আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………..আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন বলেছেন : পাঁচ যাওদ (পাঁচটি) উটের সংখ্যকের উপর যাকাত নেই, পাঁচ উকিয়া-এর কম পরিমাণ রূপার উপর যাকাত নেই এবং পাঁচ ওয়াসক-এর কম পরিমাণ উৎপন্ন দ্রব্যের উপর সাদকা (উশর / নিসফে উশর) নেই।
হাদীস নং ১৩৬৩
মুহাম্মদ ইবনে মুসান্না রহ……..আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন থেকে এ হাদীসটি শুনেছি।
হাদীস নং ১৩৬৪
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ রহ……..আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, আবু বকর রা. আনাস রা.-এর কাছে আল্লাহ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন -কে যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন সে সম্পর্কে লিখে জানালেন, যে ব্যক্তির উপর যাকাত হিসেবে বিনতে মাখায ওয়াজিব হয়েছে কিন্তু তার কাছে তা নেই বরং বিনতে লাবুন রয়েছে, তাহলে তা-ই (যাকাত স্বরূপ) গ্রহণ করা হবে। এ অবস্থায় যাকাত আদায়কারী যাকাতদাতাকে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে। আর যদি বিনতে মাখায না থাকে বরং ইবনে লাবুন থাকে তাহলে তা-ই গ্রহণ করা হবে। এমতাবস্থায় আদায়কারীর যাকাতদাতাকে কিছু দিতে হবে না।
হাদীস নং ১৩৬৫
মুআম্মাল রহ………..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা প্রদানের পূর্বেই (ঈদের) সালাত আদায় করেন, এরপর বুঝতে পারলেন যে, (সকলের পিছনে থাকা বিধায়) মহিলাগণকে খুতবার আওয়াজ পৌঁছাতে পারেননি। তাই তিন মহিলাগণের নিকট আসলেন, তাঁর সাথে বিলাল রা. ছিলেন। তিনি একখণ্ড বস্ত্র প্রসারিত করে ধরলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে উপদেশ দিলেন ও সাদকা করতে আদেশ করলেন। তখন মহিলাগণ তাদের (অলংকারদি) ছুড়ে মারতে লাগলেন। (রাবী) আইয়্যূব রহ. তার কান ও গলার দিকে ইঙ্গিত করে (মহিলাগণের অলংকারাদি দান করার বিষয়) দেখালেন।
হাদীস নং ১৩৬৬
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন তা আবু বকর রা. তাঁর নিকট লিখে পাঠান, যাকাতের (পরিমাণ কম-বেশী হওয়ার) আশংকায় পৃথক (প্রাণী)-গুলোকে একত্রিত করা যাবে না এবং একত্রিত গুলোকে পৃথক করা যাবে না।
হাদীস নং ১৩৬৭
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন আবু বকর রা. তা তাকে লিখে জানালেন, এক অংশীদার অপর অংশীদারের নিকট থেকে তার প্রাপ্য আদায় করে নিবে।
হাদীস নং ১৩৬৮
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন এক বেদুঈন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হিজরত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন : তোমার তো বড় সাহস ! হিজরতের ব্যাপারটি কঠিন, বরং যাকাত দেওয়ার মত তোমার কোন উট আছে কি ? সে বলল, জী হ্যাঁ, আছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : সাগরের ওপারে হলেও (যেখানেই থাক) তুমি আমল করবে। তোমার সামান্যতম আমলও আল্লাহ নষ্ট করবেন না।
হাদীস নং ১৩৬৯
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, আবু বকর রা. তাঁর কাছে আল্লাহ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যাকাত সম্পর্কে যে বিধান দিয়েছেন তা লিখে পাঠান : যে ব্যক্তির উপর উটের যাকাত হিসাবে জাযা’আ ফরয হয়েছে, অথচ তার কাছে জাযা’আ নেই বরং তার নিকট হিক্কা রয়েছে, তখন হিক্কা গ্রহণ করা হবে । এর সাথে সম্ভব হলে (পরিপূর্ণরূপে) দুটি বকরী দিবে, অথবা বিশটি দিরহাম দিবে। আর যার উপর যাকাত হিসেবে হিক্কা ফরয হয়েছে, অথচ তার কাছে হিক্কা নেই বরং জাযা’আ রয়েছে, তখন তার থেকে জাযা’আ গ্রহণ করা হবে। আর যাকাত উসুলকারী (ক্ষতিপূরণ স্বরূপ) মালিককে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে। যার উপর হিক্কা ফরয হয়েছে, অথচ তার নিকট বিনতে লাবূন রয়েছে, তখন বিনতে লাবূনই গ্রহণ করা হবে। তবে মালিক দুটি বকরী বা বিশটি দিরহাম দিবে। আর যার উপর বিনতে লাবূন ফরয হয়েছে, কিন্তু তার কাছে হিক্কা রয়েছে, তখন তার থেকে হিক্কা গ্রহণ করা হবে এবং আদায়কারী মালিককে বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে। আর যার উপর বিনতে লাবূন ফরয হয়েছে কিন্তু তার নিকট তা নেই বরং বিনতে মাখায রয়েছে, তবে তাই গ্রহণ করা হবে, অবশ্য মালিক বিশটি দিরহাম বা দুটি বকরী দিবে।
হাদীস নং ১৩৭০
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুসান্না আনসারী রহ………..আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, আবু বকর রা. তাকে বাহরাইন পাঠানোর সময় এই বিধানটি তাঁর জন্য লিখে দেন : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। এটাই যাকাতের নিসাব যা নির্ধারণ করেছেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসালিমদের প্রতি এবং যা আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন। মুসলিমদের মধ্যে যার কাছ থেকে নিয়ামানুযায়ী চাওয়া হয়, সে যেন তা আদায় করে দেয় আর তার চেয়ে বেশী চাওয়া হলে তা যেন আদায় না করে। চব্বিশ ও তার চাইতে কম সংখ্যক উটের যাকাত বকরী দ্বারা আদায় করা হবে। প্রতি পাঁচটি উটে একটি বকরী এবং উটের সংখ্যা পঁচিশ থেকে পঁয়ত্রিশ পর্যন্ত হলে একটি মাদী বিনতে মাখায। (এক বছর বয়স্কা উষ্ট শাবক)। ছত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ পর্যন্ত একটি মাদী বিনতে লাবূন (দু’ বছর বয়স্কা উটের শাবক)। ছয়চল্লিশ থেকে ষাট পর্যন্ত ষাড়ের পালযোগ্য একটি হিক্কা (তিন বছর পূর্ণ হয়েছে এমন উট), একষট্রি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত একটি জাযা’আ (চার বছর পূর্ণ দাতাল উট(, ছিয়াত্তর থেকে নব্বই পর্যন্ত দুটি বিনতে লাবূন, একানব্বইটি থেকে একশ বিশ পর্যন্ত ষাড়ের পালযোগ্য দুইটি হিক্কা। সংখ্যায় একশ বিশের অধিক হলে (অতিরিক্ত) প্রতি চল্লিশটিতে একটি করে বিনতে লাবূন এবং (অতিরিক্ত) প্রতি পঞ্চাশটিতে এক করে হিক্কা। যার চারটির বেশী উট নেই, সেগুলোর উপর কোন যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিতে চাইলে দিতে পারবে। কিন্তু যখন পাঁচে পৌছে তখন একটি বকরী ওয়াজিব। আর বকরীর যাকাত সম্পর্কে : সায়েমা বকরী চল্লিশটি থেকে একশ বিশটি পর্যন্ত একটি বকরী। এর বেশী হলে দুশতটি পর্যন্ত দুটি বকরী। দুইশর অধিক হলে তিনশত পর্যন্ত তিনটি বকরী। তিনশর অধিক হলে প্রতি একশতে একটি করে বকরী। কারো সায়েমা বকরীর সংখ্যা চল্লিশ থেকে একটিও কম হলে তার উপর যাকাত নেই । তবে স্বেচ্ছায় দান করলে তা করতে পারে। রূপার যাকাত চল্লিশ ভাগের এক ভাগ। একশ নব্বই দিরহাম হলে তার যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দান করলে করতে পারে।