“না এলে কী করতে?”
“না এলেই বরং ভাল হত। ও যদি টাকার অ্যাটাচি নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে যেত-বেশিদূর যেতে পারত না। আমার লোক ছিল বাইরে, মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। টাকা ছিনতাই হয়ে যেত।”
সামান্য চুপ করে থেকে কিকিরা বললেন, “তোমার এত টাকার দরকার হবে কেন? তুমি কি চোর, ডাকাত, গুণ্ডা?”
বাসুদেব মাথা নিচু করে বলল, “যা ভাবেন আপনারা। তবে একটা কথা বলি দুটো কোম্পানি। যেখানে আমি কাজ করেছি আগে, কোথাও মাসআষ্টেক, কোথাও বছরখানেক–আমার নামে কোর্টে মামলা করেছে। হিসেবের গোলমাল, টাকা চুরি, ফোরজারি। আমায় তাড়িয়ে দিয়েছে ওরা। প্রায় আশি-পঁচাশি হাজার টাকা দিতে পারলে নিস্তার পাব। টাকার আমার দরকার ছিল।”
কৃষ্ণকান্ত সোজা হয়ে বসতে যাচ্ছিলেন, পারলেন না। হঠাৎ পেছনদিকে পিঠ হেলিয়ে শুয়ে পড়লেন। চোখের পাতা বুজে গেল। হাত এলিয়ে পড়ল দু পাশে।
তারাপদরা সবাই ততক্ষণে ঘরের মধ্যে এসে পড়েছে।
কয়েক মুহূর্ত সব কেমন নিঃশব্দ। থমথম করে উঠল ঘরের আবহাওয়া। তারপরই হঠাৎ নবকুমার ছুটে গিয়ে কৃষ্ণকান্তর মুখের সামনে ঝুঁকে পড়ল। “জেঠামশাই?”
কৃষ্ণকান্ত সাড়া দিলেন না। তাঁর চোখের পাতা কেমন বিষণ্ণ, মলিন, সামান্য আর্দ্র দেখাচ্ছিল।