একটু থেমে বরেনবাবু আবার বললেন, তবে তুমি না থাকলে আজ আমার মৃত্যু ছিল নিশ্চিত। এতদিন পর আঘাতের যন্ত্রণা আর রক্তের নেশা যে ওকে সব কিছু ভুলিয়ে ক্ষিপ্ত করে তুলবে, আমি তা বুঝতে পারিনি। যাই হোক, এবার এই অনাহূত অতিথি দুটির দিকে নজর দেওয়া যাক।
..নজর দেওয়ার কিছু ছিল না। সাটিরার মৃত্যু হয়েছিল অনেক আগে। গজু প্রাণপণ যুঝেও শেষরক্ষা করতে পারেনি। হলুদ রাক্ষসের রক্তলোলুপ শুড়গুলো তার শরীর থেকে অনেক রক্ত শুষে নিয়েছিল, তার উপর শ্বাসনালীর উপরেও চাপ পড়েছিল সাংঘাতিক ত্রিবেদীকে উদ্দেশ্য করে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করে নীরব হয়ে গেল গজু ওরফে গজানন, তার মৃত্যু হল…
ওরা দুজনে ঘরে ঢুকল কী ভাবে, সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল পর্যবেক্ষণের ফলে। জল নিষ্কাশনের যে পাইপটা হলুদ রাক্ষসের জানালার পাশ দিয়ে উপর থেকে নিচে নেমে গেছে, সেইটা অবলম্বন করেই উপরে উঠে এসেছে দুই মূর্তি, তারপর জানালার গরাদ কেটে ভিতরে প্রবেশ করতেই হলুদ রাক্ষসের কবলে পড়েছে।
সাটিরা আর গজু আমাকেই ধরতে এসেছিল বরেন, ত্রিবেদী বললেন, সাটিরা বুকের উপর রিভলবার ধরে আমায় কিডন্যাপ করত। তুমি বাধা দিলে তোমাকে হত্যা করতে সে কুণ্ঠিত হত না। হলুদ রাক্ষস আমাদের দুজনকেই বাঁচিয়েছে।
বাকি রাতটুকু ঘুমিয়ে নেওয়া দরকার,বরেনবাবু ক্লান্তস্বরে বললেন, আজ রাতে বৃষ্টি মাথায় করে কয়েক মাইল হেঁটেছি, দুবার আছাড় খেয়েছি এবং দেহের উপর সহ্য করেছি হলুদ রাক্ষসের হামলা। এর উপর আবার পুলিশের ঝামেলা আমার সইবে না। রাতে ঘুমিয়ে শরীরটাকে একটু বিশ্রাম দি। কাল সকালে পুলিশে খবর দিলেই চলবে। তুমিও কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে শরীরটাকে একটু চাঙ্গা করে নাও, তিলু।
ত্রিবেদী বললেন, অগত্যা।