অনেক রকম সমস্যা?
হ্যাঁ। সবাই আমার জন্যে অপেক্ষা করছে।
মধ্যবয়স্কা মহিলা আস্তে আস্তে মাথা নেড়ে বলল, হ্যাঁ নিকি, আমি বুঝতে পারছি তুমি খুবই ব্যস্ত। এবং তোমাকে অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান করতে হয়। আমরা তাহলে তোমাকে আটকে রাখব না।
নিকি লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে বলল, আমি কি তাহলে যেতে পারি?
হ্যাঁ। তুমি যেতে পার।
নিকি বলল, তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। তারপর কেউ কিছু বোঝার আগে দরজা খুলে ছুটে বের হয়ে গেল। ঘরের সবাই জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল, দেখল সাত বছরের একটা শিশু মাঠের ভেতর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। ছুটতে ছুটতে সে তার সার্ট খুলে হাতে ধরে মাথার উপর ঘোরাতে ঘোরাতে চিৎকার করে করে নাড়ছে, তার সজীব দেহ সূর্যের আলোতে চকচক করছে।
ঘরের ভেতর বসে থাকা মানুষগুলো একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে অপরাধীর মতো একটু হাসল। কমবয়সী একজন বলল, আমরা মনে হয় এখনো বেঁচে থাকার অর্থ কী সেটা বুঝে উঠতে পারি নি।
মধ্যবয়স্কা মহিলাটি বলল, না। পারি নি।
এই ছেলেটা পেরেছে।
হ্যাঁ। এই ছেলেটা পেরেছে।
ক্রিনিটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে একটু এগিয়ে গিয়ে একটা উঁচু ঢিবির উপর দাঁড়িয়ে দূরে তাকিয়ে থাকে। হ্রদের উপর একটা গাছ থেকে মোটা একটা দড়ি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে ঝুলে ঝুলে অনেকগুলো শিশু পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এতো দূর থেকেও তাদের আনন্দ ধ্বনি স্পষ্ট শোনা যায়।
ক্রিনিটি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শিশুগুলোকে দেখে। একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখার কোনো অর্থ নেই। কিন্তু ক্রিনিটি সরে যেতে পারে না, সে মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে থাকে। বিশেষ করে যখন নিকির একটা উল্লাস ধ্বনি শুনতে পায় তার ভেতরে কোনো একটা কিছু ঘটে যায়।
কী ঘটে সে বুঝতে পারে না। সম্ভবত তার কপোট্রনে কোনো এক ধরনের টি ঘটেছে।
নিকি বলে এই ত্রুটির নাম হচ্ছে ভালোবাসা। নিকি নেহায়েত ছেলেমানুষ, শুধু তার মুখ থেকেই এরকম পুরোপুরি যুক্তিহীন, অর্থহীন, হাস্যকর এবং ছেলেমানুষী কথা শোনা সম্ভব।
শুধু তার মুখ থেকেই।
———-