হাদীস নং ১৮৫৪
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……..আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম পালন কর। আবদুল্লাহ রা. বললেন, আমি এর চাইতে বেশী করার শক্তি রাখি। এভাবে তিনি বৃদ্ধির আবেদন করতে লাগলেন যে, অবশেষে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : একদিন সাওম পালন কর আর একদিন ছেড়ে দাও এবং আরো বললেন : প্রতি মাসে (এক খতম) কুরআন পাঠ কর। তিনি বললেন, আমি এর চেয়ে বেশী শক্তি রাখি। এভাবে বলতে লাগলেন, অবশেষে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তাহলে তিন দিনে (পাঠ কর)।
হাদীস নং ১৮৫৫
আদম রহ……..আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন : তুমি কি সব সময় সাওম পালন কর এবং রাতভর সালাত আদায় করে থাক? আমি বললাম, জী হ্যাঁ। তিনি বললেন : তুমি এরূপ করলে চোখ বসে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে সারা বছর সাওম পালন করে সে যেন সাওম পালন করে না। মাসে তিন দিন করে সাওম পালন করা সারা বছর সাওম পালনের সমতুল্য। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন : তাহলে তুমি দাউদী সাওম পালন কর, তিনি একদিন সাওম পালন করতেন আর একদিন ছেড়ে দিতেন এবং যখন শত্রুর সম্মুখীন হতেন তখন পলায়ন করতেন না।
হাদীস নং ১৮৫৬
ইসহাক ওয়াসিতী রহ……..আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আমার সাওমের আলোচনা করায় তিনি আমার এখানে আগমন করেন। আমি তাঁর জন্য খেজুরের গাছের ছালে পরিপূর্ণ চামড়ার বালিশ (হেলান দিয়ে বসার জন্য) পেশ করলাম। তিনি মাটিতে বসে পড়লেন। বালিশটি তাঁর ও আমার মাঝে পড়ে থাকল। তিনি বললেন : প্রতি মাসে তুমি তিন দিন রোযা রাখলে হয় না ? আবদুল্লাহ রা. বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (আরো)। তিনি বললেন : সাত দিন । আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (আরো)। তিনি বললেন : নয় দিন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (আরো) । তিনি বললেন : এগারো দিন। এরপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : দাউদ আ.-এর সাওমের চেয়ে উত্তম সাওম আর হয় না- অর্ধেক বছর, একদিন সাওম পালন কর ও একদিন ছেড়ে দাও।
হাদীস নং ১৮৫৭
আবু মামার রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সাওম পালন করা এবং দু’রাকআত সালাতুয-যুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা।
হাদীস নং ১৮৫৮
মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার মাতা) উম্মে সুলাইম রা.-এর ঘরে আগমন করলেন। তিনি তাঁর সামনে খেজুর ও ঘি পেশ করলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তোমাদের ঘি মশকে এবং খেজুর তার বরতনে রেখে দাও। কারণ আমি রোযাদার। এরপর ঘরের এক পাশে গিয়ে নফল সালাত আদায় করলেন এবং উম্মে সুলাইম রা. ও তাঁর পরিজনের জন্য দু’আ করলেন। উম্মে সুলাইম রা. আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার একটি ছোট ছেলে আছে। তিনি বললেন : কে সে ? উম্মে সুলাইম রা. বললেন, আপনার খাদেম আনাস । তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় কল্যাণের দু’আ করলেন। তিনি বললেন : হে আল্লাহ ! তুমি তাকে মাল ও সন্তান-সন্ততি দান কর এবং তাকে বরকত দাও। আনাস রা. বলেন, আমি আনসারগণের মধ্যে অধিক সম্পদশালীদের একজন এবং আমার কন্যা উমায়না আমাকে জানিয়েছে যে, হাজ্জাজ (ইবনে ইউসুফ) -এর বসরায় আগমনের পূর্ব পর্যন্ত একশত বিশের অধিক আমার নিজের সন্তান মারা গেছে।
হাদীস নং ১৮৫৯
ইবনে আবু মারইয়াম রহ……….হুমায়দ রহ. আনাস রা.-কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছেন।
হাদীস নং ১৮৬০
সালত ইবনে মুহাম্মদ রহ……..ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অথবা (রাবী বলেন) অন্য এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করেন এবং ইমরান রা. তা শুনছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : হে অমুকের পিতা ! তুমি কি এ মাসের শেষভাগে সাওম পালন করনি ? (রাবী) বলেন, আমার মনে হয় (আমার ওস্তাদ) বলেছেন, অর্থাৎ রমযান। লোকটি উত্তর দিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! না। তিনি বললেন : যখন সাওম পালন শেষ করবে তখন দুদিন সাওম পালন করে নিবে। আমার মনে হয় সালত রহ. রমযান শব্দটি বর্ণনা করেননি। সাবিত রহ. ইমরান সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শা’বানের শেষভাগে বলে উল্লেখ করেছেন । আবু আবদুল্লাহ বুখারী রহ. বলেন, শা’বান শব্দটি অধিকতর সহীহ।
হাদীস নং ১৮৬১
আবু আসিম রহ…….মুহাম্মদ ইবনে আব্বাদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি জুমুআর দিনে (নফল) সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন ? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবু আসিম রহ. ব্যতীত অন্যেরা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, পৃথকভাবে জুমুআর দিনের সাওম পালন (-কে নিষেধ করেছেন)।