হরিচরণবাবু ছেলেকে বললেন, ওটা খুঁজে আনবে। যার কাছ থেকে এনেছ, তার বাড়িতেই এটা পড়ে আছে। খুঁজলেই পাবে! খুঁত রাখবে কেন! এই বলে তিনি নেমে গেলেন। নামার সময় বলে গেলেন, দেখে গেলাম স্বচক্ষে।
তিনি চলে গেলে আমি কিছুক্ষণ কেমন বিমূঢ়ের মতো বসেছিলাম। মানুষটা সত্যি যোগসিদ্ধ এমন মনে হল আমার। এর কী ব্যাখ্যা আছে জানি না।
আর তার ক-দিন পর সহসা স্ত্রীর চিৎকারে ওপরে উঠে গেলাম। স্ত্রী বললেন, দেখগে ছাদের কার্নিশে, সব শকুন বসে আছে। আমি কেমন অশুভ সংকেতে ঘাবড়ে গেলাম। হরিচরণবাবুর আসা, কঙ্কাল দেখা, শকুন উড়ে আসার মধ্যে সারা বাড়িটা এক ভৌতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যে বুঝি পড়ে গেছে। যেন হরিচরণবাবু শিক্ষা দিতে চান, কেমন বিদেহী আত্মায় বিশ্বাস নেই, দেখুন এবারে মজা!
সকালেই ভাবলাম, না, ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। বলতে হবে, তেনারা আছেন। আপনি আসনে বসে জেনে নিন, আমার বাড়িটি অশুভ প্রভাবের হাত থেকে কী ভাবে রক্ষা পেতে পারে। সকালেই সামান্য চা খেয়ে বের হয়ে পড়লাম। ওঁর বাড়ি যেতে সময় লাগে না। কিন্তু আজ কেন জানি মনে হল অনেক দূরে হরিচরণবাবু থাকেন।
বাড়িতে কড়া নাড়তেই, এক ভদ্রমহিলা দরজা খুলে দিলেন। বললাম, হরিচরণবাবু আছেন?
ভদ্রমহিলা বললেন, আপনি কোত্থেকে আসছেন?
সব বললে, তিনি জানালেন, সে কী তিনি তো আজ চার বছর হল নিখোঁজ। তিনি আপনার বাড়ি গেলেন, অথচ নিজের বাড়ি ঘুরে গেলেন না! তাজ্জব!