আমি সীজারের কাছে এসেছি।
তা হলে ভেতরে আসুন।
বৃদ্ধ বলল, আপনারা কি পুলিশ দফতর থেকে এসেছেন? আসলে ব্যাপারটা কি, যতই হোক সীজার আমার ভাই।
তাকে আমার বলবার কিছুই নেই। যদিও সে সব ঘটনাতেই লিপ্ত, বুঝতে পারলেন এবার ব্যাপারটা।
বৃদ্ধ বলল, তার মাথায় সবমসয় খুন চেপেই থাকে, খুন আর খুন
ডুরেল বলল, বুঝতে পারলাম। ওর কাছে আপনি কি কোন পেইন্টিং দেখেছেন ওহো, নিশ্চয়ই–এই তত আধঘণ্টা আগেই সীজার তো সেগুলো নিয়ে গেলো। অন্য কোন জায়গায় তোমরা এক্ষুণি লুকিয়ে পড়ো নইলে বিপদ।
ডুরেল বলল, দাদ্রে, আমার এই বুড়োকে বিশ্বাস আছে। অন্তত এই বয়সের লোকেরা মিথ্যে বলবে না। তুমি এখানেই থাকবে আমি না ফেরা অব্দি। বুঝলে, এখন জীবনমরণের দরজা এই বুড়োই।
.
১৫.
পাহাড়ের চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ফ্রান্সি এগিয়ে চলতে লাগলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে সে সমুদ্র সৈকতে এসে গেলো।
মুহূর্তে আকস্মিক আঘাতে ফ্রান্সি সাদাবালির ওপর লুটিয়ে পড়লো। সে দেখলো, সামনে মূর্তিমান জ্যাক। এখানে তুমি কী করে এলে?
কেন? নৌকায়? জেনে রেখো আজ তোমার শেষ দিন।
জ্যাক বলল, তোমার মতন বেইমান মেয়েমানুষকে আমি দুনিয়া থেকে একেবারে সরিয়ে দেবো। মাটিতে ধরাশায়ী ফ্রান্সির সুবর্তুল স্তনাগ্রে জুতোর কেপ সোলর মারাত্মক চাপ দিয়ে বলল, এখনও সময় আছে। ছবিগুলো কোথায়?
ঝাঁকিয়ে ফ্রান্সি বলল, সীজারের কাছে
সীজারের কাছে–তীব্র ভর্ৎসনা করলো জ্যাক।
প্লীজ জ্যাক, আমাকে তুমি সত্যি মেরে ফেলল। এখন আমি মরে বাঁচতে চাই।
জ্যাক কি মনে করে জানি অত্যন্ত বিচলিত মনে আর কোন দিকে না তাকিয়ে ফ্রান্সিকে পালিয়ে যেতে সুযোগ দিলো।
উলঙ্গ ফ্রান্সি তীরভূমি লক্ষ্য করে ছুটল, সমস্ত শরীর থেকে সহস্রধারায় রক্তকণা ছুটতে শুরু করলো। কিন্তু সে কোথায় যাবে।
অবশেষে এক সময় দুটো পাহাড়ের মাঝখানে সংকীর্ণ একটা জায়গায় এসে ফ্রান্সি দেখলো কোথাও কেউ নেই। এইটুকু জায়গাই আত্মগোপনের জন্য যথেষ্ট। এতক্ষণ পরে বুঝতে পারলো সে সম্পূর্ণ উলঙ্গ। বুকের ভেতর থেকে একটা চাপা কান্না উঠে এলো। অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে সে দুহাত দিয়ে নগ্নতা ঢাকতে চেষ্টা করলো।
.
১৬.
ঠিক সেই সময় ডুরেল ডন এঞ্জেলোর ভিলাতে বসে ছিল।
প্যাসেক বা ট্যালবট কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। একজন উদো পুরুষ শিকারের সন্ধানে পানসী ভিড়িয়ে দিলো।
এঞ্জেলো এক সময় বলল, ঐ লোকটাকে চেনো?
হ্যাঁ চিনি। ডুরেল যেন নিজেকে কাছেই স্বগত করলো।
এই মুহূর্তে ট্যালবট যে পথ দিয়ে চলে গেছে বলে বুঝতে পারলো, ডুরেল ঠিক পরমুহূর্তে সেই দিকে দ্রুত পা বাড়াতেই শুনল বন্য জন্তুর বিকট চিৎকার, না অন্য কোন আর্তনাদ।
সেই দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে ডুরেল পৌঁছল যেখান থেকে আসছে সেই মর্মাহত আতাঁরব।
একি ফ্যান্সিসকা—
ফ্রান্সি শরীরের গোন অংশ কোটরের ফাঁক থেকে আড়াল করে অবিরাম কাঁদতে লাগলো।
আমি আর কাউকে বিশ্বাস করি না। জ্যাক নিশ্চয়ই এতক্ষণ সীজারকে পাকড়াও করেছে।
সীজারকে জ্যাক খুন করবেই, আমাকে তুমি সাহায্য করো।
পেইন্টিংগুলো কোথায় সত্যি করে বলো? সীজারের কাছে কি?
হা।
কাউন্টের কাছে সত্যি বিক্রি করবে তো?
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই করবে।
প্যাসেককে তুমি নিশ্চয়ই জানো?
ফ্রান্সি ঘৃণা ভরা মুখ নিয়ে বলল, ঐ নামে আমি কাউকে জানি না।
ডুরেল বলল, বুঝেছি, এবার আমার পক্ষে তোমার স্বামীর কাছে যাওয়াই উচিত।
কেন?
আর কেন। তোমার স্বামীর কাছে গিয়ে সব কথা খুলে বলাই ভালো।
ফ্রান্সি বলল, একি বলছো তুমি! আমি সেখানে কি মুখে ফিরে যাবো।
জানি না।
.
১৭.
ডুরেল আর দেরী না করে বেলারিও ভবনের দিকে ছুটে চলল। এখানে কিছুক্ষণের মধ্যে পৌঁছে পেছনের সিঁড়ি ঢুকে পড়লো। ডুরেল কয়েকবার তার নাম ধরে ডাকল, রাফেল। রাফেল
আরো একটা করিডোর পেরোতেই রাফেলকে রক্তাক্ত এবং অচৈতন্য দেখতে পেয়ে শরীরের সমস্ত রোমকূপ খাড়া হয়ে উঠলো। একি!
ডুরেল বলল, কে তোমায় এভাবে মারল। দাদ্রে কোথায়?
একটা পালোয়ান তোমার দাদ্রেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
বুঝেছি। ট্যালবট। সে ছাড়া একাজ আর কেউ করতে পারেনা।
ডুরেল বলল, প্রথম লোকটা কি চাইছিল?
সীজার, সীরাজকে চায় বলেই তো মনে হলো। কিন্তু সে তো এ্যাপোলিওর কাছে গেছে। তারা দাদ্রেকে নিয়ে গেলো কেন?
হ্যাঁ, এবার সব বুঝতে পারছি। ডুরেল বলল, তুমি নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাবে। আমি থাকতে পারলে ভালোই হতো। কিন্তু আমার কাজের বড় তাড়া।
ঠিক আছে। শুধু দুঃখ বয়ে গেলো দাদ্রে, আমরা দাদ্রেকে হারালাম।
.
১৮.
অধৈর্যের সঙ্গে কাউন্ট এ্যাপেলিও অপেক্ষা করছেন। ভৃত্য ল্যাম্বার্ডো খবর দেবার পর তাকে নিজের ঘরে চলে যেতে বললনে কাউন্ট।
সীজার বিলম্ব ঘটলেও ঠিক ঠিক এসে পৌঁছেছে পেইন্টিংগুলো নিয়ে।
কাউন্ট স্বাগত জানিয়ে বললেন, পেইন্টিংগুলো ঠিক আছে। সীজার জানালো, হ্যাঁ। সব ঠিক আর নিশ্চয়ই আপনার টাকাটাও প্রস্তুত।
কাউন্ট বলল, ভালো কথা নিশ্চয়ই জেনেভার ব্রুনোকে জানো?
সীজার বলল, জানি বোধহয়।
পেইন্টিং-এর প্যাকেজ খুলতেই কাউন্টের মুখের চেহারা সম্পূর্ণ পাল্টে গেলো। অপূর্ব! তুলনাহীন! স্ত্রীর প্রতি সীজারের বিশ্বাসঘাতকতার কথা আর মনে হলো না একটিবারের জন্যেও।
সীজার বলল, কি দেখলেন? এবার টাকাটা দেখান