হাদীস নং ১৩৪১
আলী ইবনে জা’দ রহ……….হারিসা ইবনে ওহব খুযায়ী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমরা সাদকা কর। কেননা অচিরেই তোমাদের উপর এমন সময় আসবে, যখন মানুষ সাদকার মাল নিয়ে ঘুরে বেড়াবে, তখন গ্রহীতা বলবে, গতকাল নিয়ে এলে গ্রহণ করতাম কিন্তু আজ এর কোন প্রয়োজন আমার নেই।
হাদীস নং ১৩৪২
উসমান ইবনে আবু শায়বা রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : স্ত্রী যদি তার ঘর থেকে বিপর্যয় সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যতিরেকে খাদ্যদ্রব্য সাদকা করে তবে এ জন্য সে সওয়াব পাবে আর উপার্জন করার কারণে স্বামীও সওয়াব পাবে এব খাজাঞ্চীও অনুরূপ সওয়াব পাবে। তাদের একজনের কারণে অন্যজনের সওয়াবে কোন কম হবে না।
হাদীস নং ১৩৪৩
আবদান রহ………আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে সাদকা করা উত্তম। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে, প্রথমে তাদেরকে দিবে।
হাদীস নং ১৩৪৪
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………হাকীম ইবনে হিযাম রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উপরের হাত (দাতার হাত) নীচের হাত (গ্রহীতার হাত) অপেক্ষা উত্তম। প্রথমে তাদেরকে দিবে যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে সাদকা করা উত্তম। যে ব্যক্তি (পাপ ও ভিক্ষা করা থেকে) পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে পবিত্র রাখেন এবং যে পরমুখাপেক্ষিতা থেকে বেচে থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে স্বাবলম্বী করে দেন। ওহাব রহ. আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।
হাদীস নং ১৩৪৫
আবু নুমান রহ. ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মিম্বরের উপর থাকা অবস্থায় সাদকা করা ও ভিক্ষা করা থেকে বেচে থাকা ও ভিক্ষা করা সম্পর্কে উল্লেখ করে বলেন : উপরের হাত নীচের হাত অপেক্ষা উত্তম। উপরের হাত দাতার, আর নীচের হাত হল ভিক্ষুকের।
হাদীস নং ১৩৪৬
আবু আসিম রহ………উকবা ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত আদায় করে তাড়াতাড়ি ঘরে প্রবেশ করলেন। তারপর দেরি না করে বের হয়ে আসলেন। আমি বললাম বা তাকে বলা হল, তখন তিনি বললেন : ঘরে সাদকার একখণ্ড সোনা রেখে এসেছিলাম কিন্তু রাত পর্যন্ত তা ঘরে থাকা আমি পছন্দ করিনি। কাজেই তা বন্টন করে দিয়ে এলাম।
হাদীস নং ১৩৪৭
মুসলিম রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন বের হলেন এবং দু’রাকাআত সালাত আদায় করলেন, এর আগে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি। এরপর তিনি বিলাল রা.-কে সাথে নিয়ে মহিলাদের কাছে গেলেন। তাদের উপদেশ দিলেন এবং সাদকা করার নির্দেশ দিলেন। তখন মহিলাগণ কানের দুল ও হাতের কংকন ছুড়ে মারতে লাগলেন।
হাদীস নং ১৩৪৮
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..আবু মূসা (আশআরী) রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কেউ কিছু চাইলে বা প্রয়োজনীয় কিছু চাওয়া হলে তিনি বলতেন : তোমরা সুপারিশ কর সওয়াব পাবে, আল্লাহ যেন তাঁর ইচ্ছা তাঁর রাসূলের মুখে চূড়ান্ত করেন।
হাদীস নং ১৩৪৯
সাদাকা ইবনে ফাযল রহ………আসমা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন : তুমি এরূপ করলে তোমার জন্য (আল্লাহর দান) (সম্পদ কমে যাওয়ার আশংকায় সাদকা দেওয়া বন্ধ করবে না) বন্ধ করে দেওয়া হবে।
হাদীস নং ১৩৫০
উসমান ইবনে আবু শায়বা রহ………আবদা রহ. থেকে বর্ণিত, (পূর্বোক্ত সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন) তুমি (সম্পদ) জমা করে রেখো না, (এরূপ করলে) আল্লাহ তোমার রিযক বন্ধ করে দিবেন।
হাদীস নং ১৩৫১
আবু আসিম রহ. ও মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম রহ………আসমা বিনতে আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এক সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাকে বললেন : তুমি সম্পদ জমা করে রেখো না, এরূপ করলে আল্লাহ তোমার থেকে তা আটকে রাখবেন। কাজেই সাধ্যানুসারে দান করতে থাক।
হাদীস নং ১৩৫২
কুতাইবা রহ……….হুযায়ফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার উমর ইবনে খাত্তাব রা. বললেন, তোমাদের মধ্যে কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ফিতনা সম্পর্কিত হাদীস স্মরণ রেখেছ ? হুযায়ফা রা. বলেন, আমি আরয করলাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে বলেছেন, আমি ঠিক সে ভাবেই তা স্মরণ রেখেছি। উমর রা. বললেন, তুমি (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে) বড় দুঃসাহসী ছিলে, তিনি কীভাবে বলেছেন (বলত)? তিনি বলেন, আমি বললাম, (হাদীসটি হল 🙂 মানুষ পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি ও প্রতিবেশী নিয়ে ফিতনায় পতিত হবে আর সালাত, সাদকা ও নেক কাজ সেই ফিতনা মিটিয়ে দিবে। সুলাইমান (অর্থাৎ আমাশ রহ. বলেন, আবি ওয়াইল কোন কোন সময় ‘নামায’ ‘সাদকা’ এরপর ‘সৎকাজ’ শব্দের স্থলে ‘সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ’ বলতেন। উমর রা. বলেন, আমি এ ধরনের ফিতনার কথা জানতে চাইনি, বরং যে ফিতনা সাগরের ঢেউয়ের ন্যায় প্রবল বেগে ছুটে আসবে। হুযায়ফা রা. বলেন, আমি বললাম, আমীরুল মু’মিনীন ! আপনার জীবনকালে ঐ ফিতনার কোন আশংকা নেই। সেই ফিতনা ও আপনার মাঝে বদ্ধ দরজা রয়েছে। উমর রা. প্রশ্ন করলেন, দরজা কি ভেঙ্গে দেওয়া হবে না কি খুলে দেওয়া হবে ? হুযায়ফা রা. বলেন, আমি বললাম, না, বরং ভেঙ্গে দেওয়া হবে। উমর রা. বললেন, দরজা ভেঙ্গে দেওয়া হলে কোন দিন তা আর বন্ধ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, আমি বললাম, সত্যই বলেছেন। আবু ওয়াইল রা .বলেন, দরজা বলতে কাকে বুঝানো হয়েছে ? এ কথা হুযায়ফা রা.-এর নিকট প্রশ্ন করে জানতে আমর কেউ সাহসী হলাম না। তাই প্রশ্ন করতে মাসরূককে অনুরোধ করলাম। মাসরূক রহ. হুযায়ফা রা. -কে প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন : দরজা হলেন উমর রা. আমরা বললাম, আপনি দরজা বলে যাকে উদ্দেশ্য করেছেন, উমর রা. কি তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আগামীকালের পূর্বে রাতের আগমন যেমন সুনিশ্চিত (তেমনি নিঃসন্দেহে তিনি তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন) এর কারণ হল, আমি তাকে এমন হাদীস বর্ণনা করেছি, যাতে কোন ভুল ছিলনা।