হাদীস নং ১৪৫২
মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর মুকাদ্দামী রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ চুল আচড়িয়ে, তেল মেখে, লুঙ্গি ও চাদর পরে (হজ্জের উদ্দেশ্যে) মদীনা থেকে রওয়ানা হন। তিনি কোন প্রকার চাদর বা লুঙ্গি পরতে নিষেধ করেননি, তবে শরীরের চামড়া রঞ্জিত হয়ে যেতে পারে এরূপ জাফরানী রঙ্গের কাপড় পরতে নিষেধ করছেন। যুল-হুলাইফা থেকে সাওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে পৌছে তিনি ও তাঁর সাহাবীগণ তালবিয়া পাঠ করেন এবং কুরবানীর উটের গলায় মালা ঝুলিয়ে দেন, তখন যুলকাদা মাসের পাঁচদিন অবশিষ্ট ছিল। যিলহজ্জ মাসের চতুর্থ দিনে মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম কাবাঘরের তাওয়াফ করে সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ী করেন। তাঁর কুরবানীর উটের গলায় মালা পরিয়েছেন বলে তিনি ইহরাম খুলেননি। তারপর মক্কার উটু ভূমিতে হাজূন নামক স্থানের নিকটে অবস্থান করেন, তখন তিনি হজ্জের ইহরামের অবস্থায় ছিলেন। (প্রথমবার) তাওয়াফ করার পর আরাফা থেকে প্রত্যাবর্তন করার পূর্বে আর কাবার নিকটবর্তী হন নি। অবশ্য তিনি সাহাবাগণকে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সায়ী সম্পাদনা করে মাথার চুল ছেটে হালাল হতে নির্দেশ দেন। কেননা যাদের সাথে কুরবানীর জানোয়ার নেই, এ বিধানটি কেবল তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । আর যার সাথে তার স্ত্রী রয়েছে তার জন্য স্ত্রী-সহবাস, সুগন্ধি ব্যবহার ও যে কোন ধরনের কাপড় পরা বৈধ।
হাদীস নং ১৪৫৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় চার রাকআত ও যুল-হুলাইফায় পৌছে দু’ রাকআত সালাত আদায় করেন। তারপর ভোর পর্যন্ত সেখানে রাত যাপন করেন। এরপর যখন তিনি সওয়ারীতে আরোহণ করেন এবং তা তাকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায় তখন তিনি তালবিয়া পাঠ করেন।
হাদীস নং ১৪৫৪
কুতাইবা রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় যোহরের সালাত চার রাকআত আদায় করেন এবং যুল-হুলাইফায় পৌছে আসরের সালাত দু’ রাকআত আদায় করেন। রাবী বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি ভোর পর্যন্ত সেখানে রাত যাপন করেন।
হাদীস নং ১৪৫৫
সুলাইমান ইবনে হারব রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত মদীনায় চার রাকআত আদায় করলেন এবং আসরের সালাত যুল-হুলাইফায় দু’ রাকআত আদায় করেন। আমি শুনতে পেলাম তাঁরা সকলে উচ্চস্বরে হজ্জ ও উমরার তালবিয়া পাঠ করছেন।
হাদীস নং ১৪৫৬
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তালবিয়া নিম্নরূপ : আমি হাযির হে আল্লাহ, আমি হাযির, আপনার কোন অংশীদার নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও সকল নিয়ামত আপনার এবং কর্তৃত্ব আপনারই, আপনার কোন অংশীদার নেই।
হাদীস নং ১৪৫৭
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ………..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে তালবিয়া পাঠ করতেন তা আমি ভালোরূপে অবগত (তাঁর তালবিয়া ছিল) আমি হাযির হে আল্লাহ ! আমি হাযির, আমি হাযির, আপনার কোন অংশীদার নেই, আমি হাযির, সকর প্রশংসা ও সকল নিয়ামত আপনারই। আবু মুআবিয়া রহ. আমাশ রহ. থেকে বর্ণনায় সফিয়া রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। শুবা রহ…..আবু আতিয়্যা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়িশা রা. থেকে শুনেছি।
হাদীস নং ১৪৫৮
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে মদীনায় যুহরের সালাত আদায় করেন চার রাকআত এবং যুল-হুলাইফায় (পৌছে) আসরের সালাত আদায় করলেন দু’ রাকআত। এরপর সেখানেই ভোর পর্যন্ত রাত কাটালেন। সকালে সাওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে উপনীত হলেন। তখন তিনি আল্লাহর হামদ, তাসবীহ ও তাকবীর পাঠ করছিলেন। এরপর তিনি হজ্জ ও উমরার তালবিয়া পাঠ করলেন। সাহাবীগণও উভয়ের তালবিয়া পাঠ করলেন। যখন আমরা (মক্কার উপকণ্ঠে) পৌছলাম তখন তিনি সাহাবীগণকে (উমরা শেষ করে) হালাল হওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং তাঁরা হালাল হয়ে গেলেন। অবশেষে যিলহজ্জ মাসের আট তারিখে তাঁরা হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন। রাবী বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে কিছুসংখ্যক দাঁড়ানো উট নহর করলেন। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় সাদা কাল মিশ্রিত রং-এর দুটি মেষ যবেহ করেছিলেন। আবু আবদুল্লাহ (বুখারী) রহ. বলেন, কোন কোন রাবী হাদীসটি আইয়্যূব রহ. সূত্রে জনৈক রাবীর মাধ্যমে আনাস রা. থেকে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন।
হাদীস নং ১৪৫৯
আবু আসিম রহ………..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নিয়ে তাঁর সাওয়ারী সোজা দাঁড়িয়ে গেলে তিনি তালবিয়া পাঠ করেন।
হাদীস নং ১৪৬০
সুলাইমান ইবনে দাউদ আবু রবী রহ……নাফি রহ. থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, ইবনে উমর রা. মক্কা গমনের ইচ্ছা করলে দেহে সুগন্ধিহীন তেল লাগাতেন। তারপর যুল-হুলাইফার মসজিদে পৌছে সালাত আদায় করে সাওয়ারীতে আরোহণ করতেন। তাকে নিয়ে সাওয়ারী সোজা দাঁড়িয়ে গেলে তিনি ইহরাম বাঁধতেন। এরপর তিনি (ইবনে উমর রা. ) বলতেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এরূপ করতে দেখেছি।