হাদীস নং ১৮৭২
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……..আয়িশা রা. ও ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বলেন, যার নিকট কুরবানীর পশু নেই তিনি ছাড়া অন্য কারোও জন্য আইয়্যামে তাশরীকে সাওম পালন করার অনুমতি দেওয়া হয় নাই।
হাদীস নং ১৮৭৩
আবদুল্লাহ ইবেন ইউসুফ রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি একই সঙ্গে হজ্জ ও উমরা পালনের সুযোগ পালন করল সে আরাফাত দিবস পর্যন্ত সাওম পালন করবে। সে যদি কুরাবনী না করতে পারে এবং সাওম পালন না করে থাকে তবে মিনার দিনগুলোতে সাওম পালন করবে। ইবনে শিহাব রহ…….আয়িশা রা. থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবরাহীম ইবনে সাদ রহ. ইবনে শিহাব রহ. থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১৮৭৪
আবু আসিম রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আশুরার দিনে কেউ চাইলে সাওম পালন করতে পারে।
হাদীস নং ১৮৭৫
আবুল ইয়ামান রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে আশুরার দিনে সাওম পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরে যখন রমযানের সাওম ফরয করা হল তখন যার ইচ্ছা (আশুরার) সাওম পালন করত আর যার ইচ্ছা করত না।
হাদীস নং ১৮৭৬
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে কুরাইশগণ আশুরার সাওম পালন করত এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও এ সাওম পালন করতেন। যখন তিনি মদীনায় আগমন করেন তখনও এ সাওম পালন করেন এবং তা পালনের নির্দেশ দেন। যখন রমযানের সাওম ফরয করা হল তখন আশুরার সাওম ছেড়ে দেয়া হল, ইচ্ছা সে পালন করবে আর যার ইচ্ছা পালন করবে না।
হাদীস নং ১৮৭৭
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………হুমায়দ ইবনে আবদুর রাহমান রহ. থেকে বর্ণিত, যে বছর মুআবিয়া রা. হজ্জ করেন সে বছর আশুরার দিনে (মসজিদে নববীর) মিম্বরে তিনি (রাবী) তাকে বলতে শুনেছেন যে, হে মদীনাবাসীগণ! তোমাদের আলিমগণ কোথায় ? আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আজকে আশুরার দিন, আল্লাহ তা’আলা এর সাওম তোমাদের উপর ফরয করেননি বটে, তবে আমি (আজ) সাওম পালন করছি। যার ইচ্ছা সে সাওম পালন করুক যার ইচ্ছা সে পালন না করুক।
হাদীস নং ১৮৭৮
আবু মামার রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইয়াহুদীগণ আশুরার দিনে সাওম পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন : কি ব্যাপার ? (তোমরা এ দিনে সাওম পালন কর কেন ?) তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তা’আলা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল হতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মূসা আ. সাওম পালন করেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এ দিনে সাওম পালন করেন এবং সাওম পালনের নির্দেশ দেন।
হাদীস নং ১৮৭৯
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ…….আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আশুরার দিনকে ইয়াহুদীগণ ঈদ মনে করত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সাহাবীগণকে) বললেন : তোমরাও এ দিনের সাওম পালন কর।
হাদীস নং ১৮৮০
উবায়দুল্লাহ ইবনে মূসা রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আশুরার দিনের সাওমের উপরে অন্য কোন দিনের সাওমকে প্রাধান্য প্রদান করতে দেখি নাই এবং এ মাস অর্থাৎ রমযান মাস (এর উপর অন্য মাসের গুরুত্ব প্রদান করতেও দেখি নাই)।
হাদীস নং ১৮৮১
মক্কী ইবনে ইবরাহীম রহ…….সালামা ইবনে আকওয়া রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তিকে লোকজনের মধ্যে এ মর্মে ঘোষণা দিতে আদেশ করলেন যে, যে ব্যক্তি খেয়েছে, সে যেন দিনের বাকি অংশে সাওম পালন করে আর যে খায় নাই, সে যেন সাওম পালন করে। কেননা, আজকের দিন আশুরার দিন।
তারাবীহর সালাত অধ্যায় (১৮৮২-১৮৯৭)
হাদীস নং ১৮৮২
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রমযান সম্পর্কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমযানের ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমযান অর্থাৎ তারাবীহর সালাত আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে।
হাদীস নং ১৮৮৩
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায় তারাবীহর সালাতে দাঁড়াবে তা পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। হাদীসের রাবী ইবনে শিহাব রহ. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন এবং তারাবীহর ব্যাপারটি এ ভাবেই চালু ছিল। এমনকি আবু বকর রা.-এর খিলাফতকালে ও উমর রা.-এর খিলাফতের প্রথম ভাগে এরূপই ছিল। ইবনে শিহাব রহ. উরওয়া ইবনে যুবাইর রহ. সূত্রে আবদুর রাহমান ইবনে আবদ আল-কারী রহ. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রমাযানের এক রাতে উমর ইবনুল খাত্তাব রা.-এর সঙ্গে মসজিদে নববীতে গিয়ে দেখতে পাই যে, লোকেরা বিক্ষিপ্ত জামায়াতে বিভক্ত । কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আবার কোন ব্যক্তি সালাত আদায় করছে এবং তার ইকতেদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। উমর রা. বললেন, আমি মনে করি যে, এই লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে একত্রিত করে দেই, তবে তা উত্তম হবে। এরপর তিনি উবাই ইবনে কাব রা.-এর পিছনে সকলকে একত্রিত করে দিলেন। পরে আর এক রাতে আমি তাঁর (উমর রা.) সঙ্গে বের হই। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত আদায় করছিল। উমর রা. বললেন, কত না সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা ! তোমরা রাতের যে অংশে ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে অংশে তোমরা সালাত আদায় কর, এর দ্বারা তিনি শেষ রাত বুঝিয়েছেন, কেননা তখন রাতের প্রথমভাগে লোকেরা সালাত আদায় করত।