হাদীস নং ১৯১২
আবদুর রহামান ইবনে বিশর রহ…… আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রমযানের মধ্যম দশকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ইতিকাফ করেছিলাম। বিশ তারিখের সকালে (ইতিকাফ শেষ করে চলে আসার উদ্দেশ্যে) আমরা আমাদের আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকটে এসে বললেন :যে ব্যক্তি ইতিকাফ করেছে সে যেন তার ইতিকাফস্থলে ফিরে যায়। কারণ আমি এই রাতে দেখতে পেয়েছি এবং আমি আরো দেখেছি যে, আমি পানি ও কাদার মধ্যে সিজদা করছি। এরপর যখন তিনি তাঁর ইতিকাফের স্থানে ফিরে গেলেন ও আকাশে মেঘ দেখা দিল, তখন আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হল। সেই সত্তার কসম ! যিনি তাকে যথাযথই প্রেরণ করেছেন, ঐ দিনের শেষভাগে আকাশে মেঘ দেখা দিল। মসজিদ ছিল খেজুর পাতার ছাউনীর। আমি তাঁর নাকে অগ্রভাগে পানি ও কাদার চিহ্ন দেখেছিলাম।
হাদীস নং ১৯১৩
মুহাম্মদ রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমযানে ইতিকাফ করতেন। ফজরের সালাত শেষে ইতিকাফের নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করতেন। আয়িশা রা. তাঁর কাছে ইতিকাফ করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দিলেন। আয়িশা রা. মসজিদে একটি তাবু করে নিলেন। হাফসা রা. তা শুনে একটি তাবু তৈরী করে নিলেন এবং যায়নাব রা.-ও তা শুনে আর একটি তাবু তৈরী করে নিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত শেষে এসে চারটি তাবু দেখতে পেয়ে বললেন : একি ? তাকে তাদের ব্যাপারে জানানো হলে, তিনি বললেন : নেক আমলের প্রেরণা তাদেরকে এ কাজে উদ্ধুদ্ধ করেনি। সব খুলে ফেলা হল। তিনি সেই রমযানে আর ইতিকাফ করলেন না। পরে শাওয়াল মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করেন।
হাদীস নং ১৯১৪
ইসমাঈল ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….উমর ইবনে খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি জাহিলিয়্যাতের যুগে মসজিদে হারামে এক রাত ইতিকাফ করার মানত করেছিলাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : তোমার মানত পুরা কর। তিনি এক রাতের ইতিকাফ করলেন।
হাদীস নং ১৯১৫
উবায়দ ইবনে ইসমাঈল রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর রা. জাহিলিয়্যাতের যুগে মসজিদে ইতিকাফ করার মানত করেছিলেন। (বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয় তিনি এক রাতের কথা উল্লেখ করেছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : তোমার মানত পুরা কর।
হাদীস নং ১৯১৬
আবদুল্লাহ ইবনে আবু শায়বা রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমযানে দশ দিনের ইতিকাফ করতেন। যে বছর তিনি ইন্তিকাল করেন সে বছর তিনি বিশ দিনের ইতিকাফ করেছিলেন।
হাদীস নং ১৯১৭
মুহাম্মদ ইবনে মুকাতিল রহ……আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশক ইতিকাফ করার অভিপ্রায় প্রকাশ করলে আয়িশা রা. তাঁর কাছে ইতিকাফ করার অনুমতি প্রার্থনা করায় তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। এরপর হাফসা রা. আয়িশা রা. -এর নিকট অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। তা দেখে যায়নাব বিনতে জাহাশ রা. নিজের জন্য তাবু লাগানোর নির্দেশ দিলে তা পালন করা হল। আয়িশা রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত আদায় করে নিজের তাবুতে ফিরে এসে কয়েকটি তাবু দেখতে পেলেন। তখন তিনি বললেন : এ কি ব্যাপার ? লোকেরা বলল, আয়িশা, হাফসা ও যায়নাব রা.-এর তাবু। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তাঁরা কি নেকী পেতে চায় ? আমি আর ইতিকাফ করবো না। এরপর তিনি ফিরে আসলেন। পরে সাওম শেষ করে শাওয়াল মাসের দশ দিন ইতিকাফ করেন।
হাদীস নং ১৯১৮
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি ঋতুবতী অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুল আঁচড়িয়ে দিতেন। ঐ সময়ে তিনি মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় থাকতেন আর আয়িশা রা. তাঁর হুজরায় অবস্থান করতেন। তিনি আয়িশা রা.-এর দিকে তাঁর মাথা বাড়িয়ে দিতেন।