হাদীস নং ১৩২৬
মুহাম্মদ ইবনে মুসান্ন রহ………ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কেবল মাত্র দু’ধরনের ব্যক্তির প্রতি ঈর্ষা রাখা যেতে পারে, একজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন এবং ন্যায় পথে তা ব্যয় করার মত ক্ষমতাবান বানিয়েছেন। অপরজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ দীনের জ্ঞান দান করেছেন সে অনুযায়ী ফয়সালা দেন ও অন্যদেরকে তা শিক্ষা দেন।
হাদীস নং ১৩২৭
আবদুল্লাহ ইবনে মুনীর রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সাদকা করবে, (আল্লাহ তা কবুল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র মাল কবুল করেন আর আল্লাহ তাঁর কুদরতী ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সাদকা পাহাড় বরাবর হয়ে যায়। সুলাইমান রহ. ইবনে দীনার রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় আবদুর রহমান রহ. এর অনুসরণ করেছেন এবং ওয়ারকা রহ……..আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। এবং মুসলিম ইবনে আবু মারয়াম, যায়েদ ইবনে আসলাম ও সুহাইল রহ. আবু সালিহ রহ.-এর মাধ্যমে আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে হাদীসটি বর্ণনা করেন।
হাদীস নং ১৩২৮
আদম রহ……..হারিসা ইবনে ওহব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমরা সাদকা কর, কেননা তোমাদের উপর এমন যুগ আসবে যখন মানুষ আপন সাদকা নিয়ে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু তা গ্রহণ করার মত কাউকে পাবে না। (যাকে দাতা দেওয়ার ইচ্ছা করবে সে) লোকটি বলবে, গতকাল পর্যন্ত নিয়ে আসলে আমি গ্রহণ করতাম। আজ আমার কোন প্রয়োজন নেই।
হাদীস নং ১৩২৯
আবুল ইয়ামান রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমাদের মধ্যে সম্পদ বৃদ্ধি পেয়ে উপচে না পড়বে, এমনকি সম্পদের মালিকগণ তা সাদকা কে গ্রহণ করবে তা নিয়ে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। যাকেই দান করতে চাইবে সে-ই বলবে, প্রয়োজন নেই।
হাদীস নং ১৩৩০
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………আদী ইবনে হাতিম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-এর কাছে ছিলাম, এমন সময় দু’ জন সাহাবী আসলেন, তাদের একজন দারিদ্র্যের অভিযোগ করছিলেন আর অপরজন রাহাজানির অভিযোগ করছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন বললেন : রাহাজানির অবস্থা এই যে, কিছু দিন পর এমন সময় আসবে যখন কাফেলা মক্কা পর্যন্ত বিনা পাহারায় পৌছে যাবে। আর দারিদ্র্যের অবস্থা এই যে, তোমাদের কেউ সাদকা নিয়ে ঘুরাফেরা করবে, কিন্তু তা গ্রহণ করার মত কাউকে পাবে না। এমন সময় না আসা পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবে না। তারপর (বিচার দিবসে) আল্লাহর নিকট তোমাদের কেউ এমনভাবে খাড়া হবে যে, তার ও আল্লাহর মাঝে কোন আড়াল থাকবে না বা কোন ব্যাখ্যাকারী দোভাষীও থাকবে না। এরপর তিনি বলবেন, আমি কি তোমার নিকট রাসূল প্রেরণ করিনি ? সে অবশ্যই বলবে হ্যাঁ, তখন সে ব্যক্তি যান দিকে তাকিয়ে শুধু আগুন দেখতে পাবে, তেমনিভাবে বাম দিকে তাকিয়েও আগুন দেখতে পাবে। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকের উচিত এক টুকরা খেজুর (সাদকা) দিয়ে হলেও যেন আগুন থেকে আত্মরক্ষা করে। যদি কেউ তা না পায় তবে যেন উত্তম কথা দিয়ে হলেও।
হাদীস নং ১৩৩১
মুহাম্মদ ইবনে আলা রহ………আবু মূসা (আশআরী) রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের উপর অবশ্যই এমন এক সময় আসবে যখন লোকেরা সাদকার সোনা নিয়ে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু একজন গ্রহীতা ও পাবে না । পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এবং নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে চল্লিশজন নারী একজন পুরুষের অনুগমন করবে এবং তার আশ্রয়ে আশ্রিতা হবে।
হাদীস নং ১৩৩২
আবু কুদামা উবায়দুল্লাহ ইবনে সাঈদ রহ………আবু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সাদকার আয়াত অবতীর্ণ হল তখন আমরা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বোঝা বহন করতাম। এক ব্যক্তি এসে প্রচুর মাল সাদকা করল। তারা (মুনাফিকরা) বলতে লাগল, এ ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে দান করেছে, আর এক ব্যক্তি এসে এক সা’ পরিমান দান করলে তারা বলল, আল্লাহ তো এ ব্যক্তির এক সা’ থেকে অমুখাপেক্ষী। এ প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয় : “মুমিনগণের মধ্যে যার নিজ ইচ্ছায় সাদকা দেয় এবং যারা নিজ শ্রম ব্যতিরেকে কিছুই পায় না তাদেরকে যারা দোষারোপ করে……….। (৯ : ৭৯)
হাদীস নং ১৩৩৩
সাঈদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ………..আবু মাসউদ আনাসারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাদকা করতে আদেশ করলেন তখন আমাদের কেউ বাজারে গিয়ে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বোঝা বহন করে মুদ পরিমাণ অর্জন করত (এবং তা থেকেই সাদকা করত) অথচ আজ তাদের কেউ লাখপতি।