সবাই ফেরালে মুখ
সবখানে ব্যর্থ হয়ে যদি যাই
তুমিও ফেরাবে মুখ স্নিগ্ধ বনভূমি
ক্ষুধায় কাতর তবু দেবে না কি অনাহারী মুখে দুটি ফল?
বড়োই ব্যথিত যদি কোনো স্নেহ ঝরাবে না অনন্ত নীলিমা!
সবাই ফেরাবে মুখ একে একে, হয়তোবা শুস্ক হবে
সব সমবেদনার ধারা
তুমিও কি চিরপ্রবাহিণী নদী দেবে না এ-তৃষিত অঞ্জলি
ভরে জল?
আমার মাথায় যদি ঝরবে না কোনো শান্তিবারি তবে
কেন মেঘদল!
সব সেবাশ্রম, স্বাস্ত্যনিবাস যদি করে অবহেলা, রোগে একফোঁটা
না দেয় ওষুধ
তোমার ভেষজবিদ্যা দিয়ে আমাকে কি সুস্থ করে তুলবে না প্রকৃতি?
খোলা রাখবে না স্যান্যাটোরিয়াম?
উদ্ভিদ দেবে না ঘ্রাণ নাকে মুখে যাতে পুনরায় জ্ঞান ফিরে আসে।
উৎসবের সব বাঁশি যদি থেমে যায়,
কেউ দয়াপরবশ হয়ে আর না শুনায় গান
পাখি তুমি শোনাবে না তোমার কূজন কলগীতি
পাতার মর্মরে বেজে উঠবে না ভৈরবী বেহাগ!
যদি সবার লাঞ্ছনা পাই, সকলের রুক্ষ আচরণ
তুমিও কি মোছাবে না মুখ, তোমারও আঁচলখানি
হবে নাকি দয়ার্দ্র রুমাল?
সবাই ফেরলে মুখ তুমি ফেরয়ো না, দুঃখ পাবো!
স্মৃতি
স্মৃতি ছাড়া কোনো নোটবুক নাই
টুকে রাখি কোথা ইট বা খোয়াই
ভাঙা বাড়িটার ধূলি-জঞ্জাল
বুক ভরে যারা ছিলো এতোকাল;
কোথা লিখে রাখি এতো প্রিয় নাম
যার পাশাপাশি একদা ছিলা!
কিছু ভালোবাসা কিছু অবহেলা
কোনটা প্রকৃত কোনটা বা খেলা
বুনো ঝাউবীথি উদাসীন শাল
চিরচেনা নদী মোয়াবী রাখাল
কাকে বলি তুমি কাকে নামে ডাকি
অনেক ঠিকানা কাকে মনে রাখি।
এতা পশুপাখি লোক লোকালয়
পরিচিত ঘরে এতো পরিচয়
তুচ্ছ তাকেও কতো দামে জানি
ছেঁড়া কাগজেরও অভিমানখানি
কতোদিন কতো ফুল আর মেঘ
তারও পথা চেয়ে কীযে উদ্বেগ
এই ধূলি কাঠ পাথরের ঘ্রাণ
চিরদিন এই মানুষের গান
লিখে রাখি কোথা এতো প্রিয়নাম
যার পাশে আমি একদা ছিলাম!
স্মৃতি ছাড়া আর নোটবুক নাই
কিছু মনে পড়ে, কিছু ভুলে যাই!