উত্তর, হ্যাঁ, তোলা যাবে। স্বাভাবিক মধ্যাকর্ষণে এক কিউবিক মিটার প্লাটিনামের ওজন ২২, ৪২০ কিলোগ্রাম। ধরা যাক প্রত্যেক ব্যক্তি ১২০ কিলোগ্রাম ওজন তুলতে পারবে। তাহলে সর্বমোট ১৮৮ জন লোকের প্রয়োজন হবে। কিন্তু ১৮৮ জন লোক এক সাথে এক কিউবিক মিটারের এক টুকরা প্লাটিনাম ধরতে পারবে না। খুব বেশি হলে নয় জন সেটাকে হাত দিয়ে ধরতে পারবে। অথচ আগেই বলা হয়েছে কোনো যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করা যাবে না। খালি হাতে তুলতে হবে।
ঠিক একইভাবে সাইকোহিস্টোরির জন্য যে জ্ঞানের প্রয়োজন সেটা অর্জনের জন্য যথেষ্ট লোকজন পাওয়া যাবে না। খুব অল্প কয়েকজনই সেটার কাছাকাছি পৌঁছতে পারবে এবং প্রয়োগ করতে পারবে।
হামিনের কথায় ধ্যান ভাঙল তার। আপনি বোধহয় এখনই চিন্তা ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন, সেলডন।
আমি আসলে ভাবছিলাম নিজের অজ্ঞতার কথা।
অত্যন্ত উপযোগী একটা কাজ। সবারই আপনার পথ অনুসরণ করা উচিত। যাইহোক, এবার নামতে হবে।
চারপাশে তাকালেন সেলডন। কীভাবে বুঝলেন?
প্রথমবার এক্সপ্রেসওয়েতে চড়ার সময় আপনি যেভাবে বুঝেছিলেন। নির্দেশনা দেখে।
এবার সেলডনও নির্দেশনাটা দেখতে পেলেন। তাতে লেখা : স্ট্রিলিং বিশ্ববিদ্যালয়–তিন মিনিট।
পরের বোর্ডিং স্টেশনে নামব। দেখে শুনে পা ফেলবেন।
হামিনকে অনুসরণ করে গাড়ি থেকে নামলেন সেলডন। দেখলেন আকাশ গাঢ় রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। ফুটপাথ, করিডর, দালানকোঠাগুলো আলোকিত। একটা হলুদাভ আভা ফুটে বেরুচ্ছে সেগুলো থেকে।
তার কাছে মনে হলো তিনি বোধহয় হ্যালিকনেই আছেন। চোখ বন্ধ করে এখানে নিয়ে আসার পর বাঁধন খুলে দিলে সত্যি সত্যি বিশ্বাসও করে ফেলতেন যে আসলেই হ্যালিকনের কোনো আধুনিক নগরীর জনবহুল অংশে দাঁড়িয়ে আছেন।
হামিন, স্ট্রিলিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে কতদিন থাকতে হবে? জিজ্ঞেস করলেন তিনি।
বরাবরের মতোই স্বভাবসুলভ শান্ত গলায় জবাব দিল হামিন। বলা মুশকিল, সেলডন। হয়তো সারাজীবন।
কীহ!
হয়তো নয়। তবে সাইকোহিস্টোরির গবেষণাপত্রগুলো প্রচার করার মুহূর্ত থেকেই আপনার জীবনের লাগাম আপনার হাত থেকে ছুটে গেছে। সম্রাট এবং ডেমারজেল সাথে সাথেই আপনার মূল্য বুঝতে পারে। আমি পারি। নিঃসন্দেহে আরো অনেকেই পেরেছে। তো বুঝতেই পারছেন আপনি আর আপনার নিজের নিয়ন্ত্রণকারী নন।