হাদীস নং ১৩৫৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….হাকীম ইবনে হিযাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! ঈমান আনয়নের পূর্বে (সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে) আমি সাদকা প্রদান, দাসমুক্ত করা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার ন্যায় যত কাজ করেছি সেগুলোতে সওয়াব হবে কি ? তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তুমি যে সব ভাল কাজ করেছ তা নিয়েই ইসলাম গ্রহণ করেছ (তুমি সেসব কাজের সওয়াব পাবে)।
হাদীস নং ১৩৫৪
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : স্ত্রী তার স্বামীর খাদ্য থেকে বিপর্যয়ের উদ্দেশ্য ব্যতীত সাদকা করলে সে সাদকা করার সওয়াব পাবে, উপার্জন করার কারণে স্বামীও এর সওয়াব পাবে এবং অনুরূপ সওয়াব পাবে।
হাদীস নং ১৩৫৫
মুহাম্মদ ইবনে আলা রহ……….আবু মূসা রা. সুত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে বিশ্বস্ত মুসলিম খাজাঞ্চী (আপন মালিক কর্তৃক) নির্দেশীত পরিমাণ সাদকার সবটুকুই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সানন্দচিত্তে আদায় করে, কোন কোন সময় তিনি (বাস্তবায়িত করে) শব্দের স্থলে (আদায় করে) শব্দ বলেছেন, সে খাজাঞ্চীও নির্দেশদাতার ন্যায় সাদকাদানকারী হিসেবে গণ্য।
হাদীস নং ১৩৫৬
আদম ও উমর ইবনে হাফস রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ফাসাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত স্ত্রী তার স্বামীর ঘর থেকে কাউকে কিছু সাদকা করলে বা আহার করালে স্ত্রী এর সওয়াব পাবে, স্বামীও সমপরিমাণ সওয়াব পাবে এবং খাজাঞ্চী সেই পরিমাণ সওয়াব পাবে। স্বামী উপার্জন করার কারণে আর স্ত্রী দান করার কারণে সওয়াব পাবে।
হাদীস নং ১৩৫৭
ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া রহ………আয়িশা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ফাসাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত স্ত্রী তার স্বামীর ঘরের খাদ্য সামগ্রী থেকে সাদকা করলে সে এর সওয়াব পাবে। উপার্জন করার কারণে স্বামীও সওয়াব পাবে এবং খাজাঞ্চীও সেই পরিমাণ সওয়াব পাবে।
হাদীস নং ১৩৫৮
ইসমাঈল রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : প্রতিদিন সকালে দু’ জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ ! দাতাকে তার দানের প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ ! কৃপণ কে ধ্বংস করে দিন।
হাদীস নং ১৩৫৯
মূসা রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : কৃপণ ও সাদকা দানকারীর দৃষ্টান্ত এমন দু’ ব্যক্তির মত, যাদের পরিধানে দুটি লোহার বর্ম রয়েছে। অপর সনদে আবুল ইয়ামান রহ. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, কৃপণ ও সাদকা দানকারীর দৃষ্টান্ত এমন দু’ ব্যক্তির মত, যাদের পরিধানে দুটি লোহার বর্ম রয়েছে যা তাদের বুক থেকে কাঁধ পর্যন্ত বিস্তৃত। দাতা ব্যক্তি যখন দান করে তখন বর্মটি তার সম্পূর্ণ দেহ পর্যন্ত প্রশস্ত হয়ে যায়। এমনকি হাতের আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত ঢেকে ফেলে ও (পায়ের পাতা পর্যন্ত ঝুলন্ত বর্ম) পদচিহ্ন মুছে ফেলে। আর কৃপণ ব্যক্তি যখন যৎসামান্যও দান করতে চায়, তখন যেন বর্মের প্রতিটি আংটা যথাস্থানে সেটে যায়, সে তা প্রশস্ত করতে চেষ্টা করলেও তা প্রশস্ত হয় না। হাসান ইবনে মুসলিম রহ. তাউস রহ. থেকে في الجبتين বর্ণনায় ইবনে তাউস রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। আর হানযালা রহ. তাউস রহ. থেকে جنتان উল্লেখ করেছেন। লায়স রহ. আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে جنتان (ঢাল) শব্দের উল্লেখ রয়েছে।
হাদীস নং ১৩৬০
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………আবু মূসা আশআরী রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : প্রত্যেক মুসলিমের সাদকা করা উচিত। সাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! কেউ যদি সাদকা দেওয়ার মত কিছু না পায় ? (তিনি উত্তরে) বললেন : সে ব্যক্তি নিজ হাতে কাজ করবে এতে নিজেও লাভবান হবে, সাদকাও করতে পারবে। তাঁরা বললেন, যদি এরও সামর্থ্য না থাকে ? তিনি বললেন : কোন বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করবে। তাঁরা বললেন, যদি এতটুকুও সামর্থ্য না থাকে ? তিনি বললেন : এ অবস্থায় সে যেন নেক আমল করে এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকে। এটা তার জন্য সাদকা বলে গণ্য হবে।
হাদীস নং ১৩৬১
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ……….উম্মে আতিয়্যাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নুসায়ব নাম্নী আনসারী মহিলার জন্য একটি ববকরী (সাদকা স্বরূপ) পাঠানো হল। তিনি বকরীর কিছু অংশ আয়িশা রা.-কে (হাদিয়া স্বরূপ) পাঠিয়ে দিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তোমাদের কাছে (আহার্য) কিছু আছে কি ? আয়িশা রা. বললেন, নুসায়বা কর্তৃক প্রেরিত সেই বকরীর গোশত ব্যতীত আর কিছুই নেই। তখন তিনি বললেন : তাই নিয়ে এসো, কেননা বকরী (সাদকা) যথাস্থানে গেছে (সাদকা গ্রহীতার নিকট)।
হাদীস নং ১৩৬২