লেডি কুট, আপনি আমায় ডাকছেন? তারপর বান্ডলের দিকে তাকিয়ে বললো, কেমন আছেন লেডি এইলিন?
মিঃ বেটম্যান, আপনি এখানে এসে ভালোই করেছেন। লোরেন বললো, কুকুরের থাবায় ঘা হলে কি করতে হয় আপনি সেদিন জানতে চেয়েছিলেন না?
-না, আমি না। বেটম্যান ঘাড় নাড়লো, উত্তরটা আমার জানা আছে।
–কত খবর আপনাকে রাখতে হয়?
আজকাল সব খবর রাখতেই হয়। বেটম্যান জবাব দিলো। কুকুরের পায়ে
বান্ডলকে একটু আড়াল নিয়ে মিঃ ও’রুরকে বলললেন, এই ধরনের লোকেরাই খবরের কাগজে নানা বিষয়ে লেখে। যেমন, পেতলের জিনিষ কিভাবে চকচকে হয় নতুনবা সিংহলী ভারতীয়দের বিয়েরে আচার হলো–ইত্যাদি। অবশ্য আমার এরকম কোনো জ্ঞান নেই, সেজন্য ভগবানকে ধন্যবাদ জানাই। আমি শিক্ষিত মানুষ।
-এখানে গলফ খেলা যায়? বান্ডল গলফের স্টিক লক্ষ করে লেডি কুটকে প্রশ্ন করলো।
–লেডি এই লিন, আপনি আমার সঙ্গে গলফ খেলতে যাবেন? ও’রুরকে বললেন।
-খুব ভালো, আমরা চারজনে খেলবো। বান্ডল উৎসাহিত হয়ে বললো। আমি আর মিঃ ও’রুরকে আর লোরেন ও বেটম্যান খেলবে।
বেটম্যানকে ইতস্ততঃ করতে দেখে লেডি কুট বললেন, যান, খেলে আসুন। আপনাকে নিশ্চয়ই আপনার স্যার এখন খুঁজবেন না।
–বেশ কায়দা করে কাজ শেষ করা গেছে। চাপা কণ্ঠে বান্ডল লোরেনকে বললো।
বেটম্যান আর লোরেন জয়ী হয়ে একটা নাগাদ খেলা সাঙ্গ হলো।
–আমরা যে খারাপ খেলেছি তা নয়, পার্টনার। পিছিয়ে পড়া বান্ডলকে লক্ষ্য করে ও’রুরকে বললেন। পঙ্গো কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ। খুব মেপে খেলে। তবে আমার মত একেবারে উল্টো। ফলে বহুবার ঝামেলায় পড়েছি। কিন্তু কায়দা করে বেরিয়ে এসেছি। আরে আমি ক্ষমতা রাখি। আমাকে ফাসাবে। আমি হলাম টেরেন্স ও’রুরকে।
ঠিক তখনই জিমি থেসিজার বেরিয়ে এলো বাড়ির কোণ থেকে।
–আশ্চর্য এরা আবার কোথা থেকে এলো? জিমি অবাক হওয়ার ভান করলো।
বান্ডল গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার ঘটনা জিমিকে বললো।
গাড়ি সারাতে তো সময় নেবে। মধ্যাহ্নভোজের পর আমিই পৌঁছে দেবো। দুপুরের খাওয়ার ঘন্টা পড়তেই সকলে ভেতরে চলে গেল। বান্ডল জিমির গলার আওয়াজ লক্ষ্য করছিল নিখুঁত ভাবে, বুঝলো কাজ হাসিল হয়েছে।
মধ্যাহ্নভোজন শেষ হলো।
জিমি তার গাড়িতে বান্ডল আর লোরেনকে তুলে নিলো, কারণ ওদের গাড়ি পড়ে আছে গ্যারেজে।
এই সময় দুজনেই অর্থাৎ বান্ডল আর লোরেন একসঙ্গে বলে উঠলো।
-তারপর?
জিমি ওদের আশ্বাস দিলো–সব ভালো। তবে বেশি মাত্রায় বিস্কুট খাওয়ায় হজম ঠিক হয়নি।
-কি হলো তাই বলো না?
–বলছি।
জিমিকে চুপ করে থাকতে দেখে লোরেন আবার অনুযোগ করলো।
–ওঃ জিমি, বলো না।
জিমি নরম হলো–কি জানতে চাও?
–সবকিছু। আমাদের কাজটা কেমন হয়েছে বলো? বেটম্যান আর মিঃ ও’রুরকে আমরাই তো কায়দা করে খেলতে নিয়ে গিয়েছিলাম।
-পঙ্গোকে নিয়ে বেশি ভয়। ওকেসামলানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ। পঙ্গো আর ওককের মধ্যে অনেক তফাৎ আছে। পঙ্গো হলো সর্বত্র বিরাজমান। যেখানেই যাও না কেন, ও দেখবে ঠিক চোরের মতো সেখানে হাজির। এত নিঃশব্দে ওর চলাফেরা যে আগে থেকে আঁচ করা যায় না।
–তুমি কি ওকে বিপজ্জনক বলে মনে করছো?
-না, কখনোই নয়। ওকে বিপজ্জনক ভাবলে হাসি পায়। ও একটা গাধা। একটা নোংরা জীব। নিশাচর প্রাণীর মত রাতে জেগে থাকে।
সন্ধ্যার ঘটনাগুলো জিমি শোনালো।
–তোমার যে কি মতলব জানি না।
–সাত নম্বরকে আমার চাই। ওকে জানার চেষ্টা করছি মাত্র।
–এই বাড়িতে কি ওকে পাবে?
–কোনো তথ্য পাবো ভেবেছিলাম।
–সেটা পেয়েছো?
–গত রাতে পাইনি।
–আজ সকালে? লোরেন বলে উঠলো, তুমি আজ সকালে কিছু যে পেয়েছে, সেটা তোমার মুখ দেখলে বোঝা যাচ্ছে।
–একে কিছু পাওয়া বলে কিনা জানি না। বাড়ির এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে এই জিনিষটা পেয়েছি, একটা ছোট্ট বোতল জিমি ওদের দেখালো, সেটি সাদা গুড়ো পাউডারে ভর্তি।
–এটা কি হতে পারে? বান্ডল বললো।
–সাদা দানা। জিমি বললো, গোয়েন্দা কাহিনীতে আকছার পড়া যায় এরকম। অবশ্য জিনিষটা যদি কোনো নতুন ধরনের মাজন হয় তাহলে ভালো হবে না।
কিন্তু শিশিটা কোথায় পেয়েছে সেটা জানাতে রাজী হলো না জিমি।
ওরা দুজন জানার জন্য অনেক কায়দা করলো, অপমান পর্যন্ত করলো, কিন্তু জিমি মুখ খুললো না।
ইতিমধ্যে ওরা গ্যারেজে পৌঁছে গেল। গ্যারেজের লোকটা একটা বিল ধরিয়ে দিলো বান্ডলকে। সে মিষ্টি হেসে বিলের টাকা মিটিয়ে দিলো।
তিনজনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ।
–জিমি, তোমার মনে আছে সুপারিন্টেন্ডেন্ট ব্যাটল একটা আধপোড়া দস্তানা পেয়েছিলেন? যেটা তোমাকে পরেতে বলেছিলেন? বান্ডল বললো।
-হ্যাঁ, মনে আছে। জিমি উত্তর দিলো। আমার ওটা বড় ছিল। দেখে মনে হয়েছিল কোন বিরাট লোকেরই এটা হবে।
–সে যাক, ওটা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নয়। বান্ডল বললো, তুমি এবার বলল, ঐ সময় স্যার অসওয়াল্ড আর জর্জ দুজনেই ছিলেন কিনা?
-হ্যাঁ, দুজনেই ছিলেন।
–তাহলে সুপারিন্টেন্ডেন্ট ব্যাটল ওদের দুজনকে ওটা পরতে দিলেন না কেন?
–হ্যাঁ, সেটা দিতে পারতেন, কিন্তু
–কিন্তু তিনি তা না করে উল্টে তোমায় বলেছিলেন, জিমি এর মানে বুঝতে পারছো?
জিমি থেসিজার আশ্চর্য হয়ে তাকালেন।
-বান্ডল আমি বুঝতে পারিছি না। আমার দুর্বল মস্তিষ্ক। দুঃখিত। তুমি যদি বুঝিয়ে বলো।