হাদীস নং ১৩৭৮
আদম রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মুসলিমের উপর তার ঘোড়া ও গোলামের কোন যাকাত নেই।
হাদীস নং ১৩৭৯
মুসাদ্দাদ ও সুলাইমান ইবনে হারব রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মুসলিমের উপর তার গোলাম ও ঘোড়ার কোন যাকাত নেই।
হাদীস নং ১৩৮০
মুআয ইবনে ফাযালা রহ………আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে বসলেন এবং আমরা তাঁর আশেপাশে বসলাম। তিনি বললেন : আমার পরে তোমাদের ব্যাপারে আমি যা আশংকা করছি তা হল এই যে দুনিয়ার চাকচিক্য ও সৌন্দর্য (ধন-সম্পদ) তোমাদের সামনে খুলে দেওয়া হবে। এক সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! কল্যাণ কি কখনো অকল্যাণ বয়ে আনে ? এতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরব রইলেন। প্রশ্নকারীকে বলা হল, তোমার কি হয়েছে ? তুমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর কথা বলছ, কিন্তু তিনি তোমাকে জওয়াব দিচ্ছেন না ? তখন আমরা অনুভব করলাম যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর ওহী নাযিল হচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তাঁর ঘাম মুছলেন এবং বললেন : প্রশ্নকারী কোথায় ? যেন তা প্রশ্নকে প্রশংসা করে বললেন, কল্যাণ কখনো অকল্যাণ বয়ে আনে না। অবশ্য বসন্ত মৌসুম যে ঘাস উৎপন্ন করে তা (সবটুকুই সুস্বাদু ও কল্যাণকর বটে তবে) অনেক সময় হয়ত (ভোজনকারী প্রাণীর) জীবন নাশ করে অথবা তাকে মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে যায়। তবে ঐ তৃণভোজী জন্তু, যে পেট ভরে খাওয়ার পর সূর্যের তাপ গ্রহণ করে এবং মল ত্যাগ করে, প্রস্রাব করে এবং পুনরায় চরে (সেই মৃত্যু থেকে রক্ষা পায় তেমনি) এই সম্পদ হল আকর্ষনীয় সুস্বাদু। কাজেই সে-ই ভাগ্যবান মুসলিম, যে এই সম্পদ থেকে মিসকীন, ইয়াতীম ও মুসাফিরকে দান করে অথবা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরূপ বলেছেন, আর যে ব্যক্তি এই সম্পদ অন্যায়ভাবে উপার্জন করে, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে খেতে থাকে এবং তার পেট ভরে না। কিয়ামত দিবসে ঐ সম্পদ তা বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে ।
হাদীস নং ১৩৮১
উমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস রহ……….আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা.-এর স্ত্রী যায়নাব রা. থেকে বর্ণিত, (রাবী আমাশ রহ. বলেন) আমি ইবরাহীম রহ.-এর সাথে এ হাদীসের আলোচনা করলে তিনি আবু উবায়দা সূত্রে আমর ইবনে হারিস রহ.-এর মাধ্যমে আবদুল্লাহ রা.-এর স্ত্রী যায়নাব রা. থেকে হুবহু বর্ণনা করেন। তিনি (যায়নাব রা.) বলেন, আমি মসজিদে ছিলাম। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলাম তিনি বলছেন : তোমরা সাদকা দাও যদিও তোমাদের অলংকার থেকে হয়। যায়নাব রা. আবদুল্লাহ রা. ও তাঁর পোষ্য ইয়াতীমের প্রতি খরচ করতেন। তখন তিনি আবদুল্লাহকে বললেন, তুমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জেনে এসো যে, তোমার প্রতি এবং আমার পোষ্য ইয়াতীমদের প্রতি খরচ করলে আমার পক্ষ থেকে সাদকা আদায় হবে কি ? তিনি (ইবনে মাসউদ রা.) বললেন, বরং তুমিই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জেনে এসো। এরপর আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম। তাঁর দরজায় আরো একজন আনসারী মহিলাকে দেখলাম, তার প্রয়োজনও আমার প্রয়োজনের অনুরূপ। তখন বিলাল রা.-কে আমাদের পাশ দিয়ে যেতে দেখে বললাম, আপনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিজ্ঞাসা করুন, স্বামী ও আপন (পোষ্য) ইয়াতীমের প্রতি সাদকা করলে কি আমার পক্ষ থেকে তা যথেষ্ট হবে ? এবং এ কথাও বলেছিলাম যে ,আমাদের কথা জানাবেন না। তিনি প্রবেশ করে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তারা কে ? বিলাল রা. বললেন, যায়নাব। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোন যায়নাব ? তিনি উত্তর দিলেন, আবদুল্লাহর স্ত্রী। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তার জন্য দুটি সাওয়াব রয়েছে, আত্মীয়কে দেওয়ার সাওয়াব আর সাদকা দেওয়ার সাওয়াব।
হাদীস নং ১৩৮২
উসমান ইবনে আবু শায়বা রহ……….উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (আমার স্বামী) আবু সালমার সন্তান, যারা আমারও সন্তান, তাদের প্রতি ব্যয় করলে আমার সাওয়াব হবে কি ? তিনি বললেন : তাদের প্রতি ব্যয় কর। তাদের প্রতি ব্যয় করার সাওয়াব তুমি অবশ্যই পাবে।
হাদীস নং ১৩৮৩
আবুল ইয়ামান রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাত দেওয়ার নির্দেশ দিলে বলা হল, ইবনে জামীল, খালিদ ইবনে ওয়ালিদ ও আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব রা. যাকাত প্রদানে অস্বীকার করছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : ইবনে জামীলের যাকাত না দেওয়ার কারণ এ ছাড়া কিছু নয় যে, সে দরিদ্র ছিল, পরে আল্লাহ অনুগ্রহে ও তাঁর রাসূলের বরকতে সম্পদশালী হয়েছে। আর খালিদের ব্যাপারে হল তোমরা খালিদের উপর অন্যায় করেছ, কারণ সে তার বর্ম ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র আল্লাহর পথে আবদ্ধ রেখেছছে। আর আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব রা. তো আল্লাহর রাসূলের চাচা। তাঁর যাকাত তাঁর জন্য সাদকা এবং সমপরিমাণও তার জন্য সাদকা। ইবনে আবুয যিনাদ রহ. তাঁর পিতা থেকে হাদীস বর্ণনায় শুআইব রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। আর ইবনে ইসহাক রহ. আবুয যিনাদ রহ. থেকে হাদীসের শেষাংশে ‘সাদকা’ শব্দের উল্লেখ করেননি। ইবনে জুরাইজ রহ. বলেন, আরাজ রহ. থেকে অনুরূপ হাদীস আমার নিকট বর্ণনা করা হয়েছে।