হাদীস নং ১৮৬২
উমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমুআর দিনে সাওম পালন না করে কিন্তু তার আগে একদিন অথবা পরের দিন (যদি পালন করে তবে জুমুআর দিনে সাওম পালন করা যায়)।
হাদীস নং ১৮৬৩
মুসাদ্দাদ ও মুহাম্মদ রহ………জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিনে তাঁর নিকট প্রবেশ করেন তখন তিনি সাওম পালনরত ছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন : তুমি কি গতকাল সাওম পালন করেছিলে ? তিনি বললেন, না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন : তুমি কি আগামীকাল সাওম পালনের ইচ্ছা রাখ? তিনি বললেন, না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তাহলে সাওম ভেঙ্গে ফেল। হাম্মাদ ইবনুল জাদ রহ. স্বীয় সূত্রে জুয়াইরিয়া রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেন এবং তিনি সাওম ভঙ্গ করেন।
হাদীস নং ১৮৬৪
মুসাদ্দাদ রহ…….আলকামা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়িশা রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কোন দিন কোন কাজের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতেন ? উত্তরে তিনি বললেন, না, বরং তাঁর আমল স্থায়ী হত এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সব আমল করার শক্তি-সামর্থ্য রাখতেন তোমাদের মধ্যে কে আছে যে সবের সামর্থ্য রাখে ?
হাদীস নং ১৮৬৫
মুসাদ্দাদ রহ. ও আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……..উম্মুল ফাযল বিনতে হারিস রা. সূত্রে বর্ণনা করেন যে, কিছুসংখ্যক লোক আরাফাতের দিনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাওম পালন সম্পর্কে তাঁর কাছে সন্দেহ প্রকাশ করে। তাদের কেউ বলল, তিনি সাওম পালন করেছেন। আর কেউ বলল, না, তিনি করেন নাই। এতে উম্মুল ফাযল রা. এক পেয়ালা দুধ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা পান করে নিলেন। এ সময় তিনি উটের পিঠে উকুফ অবস্থায় ছিলেন।
হাদীস নং ১৮৬৬
ইয়াহইয়া ইবনে সুলাইমান রহ………মায়মূনা রা. থেকে বর্ণিত যে, কিছু সংখ্যক লোক আরাফাতের দিনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাওম পালন সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি স্বল্প পরিমাণ দুধ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পাঠিয়ে দিলে তিনি তা পান করলেন ও লোকেরা তা প্রত্যক্ষ করছিল। তখন তিনি (আরাফাতের) অবস্থান স্থলে ওকুফ করছিলেন।
হাদীস নং ১৮৬৭
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………বনূ আযহারের আযাদকৃত গোলাম আবু উবায়দ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার ঈদে উমর ইবনুল খাত্তাব রা.-এর সঙ্গে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দুই দিনে সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন। যে দিন তোমরা তোমাদের সাওম ছেড়ে দাও। আরেক দিন, যেদিন তোমরা তোমাদের কুরবানীর গোশত খাও। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, ইবনে উয়ায়না রহ. বলেন, যিনি ইবনে আযহারের মাওলা বলে উল্লেখ করেছেন, তিনি ঠিক বর্ণনা করেছেন; আর যিনি আবদুর রাহমান ইবনে আওফা রা.-এর মাওলা বলেছেন, তিনিও ঠিক বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১৮৬৮
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন সাওম পালন করা থেকে, সাম্মা ধরনের কাপড় পরিধান করতে, এক কাপড় পরিধানরত অবস্থায় দুই হাঁটু তুলে নিতম্বের উপর বসতে (কেননা এতে সতর প্রকাশ পাওয়ার আশংকা রয়েছে) এবং ফজর ও আসরের পরে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
হাদীস নং ১৮৬৯
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দু’ (দিনের) সাওম ও দু’ (প্রকারের) ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করা হয়েছে, ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর (দিনের) সাওম এবং মুলামাসা ও মুনাবাযা (পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়) হতে।
হাদীস নং ১৮৭০
মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না রহ…….যিয়াদ ইবনে জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি এসে (আবদুল্লাহ) ইবনে উমর রা.-কে বলল যে, এক ব্যক্তি কোন এক দিনের সাওম পালন করার মানত করেছে, আমার মনে হয় সে সোমবারের কথা বলেছিল। ঘটনাক্রমে ঐ দিন ঈদের দিন পড়ে যায়। ইবনে উমর রা. বললেন, আল্লাহ তা’আলা মানত পুরা করার নির্দেশ দিয়েছেন আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই (ঈদের) দিনে সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।
হাদীস নং ১৮৭১
হাজ্জাজ ইবনে মিনহাল রহ………আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, যিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে চারটি কথা শুনেছি, যা আমার খুব ভালো লেগেছে। তিনি বলেছেন, স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ ছাড়া কোন নারী যেন দুই দিনের দূরত্বের সফর না করে। ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিনে সাওম নেই। ফজরের সালাতের পরে সূর্যোদয় এবং আসরের সালাতের পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোন সালাত নেই। মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও আমার এই মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মসজিদের উদ্দেশ্যে যেন সফর না করে।