাশে বসলো।
রওনা হবার একরকম সব প্রস্তুতি পর্ব শেষ।
সত্যি কি তুমি যাচ্ছো স্যাম?
না, যাবার মুখে
তোমার কি সব কাজ শেষ
ডুরেল বলল, হ্যাঁ। সবই প্রায় শেষ।
প্রথম কোথায় যেতে চাও।
কোথায় আর! ছকেবাঁধা জীবন। ওয়াশিংটন নির্দেশ দিলেই রাজী। পা বাড়ালেই রাস্তা।
দাদ্রে বলল, আমি সেইদিন সব চেয়ে বেশী সুখী হবো যদি কখনো তোমার পাশে থেকে সাহায্য করতে পারি। আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো স্যাম।
চলো। নিয়ে যাই এখান থেকে।
.
২২.
হোটেল কন্টেকোপালতে বয়ে যাচ্ছে ঝোড়ো হাওয়া। ডুরেল তার ঘরে ফিরে গেল।
ডুরেল ভোরের আলো না ফুটতেই জেনেভাতে ফোন করে প্রিন্স সুভানাকে পেন্টিং উদ্ধারের কাহিনী বর্ণনা করতে ভুললো না। আপতত টিনখানি চুক্তির স্বাক্ষর আর কোনো দ্বিধা সংশয় থাকবার কথা নয়।
খানিক পরে ডুরেল দাদ্রেকে সঙ্গে করে এ্যাপোলের কাছে গেলো।
ডুরেল আবেগ পুলকিত শিহরণে দাদ্রেকে উত্তেজিত করে তুললো।
মুহূর্তের মধ্যে ডুরেল বলল, যাই এক্ষুণি আবার দেখা করতে হবে হ্যানসনের সঙ্গে।
নেপলস্ থেকে লোকটা ট্রেনে বোম, রোম থেকে সোজা জেনেভা।
সর্ব প্রথম সুভানার সঙ্গে দেখা করে তার চিত্রশিল্পগুলোকে ফেরত দিতে হবে।
ডুরেল বলল, দাদ্রে, এখন আমায় ছেড়ে দাও। বিশ্বাস করো লক্ষ্মীটি, আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি
স্যাম আমার কাছে এইটুকুই যথেষ্ট।
আর কোন উত্তর দিল না ডুরেল।
ডুরেল বলল, আমরা নিশ্চয়ই আবার এক সঙ্গে মিলতে পারবো।
এখন আর কোন কথা নয়।
সমস্তই বিস্তারিত বিবরণ লিখে পাঠাতে হবে ওয়াশিংটনে। আর কতক্ষণই বা সময় লাগবে ক্রীমন্ট গোয়েন্দা সংগঠন আর কে সেকসনের লোকদের নতুন করে ঘোর পাল্টিয়ে আনতে। তারপর, সুস্থ জীবনে চর্যাপদ উঠে আসবে দিনের মধ্যেই। তারপর শুধু ব্রুশ, দাদ্রে আর বুশ।
তারা একসময় পাশাপাশি দুজনে রোম স্টেশনের দিকে এগুতে থাকল। আর এই এলো বলে রোমের ট্রেন।