হাদীস নং ১৩৩৪
সুলাইমান ইবনে হারব রহ………..আদী ইবনে হাতিম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এক টুকরা খেজুর সাদকা করে হলেও।
হাদীস নং ১৩৩৫
বিশর ইবনে মুহাম্মদ রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ভিখারিণী দুটি শিশু কন্যা সংগে করে আমার নিকট এসে কিছু চাইল। আমার নিকট একটি খেজুর ব্যতীত অন্য কিছু ছিলনা। আমি তাকে তা দিলাম। সে নিজে না খেয়ে খেজুরটি দু’ ভাগ করে কন্যা দুটিকে দিয়ে দিল। এরপর ভিখারিণী বেরিয়ে চলে গেলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসলেন। তাঁর নিকট ঘটনা বিবৃত করলে তিনি বললেন, যাকে এরূপ কন্যা সন্তানের ব্যাপারে কোনরূপ পরীক্ষা করা হয় তবে সে কন্যা সন্তান তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে পর্দা হয়ে দাঁড়াবে।
হাদীস নং ১৩৩৬
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সাহাবী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! কোন সাদকার সওয়াব বেশী পাওয়া যায় ? তিনি বললেন : কৃপণ অবস্থায় তোমার সাদকা করা যখন তুমি দারিদ্যর আশংকা করবে ও ধনী হওয়ার আশা রাখবে। সাদকা করতে দেরি করবে না। অবশেষে যখন প্রাণবায়ু কন্ঠাগত হবে আর তুমি বলতে থাকবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য একটুকু, অথচ তা অমুকের জন্য হয়ে যাচ্ছে।
হাদীস নং ১৩৩৭
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, কোন নবী-সহধর্মিণী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, আমাদের মধ্য থেকে সবার আগে (মৃত্যুর পর) আপনার সাথে কে মিলিত হবে ? তিনি বললেন : তোমাদের মধ্যে যার হাত দীর্ঘতর। তাঁরা একটি বাঁশের কাঠির সাহায্যে হাত মেপে দেখতে লাগলেন। সাওদার হাত সকলের হাতের চেয়ে দীর্ঘতর বলে প্রমাণিত হল। পরে আমরা অনুধাবন করতে পারলাম যে, সাদকার আধিক্য তাঁর হাত দীর্ঘ করে দিয়েছিল। আমাদের মাঝে তিনিই সবার আগে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মিলিত হন। তিনি সাদকা করা ভালবাসতেন।
হাদীস নং ১৩৩৮
আবুল ইয়ামান রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : (পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যে) এক ব্যক্তি বলল, আমি কিছু সাদকা করব। সাদকা নিয়ে বের হয়ে (ভুলে) সে এক চোরের হাতে তা দিয়ে দিল। সকালে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, চোরকে সাদকা দেওয়া হয়েছে। এতে সে বলল, হে আল্লাহ ! সকল প্রশংসা আপনারই, আমি অবশ্যই সাদকা করব। সাদকা নিয়ে বের হয়ে তা এক ব্যভিচারিণীর হাতে দিল। সকালে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, রাতে এক ব্যভিচারিণীর হাতে সাদকা দেওয়া হয়েছে। লোকটি বলল, হে আল্লাহ ! সকল প্রশংসা আপনারই, (আমার সাদকা) ব্যভিচারিণী হাতে পৌঁছল। আমি অবশ্যই সাদকা করব। এরপর সে সাদকা নিয়ে বের হয়ে কোন এক ধনী ব্যক্তির হাতে দিল। সকালে লোকেরা বলতে লাগল, ধনী ব্যক্তিকে সাদকা দেওয়া হয়েছে। লোকটি বলল, হে আল্লাহ ! সকল প্রশংসা আপনারই, (আমার সাদকা) চোর, ব্যভিচারিণী ও ধনী ব্যক্তির হাতে গিয়ে পড়লো ! পরে স্বপ্নযোগে তাকে বলা হল, তোমারা সাদকা চোর পেয়েছে, সম্ভবত সে চুরি করা হতে বিরত থাকবে, তোমার সাদকা ব্যভিচারিণী পেয়েছে সম্ভবত এজন্য যে, সে তার ব্যভিচার থেকে পবিত্র থাকবে আর ধনী ব্যক্তি তোমার সাদকা পেয়েছে, সম্ভবত সে শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং আল্লাহর দেওয়া সম্পদ থেকে সাদকা করবে।
হাদীস নং ১৩৩৯
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ……..মা’ন ইবনে ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতা (ইয়াযীদ) ও আমার দাদা (আখনাস) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বায়আত হলেন। তিনি আমার বিবাহের প্রস্তাব করেন এবং আমার বিবাহ সম্পন্ন করে দেন। আমি তাঁর কাছে (একটি বিষয়ে) বিচার প্রার্থী হই। তা হল, একদা আমার পিতা ইয়াযীদ কিছু স্বর্ণমুদ্রা সাদকা করার নিয়্যাতে মসজিদে এক ব্যক্তির নিকট রেখে (তাকে তা বিতরণ করার সাধারণ অনুমতি দিয়ে) আসেন। আমি সে ব্যক্তির নিকট থেকে তা গ্রহণ করে পিতার নিকট আসলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম ! তোমকে দেওয়ার ইচ্ছা আমার ছিলনা। বিষয়টি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পেশ করলাম। তিনি বললেন : হে ইয়াযীদ ! তুমি যে নিয়্যাত করেছ, তা তুমি পাবে আর হে মা’ন ! তুমি যা গ্রহণ করেছ তা তোমারই ।
হাদীস নং ১৩৪০
মুসাদ্দাদ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে দিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না সে দিন আল্লাহ তা’আলা সাত প্রকার মানুষকে সে ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যয়পরায়ণ শাসক। ২. যে যুবক আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন থেকে যৌবনে উপনীত হয়েছে। ৩. যার অন্তরের সম্পর্ক সর্বদা মসজিদের সাথে থাকে । ৪. আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে দু’ ব্যক্তি পরস্পর মহব্বত রাখে, উভয়ে একত্রিত হয় সেই মহব্বতের উপর আর পৃথক হয় সেই মহব্বতের উপর। ৫. এমন ব্যক্তি যাকে সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (অবৈধ মিলনের জন্য) আহবান জানিয়েছে। তখন সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৬. যে ব্যক্তি গোপনে এমনভাবে সাদকা করে যে, তার ডান হাত যা দান করে বাম হাত তা জানতে পারে না। ৭. যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাঁতে আল্লাহর ভয়ে তার চোখ থেকে অশ্রু বের হয়ে পড়ে।